
কক্সবাজারের ঈদগাঁওতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলা পালটা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বসত ঘরে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছে। শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাত ১০টার দিকে ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ফাঁসিয়াখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঈদগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান। নিহত হাবিবুল হুদা চৌধুরী ( ৬৭ ) একই এলাকার মৃত শামশুল হুদা চৌধুরীর ছেলে। আহতরা হলেন- নিহত শামশুল হুদার বোন কোহিনূর সিদ্দিকা, মেয়ে শবনম তপুরা ও শ্যালিকা খতিজা বেগম।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়দের বরাতে মশিউর রহমান বলেন, জমির মালিকানা নিয়ে স্থানীয় ইসলামবাদ ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের নেতা আব্দুর রাজ্জাকের পরিবারের সাথে হাবিবুল হুদা চৌধুরীর পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ইতিপূর্বে বিরোধের জেরে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল।
জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হন। রাতে প্রতিপক্ষের সংঘবদ্ধ ১৫/২০ জনের একটি দল হাবিবুল হুদা চৌধুরী ও তার স্বজনদের বসত ঘরে হামলা চালায়। এতে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এসময় বসত ঘরে ভাংচুরের ঘটনার পাশাপাশি গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে। ঘটনায় গুলিবিদ্ধ সহ ৪ জন আহত হন। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এসময় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসপাতালে আনার আগেই একজনের মৃত্যু হয়েছে জানান।
নিহতের ছেলে সাজিদুল হুদা সাদিদ অভিযোগ করে বলেন, বিগত ৫ আগস্টের আগে থেকেই আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের পরিবারের সাথে জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে তার স্বজনদের রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করে আসছিল। দলীয় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তাদের ওপর একাধিকবার হামলার পাশাপাশি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে।
তিনি আরও বলেন, শুক্রবার দুপুরেও জুমার নামাজের পর স্থানীয় মসজিদের পাশে আব্দুর রাজ্জাকের পরিবারের লোকজন আমার স্বজনদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমার এক মামাসহ দুইজন আহত হন। পরে হামলাকারীরা হামলা চালানোর ঘোষণা দেয়।
তিনি বলেন, রাতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে ৩০/৪০ জনে সশস্ত্র একদল দুর্বৃত্ত অতর্কিত আমাদেরসহ স্বজনদের বসত ঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এতে প্রতিপক্ষের ছুড়া গুলিতে আমার বাবা নিহত এবং মা ও ভাই-বোনসহ ৫ জন আহত হয়েছে। হামলা ঘটনার আশঙ্কা করে আগে থেকেই পুলিশকে অবহিত করা হলেও নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ না করার অভিযোগ নিহতের এ ছেলের।
এ ব্যাপারে অভিযোগ অস্বীকার করে ঈদগাঁও থানার ওসি মো. মশিউর রহমান বলেন, ঘটনার খবর শোনার পরপরই পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কিন্তু তার আগেই দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনার খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও র্যাবের সদস্যরাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
ওসি জানান, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গের রাখা হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর