
গাজীপুরের কালীগঞ্জে জামায়াতে ইসলামির ইফতারে বিএনপি সশস্ত্র হামলা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলায় আহত ১০ জনের মধ্যে ২জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও ঘটনাস্থল থেকে ১ লক্ষ ১০ হাজার ২’শ টাকা মূল্যের জিনিস ছিনিয়ে নিয়ে গেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে বিএনপি’র বিরুদ্ধে।
গুরুতর আহতরা হলেন, উপজেলার ঈশ্বরপুর এলাকার মফিজ উদ্দিনের ছেলে আসলাম (২৬) এবং বাহাদুরসাদীর খলাপাড়া এলাকার ইসলাম সরকারের ছেলে হাফিজ উদ্দিন (৩৫)। এছাড়াও ৩জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যায় গাজীপুর কালীগঞ্জের বাহাদুরসাদীর খলাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) ভোর রাতে ভুক্তভোগী মো. সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে ১৩ জনকে আসামি করে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন, কালীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাকসুদুল কবীর নকীব।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ভুক্তভোগী ও বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর যুব বিভাগের সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. সুমন মিয়া জানান, নিয়মিত মাহফিলের অংশ হিসেবে উপজেলার বাহাদুরশাদীর খলাপাড়ার খাজা মার্কেট এলাকায় ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ইফতারের পূর্বমুহূর্তে স্থানীয় বিএনপির কর্মী আপেলের নেতৃত্বে ১০-১৫ জন এসে ইফতার মাহফিলে বাঁধা প্রদান করে। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে তারা ইফতারের খাবার লাথি মেরে ফেলে দেয় এবং খাবার নিয়ে চলে যান। তখন জামায়াতের কর্মীরা অন্য স্থানে ইফতার ও নামাজ শেষে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে গেলে বিএনপি কর্মীরা দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।
উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মাহমুদুল হাসান বলেন, জামায়াতে ইসলামি বরাবরই সহনশীলতা, ধৈর্য, সংযম এবং সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী। উপজেলায় আমরা শুধু মুসলমান না অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের পাশেও সাধ্যমতো দাঁড়িয়েছি। আর তাই দিন দিন আমাদের গুণগ্রাহীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। সম্ভবত আমাদের এই উত্থানকে একটি দল সহ্য করতে পারছে না। পুরো উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আমরা শান্তিপূর্ণ এবং সহাবস্থানের মাধ্যমে ইফতার মাহফিল করেছি। গতকাল রাতের ঘটনা অনভিপ্রেত। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
গাজীপুর মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য খায়রুল হাসান বলেন, “জামায়াত একটি আদর্শিক রাজনৈতিক দল। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার মাধ্যমে বাস্তবিক জীবনের আমূল পরিবর্তন করাই জামায়াত কর্মীদের উদ্দেশ্য। অপরদিকে ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিএনপি’র কর্মী বলে জেনেছি। তারা আমাদের অর্জনকে হিংসা করে বলেই আমাদের থামাতে বল প্রয়োগ ও আমাদের ব্যাপারে গুজব ছড়াতে উঠে পড়ে লেগেছে। আমরা অবশ্যই আমাদের নীতি নৈতিকতা ও আদর্শ দিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবো। তারা আমাদের যত বাঁধা দিবে আমরা আরো দ্বিগুণ শক্তিতে আমাদের কাজ চালিয়ে যাবো। জেনেছি আমাদের আমাদের নেতা-কর্মীদের ইফতার মাহফিলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বাধা দিয়েছে। পরে তাদের হামলায় আমাদের প্রায় ১০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। এর মধ্যে দুইজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় গাজীপুর পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অপরদিকে বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদীন শেখ জানান, জামায়াতের নেতা কর্মীরা হঠাৎ সেখানে সংঘবদ্ধ হয়ে বিএনপি’র নেতা কর্মীদের বাড়িতে হামলা করেছে। বিএনপির কর্মী আপেলকে তুলে নিতে চেয়েছিল বলে এলাকাবাসী তাদের বাঁধা দেয়। এর জেরেই সংঘর্ষ বাধে।
এস আই বলেন, গতকালের ঘটনায় আজকে ভোর রাতে থানায় একটি মামলা রজু হয়েছে। এর পর থেকেই অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি খুব শীঘ্রই দোষীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারবো।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর