• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ০৮ মার্চ, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ২ মিনিট পূর্বে
প্রচ্ছদ / জাতীয় / বিস্তারিত
সম্পাদনাঃ মীর শাকিল
সাব এডিটর
প্রকাশিত : ০৮ মার্চ, ২০২৫, ০১:৩৪ দুপুর
bd24live style=

ভূমিকম্প ঝুঁকিতে দেশের ১৩ স্থান

ফাইল ফটো

সপ্তাহ না ঘুরতেই আবার ভূমিকম্পে কাঁপল দেশ। মিয়ানমার সীমান্তের কাছাকাছি ভারতের মণিপুরে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে, যা অনুভূত হয়েছে রাজধানীসহ দেশের অনেক এলাকায়। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এ নিয়ে গত ১০ দিনে ৪ বার দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হলো। ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে এবং আশপাশে ছোট ও মাঝারি আকারের ভূমিকম্প বাড়ছে। বাংলাদেশ সাত মাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকির মধ্যে আছে।

বিশেষজ্ঞরা ছোট বা মাঝারি ভূমিকম্পের সংখ্যা বৃদ্ধিতে বড় বিপর্যয়ের আভাস দেখতে পাচ্ছেন। তারা বলছেন, বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায়। ফলে এখানে ভূমিকম্প হবেই। তাই ভূমিকম্প সম্পর্কে সচেতন হওয়া, অপরিকল্পিত নগরায়ণ বন্ধ করা, ভূমিকম্প-পরবর্তী জরুরি উদ্ধার ও অনুসন্ধান কাজের প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র জানায়, রিখটার স্কেলে গতকালের ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) বলছে, বাংলাদেশ সময় বুধবার বেলা ১১টা ৩৬ মিনিটে এ ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল ভারতের মণিপুরের জাইরিপক থেকে ৪৫ কিলোমিটার পূর্বে এবং ইম্ফল থেকে ৫১ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তরপূর্বে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের আনুমানিক ১০ কিলোমিটার গভীরে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রুবাঈয়্যাৎ কবীর বলেন, ‘বুধবার ১১টা ৩৬ মিনিটে একটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে উৎপত্তিস্থলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬। এটি একটি মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প। এর উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৪৪৯ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে মিয়ানমার-ভারত সীমান্তে।’

এদিকে গতকাল সিলেটেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এর আগে ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত ২টা ৫৫ মিনিটে সিলেটে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। গতকাল রংপুরেও মৃদু কম্পন অনুভূত হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, খুব অল্প সময়ের জন্য ভূমিকম্পন অনুভূত হয়েছে। এর স্থায়িত্ব ছিল কয়েক সেকেন্ড।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে পঞ্চগড়, রাজশাহী, জয়পুরহাট, ঠাকুরগাঁওসহ উত্তারাঞ্চলের বেশ কিছু জেলায় ভূকম্পন অনুভূত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এভাবে বাংলাদেশের আশপাশে ও দেশের ভেতরেও ছোট বা মাঝারি আকারের ভূমিকম্প বেড়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশে এবং আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ৫৪টি ভূমিকম্প হয়। এটি ছিল আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০১৭ সালে বাংলাদেশে এবং কাছাকাছি এলাকায় ২৮টি ভূমিকম্প হয়। ২০২৩ সালে এর সংখ্যা ছিল ৪১।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বের সিলেট থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকা এবং হিমালয়ের পাদদেশের এলাকাগুলো ভূমিকম্পপ্রবণ। দেখা যাচ্ছে, এসব স্থানে ভূমিকম্প বেড়ে যাচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশে।

বাংলাদেশের আশপাশে যেসব ভূমিকম্প হয়, তার মধ্যে সাধারণত ৮ বা এর চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পগুলো ২৫০ থেকে ৩০০ বছর পর ফিরে আসে। আর ৭ বা এর চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পগুলো ১২৫ থেকে ১৫০ বছরের মধ্যে ফিরে আসে। বাংলাদেশ বা এই ভূখণ্ডে বড় ভূমিকম্পের মধ্যে আছে ১৭৬২ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৫। এটি ‘গ্রেট আরাকান আর্থকোয়েক’ নামে পরিচিত। এর ফলে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, ফেনী এমনকি কুমিল্লা পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এরপর ১৮৯৭ সালে আসামে সংঘটিত ভূমিকম্প ছিল ৮ দশমিক ৭ মাত্রার।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের ১৩টি এলাকা ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে। সবচেয়ে তীব্র ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা ও সিলেটের জৈন্তাপুর এলাকা। তবে ঢাকায় নরম মাটিতে ও জলাশয় ভরাট করে তৈরি সুউচ্চ স্থাপনা ভূমিকম্পে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, ছোট ছোট ভূমিকম্প মূলত বড় শক্তি নিয়ে ভূমিকম্প হওয়ার প্রাথমিক ধাপ। এ অঞ্চলে বড় ভূমিকম্পের শক্তি সঞ্চিত হয়ে আছে। আর বড় কোনো কিছু হলে আগে ছোট কিছু বিষয় ধরা পড়ে। বাংলাদেশ তিনটি (টেকটনিক) প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত। এসব অংশে শক্তি জমা আছে, সেটা যদি একসঙ্গে বের হয়, তাহলে ৮ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এই ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ বলেন, ঢাকাসহ শহরগুলো যেভাবে অপরিকল্পিত, অনিয়ন্ত্রিতভাবে গড়ে উঠেছে, তাতে জনসংখ্যার যে ঘনত্ব, বড় ভূমিকম্প হলে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি অনুমেয়। এখন যদি আমরা প্রস্তুতি নিই এবং জনগণকে দুর্যোগ মোকাবিলায় মহড়ার মাধ্যমে সচেতন করতে পারি, তাহলে ক্ষয়ক্ষতি কম হবে। তবে দুই দশক ধরে এত তাগিদ দেওয়ার পরও সেভাবে মহড়া হয় না। পাশাপাশি কিশোর ও তরুণদের মধ্যে দীর্ঘ মেয়াদে এ নিয়ে সচেতনতা তৈরিতে অ্যাপভিত্তিক গেইমের মতো ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্যোগ নিতে হবে।

সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, আতঙ্ক না ছড়িয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। আতঙ্কে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি বাড়ে। এখন দরকার মহড়া। ঢাকা শহর বা নগরগুলোয় ওয়ার্ডভিত্তিক নিয়মিত মহড়ার আয়োজন করতে হবে। প্রতি বছরে একবার করলেও হবে। ঢাকা শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে পালাক্রমে বছরের যে কোনো সময় সচেতনতামূলক মহড়া করতেই হবে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পূরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদি আহমেদ আনসারী বলেন, ৭ মাত্রার ভূমিকম্পগুলো ফেরত আসার একটি সময় হয়ে গেছে। ভূমিকম্প-পরবর্তী উদ্ধার কাজ যথাযথভাবে পরিচালনার জন্য দমকল বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে এবং আধুনিক উদ্ধার সরঞ্জাম মজুত রাখতে হবে। তবে বড় ধরনের ভূমিকম্প-পরবর্তী উদ্ধার প্রক্রিয়ার প্রস্তুতি অধিক ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ বিধায় আমাদের যথাযথ নিয়ম মেনে ভবন নির্মাণের দিকে বেশি মনোযোগী হতে হবে।

বাঁধন/সিইচা/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com