
পঞ্চগড় জেলার সদর উপজেলার ভিতরগড় সীমান্তের সুইডাঙ্গা সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছে।
শনিবার (৮ মার্চ) ভোররাতে সুইডাঙ্গা সীমান্তের বিপরীতে ভারতের খালপাড়া এলাকায় ভারতীয় ভাটপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের টহলরত সদস্যদের গুলিতে তার মৃত্যু হয়।
তার নাম আল-আমিন (৩৬)। তার বাড়ি জেলার সদর উপজেলার হরিভাষা ইউনিয়নের জিন্নাত পাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের সুরুজ আলীর ছেলে। বিজিবি ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত তিন দিন ধরে আল আমিন নিখোঁজ ছিল। আলআমিনসহ ১০/১২ জন যুবক ভারতের ভাটপাড়া এলাকায় অবস্থান করছিল।
শনিবার ভোররাতে তারা বাড়ি ফিরছিল। পথিমধ্যে ভারতীয় ভাটপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের টহল দল তাদের দেখে ফেলে। এসময় ভারত ও বাংলাদেশের চোরাকারবারি দলটি বিএসএফের ওপর আক্রমণ চালালে বিএসএফ কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়।
এসময় অন্যরা পালিয়ে যেতে পারলেও আল আমিন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। পরে বিএসএফ তার লাশ ভারতে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে শনিবার সকালে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মো. বদরুদ্দোজা সীমান্ত এলাকায় যান।
পরে ওই সীমান্তের মেইন পিলার ৭৪৪/৭ এস এলাকায় বিজিবি বিএসএফের ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পতাকা বৈঠকে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ মো. বদরুদ্দোজা ও ভারতের ৪৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট নেতৃত্ব দেন।
পতাকা বৈঠকে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত হওয়ার ঘটনায় বিএসএফকে কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে বিএসএফকে বলেন পরিস্থিতি যাই হোক সীমান্ত হত্যার মাধ্যমে বিএসএফ মানবাধিকার লংঙ্ঘণ করেছে যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ভবিষ্যতে এরকম ঘটনা ঘটবে না বলে বিএসএফ আশ্বস্ত করেন। দ্রুত লাশ ফেরত দিতে তিনি বিএসএফকে আহ্বান জানান।
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ মো. বদরুদ্দোজা বিএসএফের গুলিতে এক চোরাকারবারি নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান ভারত ও বাংলাদেশের ১০-১৫ জন চোরাকারবারি বিএসএফকে আক্রমণ করে এ সময় আত্মরক্ষার্থে বিএসএফ গুলি চালাতে বাধ্য হয়। বিএসএফের গুলিতে ওই যুবক নিহত হয়।
সরেজমিন জিন্নাতপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, আল আমিনের পরিবারে কান্নার রোল। কান্না করতে করতে বার বার জ্ঞান হারাচ্ছেন আলআমিনের স্ত্রী হুমায়রা বেগম রুনা। তাদের বড় মেয়ে আলেছা তাসনিম আইরিন (১০) পাহাড়বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। অপর কন্যা আনিকা আফসানা (৪) বাবার খোঁজে কান্না করছেন।
বাড়িভর্তি আশপাশের এলাকার মানুষ তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। অবুঝ দুই কন্যা সন্তানের পিতা আল আমিন বিএসএফের গুলিতে নিহত হওয়ায় গোটা গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর