
২৮ বছর বয়সী টগবগে এক তরুণ যুবক আসাবুদ্দীন। সুস্থ থাকাকালীন গিরিল মিস্ত্রীর কাজ করতেন তিনি। তার উপার্জনের টাকায় চলতো পুরো পরিবার।
সমবয়সি অন্যতরুণরা যখন নিজ পায়ে হেঁটে এদিক থেকে সেদিক ঘুরে বেড়ায়,আসাবুদ্দিন তখন হুইল চেয়ারে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে নিজেকে নিয়ে ভাবতে থাকেন।
আজ তারও আট-দশটি ছেলেদের মত সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে থাকার কথা ছিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে সুস্থ স্বাভাবিক আসাবুদ্দিনের আজ কোমরের মেরুদণ্ডের হাড়, দুইটি পা ও একটি হাত পঙ্গু হয়ে গেছে। গত ছয় বছর ধরে বিছানায় শয্যাশায়ী। প্রতিদিনই মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন তিনি। সামান্য ভিটেমাটি ছাড়া যেটুকু জমি ছিল সব কিছু বিক্রি করে এতোদিন চিকিৎসার খরচ চালিয়েছে পরিবারটি।
বর্তমানে টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী আসাবুদ্দিনের জীবনে এমন দুর্ঘটনা নেমে আসায় চোখে মুখে অন্ধকার দেখছে পরিবারটি ।
ইতিমধ্যে তার চিকিৎসার জন্য প্রায় ১২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শ, অতি দ্রুত দেশের বাইরে কিংবা উন্নত কোন হাসপাতালে থেরাপিসহ চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তবেই সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে আসাবুদ্দীন। এ জন্য প্রয়োজন আর ও দশ লাখ টাকা যা অসহায় পরিবারটির পক্ষে জোগাড় করা অসম্ভব।
আসাবুদ্দীন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর ইউনিয়নের দক্ষিণদেওড়া গ্রামের দিনমজুর মোহাম্মদ আলীর ছেলে। পরিবারের তেমন কর্মক্ষম কেউ না থাকায় অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই তার পরিবারের আয় উপার্জন বন্ধ রয়েছে। ঋণ করে একদিকে চিকিৎসা খরচ অন্যদিকে সাংসারিক খরচ চালাতে গিয়ে এখন দিশেহারা আসাবুদ্দীনের পরিবার।
সরেজমিনে আসাবুদ্দীনের বাড়িতে গেলে আবেগাপ্লুত হয়ে তার মা-বাবা ও স্বজনরা জানান,২০১৯ সালে আগস্ট মাসে পলাশ উপজেলা বাসস্ট্যান্ডে কোন এক নির্মাণাধীন ভবনের চার তলায় কাজ করতে গিয়ে পড়ে যায় আসাবুদ্দীন। পড়ে গিয়ে কোমরের মেরুদণ্ডের হাড়, দুই পা ও একটি হাত ভেঙ্গে যায় তার। পঙ্গু হাসপাতালসহ বেশ কয়েকটি হাসপাতালে দীর্ঘ দেড় বছর চিকিৎসা করানো হয় তার। মেরুদণ্ডের অপারেশন করা হয়।
সারাদিন শুয়ে থাকায় চিকিৎসার সময় গায়ে কয়েকবার পচনও ধরে। হাসপাতালে দীর্ঘ দেড় বছর চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে পরিবারটি আজ নিঃস্ব। বর্তমানে কোমরের নিচ থেকে সম্পূর্ণ প্যারালাইজড হয়ে গিয়ে অনুভূতিহীন হয়ে পরেছে। হুইল চেয়ারে বসেই দিন যাচ্ছে তার। চিকিৎসা খরচ বহন করতে না পাড়ায় গত তিন বছর যাবত বিনা চিকিৎসায় আর ও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছে ।
সমাজের উচ্চবিত্তদের কাছে আকুল আবেদন অসহায় এই পরিবারের জন্য এগিয়ে আসুন। মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন। চিকিৎসার জন্য আসাবুদ্দিনকে সহায়তা করতে চাইলে তার নিজ নামীয় বিকাশে টাকা পাঠানো যাবে।
আপনার একটু সহায়তায় বেঁচে যাবে একটি প্রাণ ও একটি পরিবার। আসুন আমরা সকলে এই মহৎ কর্মে এগিয়ে আসি। বিপদ যে কোন মুহূর্তে আমার/আপনারও হতে পারে। তাই আর চুপ নয় চলুন এগিয়ে যাই মানবতার দূত হয়ে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর