
পাবনার সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কক্ষে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমিরসহ চার নেতাকে মারধরের ঘটনার চারদিন পর স্থানীয় বিএনপি‘র ৫ নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (৮ মার্চ) বিকেলে সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, শুক্রবার (৭ মার্চ) রাতে উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি এবং উপজেলা জামায়াতের শিল্প ও বাণিজ্যিক বিষয়ক সেক্রেটারি মো: ওয়ালিউল্লাহ বিশ্বাস বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় ৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন, সুজানগর উপজেলার বিএনপি’র সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক চর ভবানীপুর গ্রামের মৃত নায়েব আলী খাঁর ছেলে মজিবর রহমান খাঁ (৫৫), কালীমন্দির পাড়ার মৃত করিম খাঁর ছেলে মানিক হোসেন খাঁ (৪০), পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও চর সুজানগর এলাকার নযাই খাঁর ছেলে বাবু খা (৪৫), একই এলাকার মৃত হোসেন শেখের ছেলে আরিফ শেখ (৩৫), মৃত রহমান শেখের ছেলে আব্দুল বাসেদ বাঁশি শেখ (৪২)। এদের মধ্যে আরিফ শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সুজানগর থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, ইউএনও’র রুমে জামায়াত নেতাদের মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আরিফ খাঁ নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ কাজ করছে।
সুজানগর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক কেএম হেসাব উদ্দিন বলেন, ‘সরকারি অফিসে এত বড় একটি চাঞ্চল্যকর ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটলেও প্রশাসন মামলা করেনি। আমরা বাধ্য হয়ে মামলা করেছি। দুঃখজনক হলেও সত্য, এসব মামলার আসামি উপজেলার শীর্ষ সন্ত্রাসীদের এখন পর্যন্ত পুলিশ ধরতে পারেনি।
এদের গ্রেপ্তার করা পুলিশের পক্ষে কোন ব্যাপারই না। অথচ অদৃশ্য কারণে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। এসব অপকর্মকারীদের জন্য গত ৬ মাসে সুজানগরে ৩ জন ওসি পরিবর্তন হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে ‘
উল্লেখ্য, গত সোমবার (৩ মার্চ) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে জামায়াতের চার নেতা কোনো একটি কাজে সুজানগর ইউএনও অফিসে যান। ইউএনও অন্য একটি কাজে ব্যস্ত থাকায় তাঁরা অফিসকক্ষে অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় উপজেলা বিএনপির সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মজিবর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা-কর্মী সেখানে যান।
বালু উত্তোলন কেন বন্ধ করা হয়েছে তা ইউএনওর কাছে জানতে চান তাঁরা। সেখানে আগে থেকেই বসে থাকা জামায়াত নেতাদের দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁরা বলেন, ‘এরা কেন এখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকে?’ এ কথা বলেই বিএনপি নেতারা ইউএনওর কক্ষ থেকে বের হয়ে আরও কয়েকজনকে ডেকে আনেন।
পরে বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান, বাবু খাঁ, মানিক খাঁ, আব্দুল বাছেদ, আরিফ শেখসহ ৩০-৪০ জন নেতা-কর্মী ইউএনওর কক্ষে ঢুকে ওই জামায়াত নেতাদের কিল, ঘুসি, লাথি মারতে থাকেন। পরে জামায়াত নেতাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত বিএনপির চার নেতাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। গত মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত দলীয় প্যাডে এই আদেশ দেওয়া হয়।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর