
রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় একটি গরুকে গোসল করানোর মাধ্যমে ‘শাহবাগীবিরোধী ঐক্য’ তাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে। ওই গরুর নাম দেওয়া হয়েছে ‘শাহবাগী’।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সকাল ৮টায় শাহবাগীবিরোধী ঐক্যের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়, যার লক্ষ্য শাহবাগ আন্দোলনের সমর্থকদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করা।
সংগঠনটির অভিযোগ, ২০১৩ সালের শাহবাগ আন্দোলন ছিল দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি ভয়াবহ মুহূর্ত, যখন গণজাগরণ মঞ্চের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার ফ্যাসিবাদী শক্তির উত্থান ঘটিয়েছিল। তাদের দাবি, গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের ফলে, দেশের নিরীহ রাজনৈতিক নেতাদের হত্যা করা হয়েছিল, এবং এর জন্য প্রধানত শাহবাগ আন্দোলনের সমর্থকরা দায়ী। সেই সময়, সরকারের ক্ষমতার অপব্যবহার ও দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হওয়ার মূল কারণ হিসেবে শাহবাগী আন্দোলনকে দায়ী করা হচ্ছে।
শাহবাগীবিরোধী ঐক্যের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা প্রতীকীভাবে একটি গরুকে গোসল করিয়ে শাহবাগীদের বিরুদ্ধে তাদের বার্তা দিতে চেয়েছেন। সংগঠনের সদস্যরা দাবি করেছেন— ‘শাহবাগীরা তো গোসলও করেন না। তাদের প্রতি বার্তা দিতে, আমরা একটি গরুকে গোসল করানোর উদ্যোগ নিয়েছি।’ এতে তাদের উদ্দেশ্য ছিল, শাহবাগীদের মনে করিয়ে দেওয়া, সাধারণত সভ্য মানুষদের মতো নিয়মিত গোসল করা উচিত।
এছাড়া, সংগঠনটির আরেক সদস্য জানিয়েছেন, ২০১৩ সালের শাহবাগ আন্দোলনটি শুধু রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের সূচনা হয়নি, বরং দেশের মানুষের নৈতিক বিপর্যয়ের কারণও ছিল। তাদের মতে— এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে যারা ছিলেন, তাদের ক্ষমতায় আসার পর দেশের অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়েছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, তারা এই কর্মসূচির মাধ্যমে শাহবাগীদের নিজেদের কর্মকাণ্ড ও নৈতিকতা নিয়ে ভাবতে বলছেন।
গরুকে গোসল করানোর পর, ঐক্যটি এই কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় একটি গণইফতারও আয়োজন করেছে, যাতে তারা শাহবাগীদের বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে চায়। এর মাধ্যমে তারা শাহবাগীদের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান তুলে ধরছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের শাহবাগ আন্দোলন, যা ‘গণজাগরণ মঞ্চ’ নামে পরিচিত, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত। এই আন্দোলনের মাধ্যমে কথিত যুদ্ধাপরাধের বিচার করা হয়েছিল। সে সময়, তাদের দাবির প্রেক্ষিতে তৎকালীন সরকারবিরোধী দলগুলোর নেতাদের বিচারিক হত্যা কার্যকর করেছিল। ফলে, সেই আন্দোলন দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অনেক বিরোধিতার মুখোমুখি হয়।
এখন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে শাহবাগীবিরোধী ঐক্য পুনরায় ওই আন্দোলনের বিরোধিতা করতে চায় এবং তাদের মতে— শাহবাগীরা দেশের জন্য এক অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর