
রমজানে রাসূল সা. সহজলভ্য খাবার গ্রহণ করতেন। তাঁর ইফতার ও সাহরিতে বাহারি আয়োজন থাকতো না। সুস্থভাবে রোজা রাখা যায় এতোটুকু পরিমাণ খেতেন তিনি।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহরি গ্রহণের পদ্ধতি
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহরির খাবারে অত্যন্ত গুরুত্ব দিতেন। তিনি বলেছেন, তোমরা সাহরি খাও, কারণ সাহরিতে বরকত আছে। (বুখারি, হাদিস : ১৯২৩, মুসলিম, হাদিস : ১০৯৫)
সাহরি খেলে রোজা পালন সহজ হয়, তেমন শারীরিক দুর্বলতা অনুভূত হয় না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাধারণত সাহরিতে হালকা ও সহজলভ্য খাবার গ্রহণ করতেন।
সাহরিতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা খেতেন
পানি ও খেজুর : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো শুধু পানি পান করে সাহরি শেষ করতেন, আবার কখনো খেজুর খেতেন। খেজুর সহজে হজম হয় এবং শরীরে দ্রুত শক্তি জোগায়।
দুধ ও যবের রুটি : হাদিসে পাওয়া যায় যে তিনি দুধ ও যবের তৈরি খাবার গ্রহণ করতেন। যব খুবই পুষ্টিকর , এটি দীর্ঘ সময় পর্যন্ত শক্তি জোগাতে সাহায্য করে।
ঠান্ডা পানি : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহরিতে ঠাণ্ডা পানি পান করতেন, যা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে, সারা দিন পানিশূন্যতা থেকে বাঁচায়।
ইফতারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নত পদ্ধতি
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্রুত ইফতার করতে পছন্দ করতেন, দেরি না করে সূর্যাস্তের পরই ইফতার করতেন। তিনি বলেছেন, মানুষ যতক্ষণ তাড়াতাড়ি ইফতার করবে, ততক্ষণ তারা কল্যাণের মধ্যে থাকবে। (বুখারি, হাদিস : ১৯৫৭, মুসলিম, হাদিস : ১০৯৮)
রাসূল (সা.) এর ইফতারের খাবার যেমন ছিল
তিনটি খেজুর ও পানি : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাধারণত তিনটি খেজুর খেয়ে ইফতার করতেন। যদি খেজুর না থাকত, তাহলে শুধু পানি পান করতেন। খেজুর রক্তে দ্রুত গ্লুকোজ সরবরাহ করে, তাৎক্ষণিক শক্তি দেয়।
শরবত ও দুধ : হাদিসে এসেছে যে তিনি কখনো দুধ ও মধুর শরবত পান করতেন, যা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে ও শক্তি দেয়।
হালকা খাবার: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইফতারের পর হালকা খাবার খেতেন, অতিরিক্ত ভারী খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকতেন। এটি হজমে সহায়তা করে, পরবর্তী ইবাদতে মনোযোগী হতে সাহায্য করে।
সাহরি-ইফতারে পরিমিত খাবার খাওয়া
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আদম সন্তানের জন্য কয়েক লোকমা খাবারই যথেষ্ট, যা তার পিঠকে সোজা রাখে। তবে যদি সে খেতে চায়, তাহলে এক-তৃতীয়াংশ খাবার, এক-তৃতীয়াংশ পানি, এক-তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য রাখা উচিত। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৮০)
অতিরিক্ত খেলে শরীর ভারী হয়ে যায়, ইবাদতে মনোযোগ ব্যাহত হয়। তাই অল্প ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বদা পুষ্টিকর, সহজলভ্য খাবার খেতেন। তার খাদ্য তালিকায় ছিল, খেজুর, দুধ, যব, মধু, জলপাই তেল, শাকসবজি ও ফলমূল থাকতো।
রমজানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ করতেন না। তিনি সংযমী জীবনযাপন করতেন, উম্মতকে অল্প পরিমাণে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার উপদেশ দিতেন।
রাসূল (সা.) এর খাদ্যাভ্যাস অনুসরণের উপকার
দুর্বলতা দূর হবে : পুষ্টিকর , সহজলভ্য খাবার খেলে সারা দিন রোজা রেখেও দুর্বলতা কম অনুভূত হবে।
ইবাদতে মনোযোগ বাড়বে: অতিরিক্ত খাবার খেলে অলসতা আসতে পারে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মতো পরিমিত পরিমাণে খাবার গ্রহণ করলে ইবাদতে মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে।
হজমশক্তি ভালো থাকবে : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হালকা খাবার খেতেন, যা হজমে সহায়ক। এটি গ্যাস্ট্রিক ও হজমের সমস্যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর