
দিন অথবা রাত, থেমে নেই অবৈধ কাঠ, লাকড়ি ও বাঁশ পাচার। এখানে কারোরই নেই বন আইন মানার প্রবণতা। বন বিভাগের 'বিট কর্মকর্তাই যেন সর্বসত্তা’। বিট কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করায় হল অলিখিত চলাচল পাশ (টিপি)। রিজার্ভ বা ব্যক্তিগত বাগানের কাঠ কাটতে লাগে শুধু তার সম্মতি। গড়ে প্রতিদিন অর্ধশতাধিক বনজদ্রব্য বোঝাই গাড়ি যাচ্ছে প্রকাশ্যে। এই যেন মগের মুল্লুক। বলছিলাম লামা বন বিভাগের সরই বিট অফিসের নিত্যদিনের কর্মযজ্ঞের কথা।
পৃথিবী যখন জলবায়ু ইস্যুতে প্রকৃতি সংরক্ষণের কথা ভাবছে তখন অবৈধ কাঠ পাচারের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে লামার সরই ইউনিয়ন। প্রতিদিন এবং রাতে সরকারের নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করে সরই বন বিটে কর্মরত বন কর্মচারীদের সহায়তায় অবৈধ ভাবে বনজদ্রব্য পাচার হচ্ছে। ইউনিয়নের আন্ধারি, লুলাইং, লেমু পালং, হাছনাপাড়া, আমতলী, বাইশপাড়ী সহ এই ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকাগুলোতে নির্বিচারে বনজ দ্রব্য কর্তন করা হচ্ছে। বিভিন্ন মানুষের ব্যক্তি মালিকানাধীন বাগান বন বিভাগের চলাচল পাশ না নিয়ে কর্তন করে পাচার অব্যাহত রয়েছে। সরই এলাকার বনজ দ্রব্য পাচারের জন্য বন বিটে কর্মরত বন প্রহরীদের সহায়তায় কাঠ পাচারকারীরা একটি বড় সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। অবৈধ বনজ দ্রব্য পাচারের বিষয়ে সরই বন বিটের বিট কর্মকর্তার দায়িত্বরত বন প্রহরী আব্দুল করিম বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে তথ্য গোপন করে কাঠ পাচারকারীদের সাথে অবৈধ লেনদেনের সম্পর্ক সৃষ্টি করে নির্বিচারে বনজ দ্রব্য পাচার করে যাচ্ছে।
এদিকে সরই এলাকার দুর্গম এলাকাগুলোতে অশ্রেণী ভুক্ত বনাঞ্চল হতে হাতি দিয়ে কাঠ পরিবহণ করে এই সকল কাঠ বিটে কর্মরতদের সহায়তায় পাচার করা হচ্ছে। এছাড়াও টিপি না নিয়ে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন সরই বিট এলাকা থেকে হাজার হাজার বাঁশ কেয়াজু পাড়া লোহাগাড়া সড়ক দিয়ে পাচার অব্যাহত আছে। বাঁশ, কাঠ, জ্বালানি কাঠ পাচারের জন্য রয়েছে স্বতন্ত্র সিন্ডিকেট। এছাড়াও অভিযোগ উঠেছে, টিপির চেয়ে অতিরিক্ত বাঁশ পরিবহণ করা হয়। শুধুমাত্র বাঁশ হতে সরই এলাকা থেকে এ বছর কয়েক লক্ষ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বিটে কর্মরতগণ নিজেরা ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হচ্ছেন। গত দুই মাসে ওই এলাকায় ছোট বড় মিলে কমপক্ষে একশ বাগান কাটা হয়েছে।
সরই এলাকার গাছ ব্যবসায়ী মঞ্জুর আলম জানান, সরই বন বিট অফিস ও সরই ফাঁড়ি পুলিশকে ম্যানেজ করেই আমরা ব্যবসা করছি। ব্যক্তিমালিকানা বাগান কাটতে কীসের অনুমতি ?
অবৈধ ভাবে গাছ পাচারের বিষয়ে বিটের দায়িত্বরত বন প্রহরী আব্দুল করিম সাংবাদিককে জানান, আসলে অনেক কিছু হাইড (গোপন) করতে হয়।
ডলুছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ জানান, অবৈধ ভাবে বনজ দ্রব্য পাচারের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর