• ঢাকা
  • ঢাকা, সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৫ মিনিট পূর্বে
খায়রুল আলম রফিক
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১০ মার্চ, ২০২৫, ০৬:৩৩ বিকাল
bd24live style=

প্রদীপ কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি’র চেষ্টা, ঘটাচ্ছেন বিতর্কিত এডি দিদারুল

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কক্সবাজারের টেকনাফ থানায় দায়িত্বপালনকালে তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে মাদক ও অপকাণ্ড নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন কক্সবাজারের সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খান। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ফরিদুল মোস্তফাকে ধরে নিয়ে অমানবিক নির্যাতনের পর মাদক, অস্ত্রসহ একাধিক মামলায় আসামি করে কারাগারে পাঠানো হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপিসহ সরকারের উচ্চ পদের অনেকের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থাকায় ওসি প্রদীপের এসব কাণ্ডে কেউ টু-শব্দও করতে পারেনি। উল্টো ওসি প্রদীপ তার ‘তল্পিবাহক’দের দিয়ে প্রচার করিয়েছিলেন তার অপকর্মের বিরুদ্ধে যারা কলম ধরবে, তাদের জন্য ফরিদুল মোস্তফার ঘটনা সতর্কতাস্বরূপ! তবে মেজর সিনহাকে খুনের মধ্য দিয়ে উখিয়া-টেকনাফে পাখি শিকারের মতো মানুষ হত্যার পথ রুদ্ধ হয় ও সাংবাদিকরা স্বস্তি পান।
 
প্রদীপকাণ্ড এখন অতীত। সিনহা হত্যায় ফাঁসির রায় নিয়ে তিনি কারাগারে অবস্থান করছেন। কিন্তু ‘প্রদীপ কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি’র চেষ্টা করেছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (এডি) এ.কে.এম দিদারুল আলম।
 
তার কার্যালয়ের একটি টিম কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা মুক্তারকুল এলাকার বজল করিম নামে এক নিরীহ সিএনজি চালককে রোববার (৯ মার্চ) দুপুরে লিংকরোড থেকে ধরে নিয়ে নির্যাতনের পর ইয়াবা দিয়ে চালান দিয়েছে। চালকের পরিবারের দাবি, দরিদ্র সিএনজি চালককে কোনো অদৃশ্য ইশারায় ফাঁসিয়েছে মাদক টিম। এ বিষয় নিয়ে প্রতিবেশী খরুলিয়া এলাকার বাসিন্দা জাতীয় অনলাইন বিডি২৪লাইভ ও সময়ের কণ্ঠসরের কক্সবাজার প্রতিনিধি এবং স্থানীয় দৈনিক মেহেদীর বিশেষ প্রতিবেদক শাহীন মাহমুদ রাসেল পরিবারের বরাত দিয়ে মাদক এডি দিদারের বক্তব্য নেন বিকেল ও সন্ধ্যায়। প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে না পেরে সাংবাদিক শাহীনের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়ান মাদক এডি দিদার।
 
এ ঘটনায় তার গোমর ফাঁস হবে ভয়ে, ওসি প্রদীপ স্টাইলে সাংবাদিক শাহীন রাসেলকে ফাঁসানোর অপচেষ্টার ছক আঁকেন মাদক এডি দিদার। সেই ছক মতে এক তরুণকে রাত নয়টার দিকে রেললাইন এলাকা থেকে ধরা হয় বলে প্রচার করেন। তার পায়ুপথ দিয়ে পেটে ইয়াবা ঢোকানো উল্লেখ করে কয়েকটি অনলাইনের কর্মীদের মাদকের কক্সবাজার কার্যালয়ে ডাকা হয়। ফেসবুকে সেসব কর্মীদের লাইভে এনে আটক তরুণকে প্রশ্ন করানো হয়। বলা হয়, তার পায়ুপথে ঢোকানো ইয়াবার মালিক কে? তখন ওই তরুণ বলেন, সাংবাদিক রাসেল। তাকে দিয়ে এসব মাদক পাচার করা হচ্ছিল। পায়ুপথ থেকে বের করার আগেই প্রচার করা হয় ১৭০০ ইয়াবা তার পেট থেকে উদ্ধার হয়েছে।
 
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিংবা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আইন পরিপন্থি আটক ব্যক্তিকে দিয়ে তথ্য প্রচারের বিষয়টি ফেসবুকে দেখে জেলায় কর্মরত একদল পেশাদার সাংবাদিক রাতেই মাদক কার্যালয়ে যান। তারা এডি দিদারের রুমে গিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে, তার (দিদার) বা তাদের (মাদক টিমের) কোনো দোষ নেই দাবি করে আটক তরুণকে সাংবাদিকদের সামনে আনা হয়। তখন সাংবাদিকদের প্রশ্নে ওই তরুণ সাংবাদিক শাহীন মাহমুদ রাসেলের পুরো নাম কিংবা তার বাড়ি ও পরিচয় ঠিক মতো দিতে পারেননি। সাংবাদিক শাহীনের সঙ্গে তার কখনো কথাও হয়নি বলে স্বীকার করেন তরুণ। কিন্তু এর আগে লাইভে তিনি সাংবাদিক শাহীন রাসেলের ইয়াবার বাহক কেন বলেছেন, এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি ওই তরুণ।
 
এ বিষয়ে সাংবাদিক শাহীন মাহমুদ রাসেল জানান, খরুলিয়া এলাকার সিএনজি চালককে (বজল করিম) কোনো মাদক ছাড়াই দীর্ঘক্ষণ আটক রাখা হয়েছিল। এ বিষয়ে সহকারী পরিচালক দিদারুল আলমের সঙ্গে ফোনে কথা হলে বাকবিতণ্ডা হয়, তখন দিদারুল তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। কিছুক্ষণ পর চালকের স্ত্রী তাকে (রাসেলকে) ফোন করে জানান, তার স্বামীকে প্রথমে ছেড়ে দিবে বললেও এখন (বিকেলে) আর ছাড়বে না বলে কর্মকর্তারা হুমকি দিয়েছেন।
 
এরপর রোববার (৯ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আমি (সাংবাদিক শাহিন রাসেল) আমার ফেসবুকে সিএনজি চালক বজলের স্ত্রীর একটি ভিডিও পোস্ট করি। সেখানে বজলের স্ত্রী অভিযোগ করেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা দিদারুল আলম তার স্বামীকে (সিএনজি চালক বজল করিম) মাদক দিয়ে ফাঁসিয়েছেন। পোস্টের ক্যাপশনে আমি (সাংবাদিক রাসেল) লিখেছি, ‘অপকর্মে মশগুল মাদকদ্রব্যের এডি দিদারুল। মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়া সিএনজি চালক বজল করিমের স্ত্রী রাশেদার আহাজারি!!’
 
এ ভিডিওটি পোস্ট করার মাত্র দুই ঘণ্টার ব্যবধানে রাত সাড়ে ৯টায় মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের কার্যালয়ে আগে থেকে আটক থাকা এক তরুণকে শিখিয়ে আমার (সাংবাদিক রাসেলের) বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ানো এবং তা স্থানীয় ফেসবুক টিভিতে লাইভ প্রচার করা হয়।
 
বিষয়টি নিয়ে কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা বলেন, কোনো অপরাধী শত্রুতাবশত বা কারো দ্বারা প্ররোচিত হয়ে তার অপরাধের সঙ্গে যে কারো নাম বলতেই পারে। অপরাধীর ভাষ্য অভিযোগ যাচাই না করে প্রচার করা আইনসম্মত নয়। ঘটনার বিষয়ে কক্সবাজারের বিভিন্ন সাংবাদিকও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
 
কক্সবাজার রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও দৈনিক মানবজমিনের স্টাফ রিপোর্টার রাসেল চৌধুরী বলেন, পেশাদার একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এমন নাটক সাজানো চরম অন্যায়। আমরা চাই, তদন্তের মাধ্যমে এর সঠিক বিচার হোক।
 
ক্রাইম রিপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (ক্র্যাক) সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি জসিম উদ্দিন বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তার এমন কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া যায় না। দিদারুল আলমের বিরুদ্ধে অন্য কর্মস্থলেও নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। আগের সেসব অপকর্মগুলোর তদন্ত হওয়া উচিত।
 
কক্সবাজার জেলা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন বলেন, সত্যের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে যদি সাংবাদিকরা মিথ্যা অভিযোগের শিকার হন, তাহলে মুক্ত গণমাধ্যম হুমকির মুখে পড়বে। প্রশাসনের উচিত নিরপেক্ষ তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।
 
ঘটনার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (ডিএনসি) কাজী গোলাম তওসিফের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপনারা লিখিত অভিযোগ দিন, আমি ডিজিকে বলে দিচ্ছি। দ্রুত আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
 
তার নির্দেশনার ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মমতাজ তানভীর এবং চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাহিদ হোসেন মোল্লার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, কোনো আসামি আদালতে স্বীকারোক্তি না দিলে বা রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে অন্য কারও নাম উল্লেখ না করলে কোনো ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা যায় না। পাবলিক প্লেসে স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে কাউকে অভিযুক্ত করাও আইনসিদ্ধ নয়। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি।
 
এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয়ের এডি এ কে এম দিদারুল আলম বলেন, সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করতে চেয়েছে তাই আমরাও নিষেধ করিনি। তবে তখনো পায়ুপথ থেকে উদ্ধার ইয়াবা গণনা হয়নি বলে স্বীকার করেন তিনি।
 
যেসব সাংবাদিকদের কথা বলা হচ্ছে সেসব মিডিয়াগুলো সরকার বা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত কোনো গণমাধ্যম কি না, এমন প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিতে পারেননি তিনি।

বাঁধন/সিইচা/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com