
নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার বাঁশিলা গ্রামের প্রতিবন্ধী সামাদ তালুকদার (৬৫)। জন্ম থেকে অন্ধ সে। অভাব অনটনের কারণে পরিবার তাকে চোখের চিকিৎসা করাতে না পারায় এক পর্যায়ে সে সারা জীবনের জন্য অন্ধত্ব বরণ করে জীবনযাপন করতে হয় তাকে। তবে জীবনযুদ্ধে হার মানেনি তিনি।
চোখে দেখতে না পেলেও হাতের মননশীলতার ছোঁয়ায় করে চলেছেন বাঁশ দিয়ে ডালি ও বড় ধামা ও সুতো দিয়ে তৈরী করেছেন গরু ছাগলের মুখোশ। সংসারের যাবতীয় কাজ করেন তিনি। জমিতে আগাছা পরিষ্কার,গবাদি পশুর খাবার সংগ্রহ,খড় কেটে গবাদি পশুকে খাবার দেওয়া থেকে শুরু করে বাড়ি থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা দিয়ে কারো সহযোগিতায় ছাড়াই পৌঁছে যান বাজারে ও মসজিদে নামাজের জন্য।
অন্ধ এই সামাদ তালুকদারের শুধু পান প্রতিবন্ধী ভাতা। সামাদ তালুকদার সংসারে তিন সন্তান নিয়ে, একচালা ঘরে বড় করে তুলেছেন, দুই মেয়েকে বিবাহ দিয়েছেন। এক ছেলে মানুষের বাড়িতে কাজ করেন। বয়সের ভারে সামাদ তালুকদার এখন কানেও শুনতে পান না। জীবন সংগ্রামে অদম্য লড়াকু সামাদ তালুকদারকে দেখে অনেকেই হতচকিত হয়ে পড়েন। প্রবল ইচ্ছা শক্তি আর কঠোর পরিশ্রমে সামাদ তালুকদার হাল ধরেছেন সংসারের। হস্তশিল্প ও মাঠে কাজ করেছেন সে। তাকে সকল কাজে সহযোগিতা করেন তার স্ত্রী ও সন্তানেরা। তবে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তাকে জীবন যুদ্ধে হার মানাতে পারেনি। তিনি মনের শক্তি হারাননি কখনো।
স্থানীয় এলাকাবাসী জাহিদুল ইসলাম,আলক তালুকদার, আলেকজান বেওয়া, বেলাল হোসেনসহ অনেকে বলেন, সামাদ তালুকদার চোখে না দেখলেও বাঁশ দিয়ে ধামা, ডালি ও গবাদিপশুর মুখোশ তৈরির কাজ আয়ত্ত করতে পেরেছে। আমাদের এলাকায় সে আমাদের বাজারে একা একা আসেন ও মসজিদে নামাজ আদায় করতে যান। সে সংসারের সকল কাজ একাই করতে পারেন। সে এক ঘরে স্ত্রী সন্তান নিয়ে বসবাস করে অনেক কষ্টে জীবন যাপন করেন। তার পরিবারের পাশে যেন সরকারি দপ্তরসহ সমাজের সকলে এগিয়ে আসেন।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সুমন সরকার বিডি২৪লাইভ'কে বলেন, আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে উনারা যদি দোকান করতে চায় তাহলে আমরা বিনা সুদে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে তাকে ঋণের ব্যবস্থা করে দিবো।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর