
নাটোরে সিংড়ায় আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের বাড়িতে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের ব্যানার লাগিয়েছে সিংড়া থানা পুলিশ। এ ঘটনার পর আবার সেই ব্যানার খুলেও নিয়েছে পুলিশ।
সিংড়ায় অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপনের জন্য অন্য ভবন বা জায়গা থাকা সত্ত্বেও পলকের পরিত্যক্ত বাড়িতে প্রথমে পুলিশ ক্যাম্পের ব্যানার লাগানো ও পরে তা খুলে নেয়ার ঘটনায় এলাকাজুড়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুই দুইবার বাড়িতে হামলা অগ্নিসংযোগ করার পরে পোড়াবাড়িতে কেন পুলিশ ক্যাম্প। তবে পুলিশের দাবি, উত্তেজিত জনতার মব থেকে ভবনটি বাঁচাতে এ কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। ওই ভবন থেকে অস্থায়ী ক্যাম্পের ব্যানারটি সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সংক্রান্ত একটি ছবি ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। ছবিতে দেখা যায়, রাতের অন্ধকারে দুই জন যুবক সিংড়া পৌরসভার গোড়াউনপাড়াস্থ পলকের তিনতলা বাড়ির দ্বিতীয়তলায় দুই বারান্দার গ্রিলের সাথে একটি ব্যানারের দড়ি বাঁধছেন। ওই ব্যানারে লেখা 'অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প, সিংড়া থানা, নাটোর।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৫ই আগস্ট ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে ওই দিনই সিংড়ার গোডাউনপাড়াস্থ জুনাইদ আহমেদ পলকের দুই তলা বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এদিন থেকেই বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় খোলা পড়ে ছিল। পলক প্রতিমন্ত্রী থাকার সময় বাড়িটির নীচতলার একটি কক্ষ তাঁর প্রটোকলে থাকা পুলিশ সদস্যদের বিশ্রামের জন্য বরাদ্দ ছিল। এই কক্ষকে অনেকেই পুলিশ ক্যাম্প হিসেবেই জানতেন তখন থেকে। কক্ষের বারান্দায় প্রতিমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেয়ার জন্য পতাকা স্ট্যান্ডও ছিল।
বুধবার (৫ই মার্চ) রাত ৭টার কিছু সময় পরে সিংড়া থানার কয়েকজন পুলিশের উপস্থিতিতে দুই জন যুবক পলকের বাড়ির দ্বিতীয় তলায় অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প লেখা ব্যানার লাগিয়ে চলে যায়।কিছুক্ষণ পর ঘটনাটি জানাজানি হলে উৎসুক লোকজন জড়ো হয়। তবে ততক্ষণে তারা কেউ সেখানে কোনো পুলিশ সদস্যকে দেখতে পায়নি। গোডাউনপাড়াস্থ পলকের এই বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে সিংড়া থানার গুরুত্ব ৫ মিনিট ও সহকারী পুলিশ সুপার সিংড়া সার্কেলের কার্যালয়ের গুরুত্ব ১০ মিনিটের।
তবে বৃহস্পতিবার সকালে পলকের বাড়িতে টাঙানো অবস্থায় কোন ব্যানার দেখা যায়নি। পলকের বাড়িতে পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্পের ব্যানার লাগানো ও খুলে ফেলার ব্যাপারে বক্তব্য জানতে কথা বলার জন্য আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল কোন নেতাকে পাওয়া যায়নি।
তবে কয়েকজন সমর্থক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সিংড়ায় প্রতিদিন ডেভিল হান্ট অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিদিনই কেউ না কেউ যৌথবাহিনীর হাতে আটক হচ্ছে। বৃহস্পতিবারও ৩ জন আটক হয়েছে। তাই এখানে এই মুহূর্তে সাবেক প্রতিমন্ত্রীর বাড়ি কেন, আওয়ামী লীগের হয়ে কথা বলার মতো কেউ নাই।
এ বিষয়ে সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসমাউল হক বলেন, আমাদের কাছে খবর ছিল মবের মাধ্যমে একদল জনতা সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের বাড়িটি ভাঙচুর করবে।যেহেতু ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি ভাঙচুর করা হয়েছে সেহেতু এ ভাঙচুর থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে সিংড়ার এই বাড়িটি ভাঙচুর করা হতে পারে।পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প লেখার কারণে কেউ বাড়িটি ভাঙচুর করতে আসেনি। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় ব্যানারটি খুলে ফেলা হয়েছে। এখন এসে দেখতে পারেন ব্যানারটি আর নেই।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর