
আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টে বরাবরই বাড়তি চাপ থেকে। আর সেমি ফাইনালের মতো ম্যাচ হলে সেটা আর বাড়ে। অথচ বড় মঞ্চে পারফর্ম করতেই যেন বেশি স্বাছন্দ্যবোধ করেন রাচিন রবীন্দ্র। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে আজ পঞ্চম সেঞ্চুরি পেয়েছেন তিনি। আর এই পাঁচ সেঞ্চুরির সবকটিই করেছেন আইসিসি ইভেন্টে। আজ তার দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে শক্ত ভিত পায় নিউজিল্যান্ড। যেখানে দাঁড়িয়ে তাণ্ডব চালিয়েছেন উইলিয়ামসন-ফিলিপসরা। তাতে রানের পাহাড় গড়ে কিউইরা। লাহোরের ব্যাটিং স্বর্গে কিউইদের রান পাহাড়ে চাপা পড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
লাহোরে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৬২ রান সংগ্রহ করেছে নিউজিল্যান্ড। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১০৮ রান করেছেন রাচিন। তাছাড়া ১০২ রান এসেছে উইলিয়ামসনের ব্যাট থেকে। জবাবে খেলতে নেমে ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩১২ রানের বেশি করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা।
আগামী ৯ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে খেলবে নিউজিল্যান্ড।
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই রায়ান রিকেলটনকে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ১২ বলে ১৭ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। আক্রমণাত্মক খেলতে গিয়ে দলীয় ২০ রানেই সাজঘরে ফিরেছেন এই ওপেনার। তবে আরেক ওপেনার টেম্বা বাভুমা পেয়েছেন ফিফটির দেখা। এরপর আর বেশিদূর এগোতে পারেননি। ৭১ বলে করেছেন ৫৬ রান।
রানের দেখা পেয়েছেন তিনে নামা রাসি ফন ডার ডাসেনও। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির পথে এগোচ্ছিলেন তিনি। তবে কাটা পড়েছেন ৬৯ রানে। ৬৬ বলের তার ইনিংসটি ছিল বেশ কার্যকরী। তবে এইডেন মার্করাম-হেনরিখ ক্লাসেনরা দ্রুত সাজঘরে ফিরলে তা পথ হারায় দল।
শেষদিকে ডেভিড মিলার একাই চেষ্টা করেছেন। পেয়েছেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। কিন্তু ঝড় তোলেও যেন তা বিফলে গেল। কিউইদের রানের পাহাড় টপকানো সম্ভব হয়নি। তার ৬৭ বলে অপরাজিত ১০০ রানের ইনিংস কেবলই হারের ব্যবধান কমিয়েছে।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার রাচিন ও উইল ইয়াংয়ের ব্যাটে উড়ন্ত শুরু পায় নিউজিল্যান্ড। ইয়াং ২৩ বলে ২১ রান করে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৪৮ রানের উদ্বোধনী জুটি। এই ওপেনার উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। তবে আরেক ওপেনার রাচিন এই ভুল করেননি। উইকেটের ধরন বুঝে ব্যাটিং করেছেন। তার সাবলীল ব্যাটিংয়েই শক্ত ভিত পায় দল।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে উইলিয়ামসন ও রাচিন মিলে যোগ ১৬৪ রান। যা নিউজিল্যান্ডের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি। পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ডও এটি।
রাচিন ১০১ বলে করেছেন ১০৮ রান। তিন অঙ্ক ছুঁতে তিনি খরচ করেছিলেন মাত্র ৯৩ বল। এরপর এই মাইলফলক ছুঁয়েছেন উইলিয়ামসনও। তিনি খরচ করেছেন ৯১ বল। সেঞ্চুরির পর অবশ্য আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৯৪ বলে ১০২ রান।
মিডল অর্ডারে দুর্দান্ত ছিলেন ড্যারিল মিচেল। উইকেটে এসেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন তিনি। তবে তার শেষটায় হতাশা সঙ্গী হয়েছে! আউট হয়েছেন ব্যক্তিগত ফিফটি থেকে মাত্র এক রান দূরে থাকতে। ৩৭ বলে করেছেন ৪৯ রান। এ ছাড়া উইকেটে এসে রীতিমতো ঝড় তোলেন গ্লেন ফিলিপস। ২৭ বলে ৪৯ রান করে অপরাজিত থেকেছেন তিনি।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে এতদিন সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ছিল ৩৫৬ রান। অস্ট্রেলিয়ার সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন করে গড়েছে কিউইরা। তাদের ৩৬২ রান এখন টুর্নামেন্টটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। একই সঙ্গে আইসিসির কোনো ইভেন্টের নক আউট ম্যাচে তৃতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর