
বাংলাদেশ ডিএইচএমএস ডক্টরস ফাউন্ডেশনের আয়োজনে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের শিক্ষক, চিকিৎসক ও ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সমস্যা ও দাবী নিয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকায়।
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ ডিএইচএমএস ফাউন্ডেশন গতকাল সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকায় ৯ দফা দাবি জানিয়েছে। সংগঠনের প্রেসিডেন্ট ডাঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম উপস্থিত সকল সাংবাদিকদের বলেন, প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ, আমাদের সালাম, শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা গ্রহণ করুন। বিভিন্ন সময়ে, দুঃসময়ে আপনারা আমাদের পাশে ছিলেন এবং বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে কাজ করেছেন, সেই সত্য ও সাহসে আপনাদের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের নিকট দাবীসমূহ পেশ করছি।
শ্রদ্ধেয় সাংবাদিক মহোদয়গণ, আপনারা জানেন যে, বাংলাদেশের মতো একটি জনবহুল দেশে চিকিৎসা সেবা থেকে প্রায় ৪০% লোক বঞ্চিত। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকগণ দেশের ব্যাপক জনগণের চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। ডিএইচএমএস, বিএইচএমএস প্রায় ৮০ হাজার চিকিৎসক এই মহান পেশায় নিয়োজিত। এই পেশার উন্নয়নের জন্য উচ্চ শিক্ষা, গবেষণা অত্যন্ত জরুরি এবং গবেষণার মাধ্যমে সেবার মান আরো বৃদ্ধি পাবে। দাবী বাস্তবায়ন হলে এদেশের প্রায় ৯০% লোক চিকিৎসা সেবার আওতায় চলে আসবে।
পাশ্ববর্তী দেশে আলাদা মন্ত্রণালয়সহ হোমিওপ্যাথিক ইউনিভার্সিটি থাকলেও, আমরা চেষ্টা করেও ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হচ্ছি। আমরা আপনাদের লিখনির মাধ্যমে আমাদের সমস্যা সমাধান হবে বলে বিশ্বাস করি। আপনারা সমাজের অকুতভয় সৈনিক। আপনাদের সাথে অবহেলিত হোমিওপ্যাথিক সমাজের এক আধ্যাত্মিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। আপনাদের লেখায় জাতি যেমন উপকৃত হয়েছে, তেমনি উপকৃত হয়েছে রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টর ও জনগণ।
তাই আমরা আমাদের ন্যায্য সঙ্গত এবং সেবা প্রদানে আরও কাজ করার লক্ষ্যে কিছু দাবী/প্রস্তাবনা তুলে ধরলাম। নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের দাবীসমূহ অন্তর্ভুক্ত করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পেশ করা হয়েছে, তা অন্তর্ভুক্তির জন্য দাবি জানাচ্ছি।
গত ৫ই ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার নিকট জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও বলতে হচ্ছে, প্রতিবেদনে অধ্যায়-১৩ ধারার স্বাস্থ্য সেবায় যারা কাজ করেন তাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ইউনানী, আয়ুর্বেদিক, ফিজিওথেরাপির নাম উল্লেখ করা হলেও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সেবার নাম নেই। এটা কিভাবে সম্ভব, আমাদের বোধগম্য নয়। অনতি বিলম্বে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী আমাদের বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল ফেডারেশন কর্তৃক পেশকৃত দাবীসমূহ অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি।
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা, শিক্ষা ও সেবা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য স্বাস্থ্য খাতে জাতীয় বাজেটের ১০% বরাদ্দ নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। অনতি বিলম্বে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামরিক অনুমোদন দেওয়া হোক। (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জমাকৃত)
হোমিওপ্যাথির চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রসারের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে আলাদা ডিরেক্টরেট চাই। ডিএইচএমএস কোর্সের মান স্নাতক নির্ধারণ ও সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করা হোক। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে।
শিক্ষকদের ১০০% বেতন ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি প্রদান করতে হবে। হোমিওপ্যাথিক ঔষধ আমদানি, প্রস্তুত ও বিক্রয়ের ক্ষেত্রে অন্য যেকোনো আইন থাকুক না কেন, তা শুধুমাত্র হোমিওপ্যাথিক আইন ২০২৩ দ্বারা পরিচালিত হবে। ২০২৩ ব্যতীত অন্য কোনো আইন প্রয়োগ করা যাবে না। বায়োকেমিক চিকিৎসা পদ্ধতির কোর্স চালু করতে হবে।
উপরিল্লিখিত দাবীসমূহ বাস্তবায়ন করে সকলের জন্য স্বাস্থ্য কর্মসূচী বাস্তবায়নে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি। আগামী ৩ মাসের মধ্যে দাবীসমূহের দৃশ্যমান অগ্রগতি/বাস্তবায়ন না হলে, আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর