
বান্দরবানের লামা উপজেলায় ৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওয়াশব্লকের কাজ সম্পন্ন না করেই কোটি টাকার অধিক বিল সরকারি কোষাগার থেকে তুলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম দেব এর যোগসাজসে ঠিকাদার মেহেদী চৌধুরী এই সরকারি অর্থ উত্তোলন করে নেন।
জানা যায়, লামার দুর্গম পাহাড়ি এলাকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে ওয়াশব্লক নির্মাণের উদ্যোগ নেয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের দরপত্র আহবানে উপজেলার ৭টি বিদ্যালয়ে ওয়াশব্লক নির্মাণ কাজটি পায় ঠিকাদার মেহেদী চৌধুরী। ১কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা মূল্যের কার্যাদেশ মোতাবেক ২০২৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর কাজ শুরু করে ২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করার কথা।
কিন্তু ২০২৫ সালের চলতি মার্চ মাসে এসেও ঠিকাদার নির্মাণ কাজ শেষ করেনি। বন্ধ রেখেছেন বিদ্যালয় গুলোর ওয়াশব্লক গুলোর নির্মাণ কাজ। এদিকে নির্মাণ কাজ ৪০ শতাংশ শেষ না হতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বান্দরবান নির্বাহী প্রকৌশলী’র যোগসাজসে ঠিকাদার কোটি টাকার অধিক বিল ইতিমধ্যে সরকারি কোষাগার থেকে উত্তোলন করে নেন। পিইডিপি-৪ প্রকল্পের আওতায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়াশব্লকের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে।
ওয়াশব্লক নির্মাণাধীন বিদ্যালয়গুলো হলো- ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৩নং রিপুজি পাড়া, পাগলির আগা, ডান ও বাম হাতির ছড়া, জোড়মনি পাড়া, হেডম্যান পাড়া, সাপের ঘাটা ও ফাইতং ইউনিয়নের হেডম্যান পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
ভুক্তভোগী বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, বিদ্যালয়গুলোর ওয়াশব্লক নির্মাণ কাজ দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। কবে নাগাদ নির্মাণ কাজ শেষ হবে বা আদৌ নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হবে কিনা, এ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।
নির্মাণ কাজ সম্পন্নের দাবী জানিয়ে ডান ও বাম হাতিরছড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কবির আহমদ, পাগলির আগা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম হেলালী বলেন, ওয়াশব্লক নির্মাণ শেষ না হওয়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। ৫ আগস্টের পর থেকে ঠিকাদারদের আর দেখা যায়নি। ওয়াশ ব্কল নির্মাণ কাজ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় দুঃখ প্রকাশ করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেবাশীষ বিশ্বাস।
ঠিকাদার মেহেদী চৌধুরী জানায়, বিদ্যালয়গুলোর ওয়াশব্লক নির্মাণ কাজ কেন বন্ধ, তা জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের স্থানীয় অফিসে যোগাযোগ করেন। জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর আপনাকে এ বিষয়ে জানাবেন।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের লামা উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী আবদুর রাজ্জাক জানান, নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে বিল প্রদান করা হয়েছে। যথা সময়ে নির্মাণ কাজ সমাপ্ত না করায়, ঠিকাদারকে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বান্দরবান নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম দেব এর মুঠোফোনে অনেকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর