
দোকানের ক্রেতা সেজে সখ্যতা গড়ে তোলার পর প্রতারণার মাধ্যমে দোকান মালিকের কাছে নকল স্বর্ণমুদ্রা বিক্রি করে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এক প্রতারক।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর স্টেশন বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী মিলন শেখের সঙ্গে এ প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই ব্যবসায়ী।
মিলন শেখ বলেন, ‘১৫ দিন আগে দাঁড়ি মুখে টুপি মাথায় দেয়া আনুমানিক ৫০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি আমার দোকানে আসেন। তিনি বাচ্চাদের শার্ট, প্যান্ট ও পাঞ্জাবিসহ কয়েক ধরনের পোশাক কেনেন। এর ৩ থেকে ৪ দিন পর ওই ব্যক্তি আবারও এসে কয়েকটি পোশাক বদল করে নেন এবং নতুন পোশাকও কিনে নিয়ে যান। কয়েকদিন পর তিনি আবারও আমার দোকানে এসে ২ হাজার টাকায় আরও কিছু পোশাক কেনেন। সেদিন আমরা একসঙ্গে মসজিদে নামাজও আদায় করি। পরপর কয়েকদিন তিনি আমার দোকানে এসে পোশাক কেনায় তার সঙ্গে আমার সখ্য গড়ে ওঠে। তিনি আমাকে জানান, তার বাড়ি চাঁদপুর জেলার মতলব এলাকায়, তিনি নাকি পেশায় রাজমিস্ত্রির কাজ করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবশেষ গত ১০ মার্চ তিনি আমার দোকানে এসে আরও কিছু পোশাক কেনেন। ওইদিন তিনি আমাকে বলেন, তিনি একটি পুরাতন মন্দির ভাঙার কাজ করতে গিয়ে মূর্তির ভেতর অনেকগুলো স্বর্ণমুদ্রা পেয়েছেন। তার কাছে মোট ২ হাজার ১৪০ পিস স্বর্ণমুদ্রা আছে। আমি যদি নিতে চাই তাহলে তিনি আমাকে কম দামে দিবেন। এ বিষয়ে অনেকক্ষণ কথা বলার পর আমি তার কথা বিশ্বাস করি। তিনি বলেন স্বর্ণমুদ্রা দেখতে হলে আমাকে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় যেতে হবে।
বুধবার (১২ মার্চ) সকালে তার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করে আমি ভাঙ্গায় যাই। সেখানে যাওয়ার পর তিনি আমাকে একটি ব্যাগের মধ্যে অনেকগুলো স্বর্ণমুদ্রা দেখান। সেগুলোর মধ্যে থেকে তিনি আমাকে একটি স্বর্ণমুদ্রা যাচাই করার জন্য দিয়ে দেন। আমি স্বর্ণমুদ্রাটি এনে আমার দোকানের পাশের স্বর্ণের দোকানে সাড়ে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি করি। এরপর তিনি আমাকে ফোন করে বলেন, বাকি স্বর্ণমুদ্রাগুলো নিতে চাইলে আমি যেন তার সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করি।’
মিলন শেখ বলেন, ‘তার কথামতো আমি স্বর্ণমুদ্রাগুলো আনার জন্য বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মাদারীপুরের ট্যাকের হাট এলাকায় যাই। সেখানে যাওয়ার পর দেখি তার সঙ্গে আরও এক ব্যক্তি আছেন। সে সময় তিনি আমাকে বলেন, এখানে বেশিক্ষণ দাঁড়ানো যাবে না। দ্রুত টাকা দিয়ে স্বর্ণমুদ্রাগুলো নিয়ে যান। আমি তাকে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা দেই। তিনি আমাকে ১৬০ পিস মুদ্রা দেন। আমি মুদ্রাগুলো এনে আবারও পাশের স্বর্ণের দোকানে কয়েক পিস বিক্রি করার জন্য নিয়ে যাই। তবে এ মুদ্রাগুলো দেখে স্বর্ণকার জানান এগুলো নকল। পরে সবগুলো মুদ্রাই স্বর্ণকারকে দেখানো হলে তিনি সবগুলোকেই নকল বলে শনাক্ত করেন। এরপর আমি বুঝতে পারি যে আমি প্রতারণার শিকার হয়েছি।’
বসন্তপুর স্টেশন বাজার কমিটির সভাপতি মো. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘আমাদের বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী মিলন নকল স্বর্ণমুদ্রা কিনে প্রতারিত হয়েছেন। দোকানের ক্রেতা সেজে সখ্যতা গড়ে তুলে প্রতারক তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। প্রত্যেক ব্যবসায়ীর সবসময় সচেতনতা অবলম্বন করে ব্যবসা বাণিজ্য করা উচিত।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর