
জাকাত ইসলামের মৌলিক পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম। জাকাত বলতে ধন-সম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ দান করাকে বোঝায়। পারিভাষিক অর্থে জাকাত হলো, নিসাবধারীর সম্পদ, জমির ফসল ও খনিজ সম্পদের ওপর ইসলামি শরিয়ত নির্ধারিত অংশ নির্দিষ্ট খাতে ব্যয় করা।
আল্লাহ তায়ালা জাকাত ব্যয়ের খাতগুলো সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। জাকাতের সম্পদ ব্যয়ের খাত মোট আটটি। সেগুলো হলো—
এক. গরিব-ফকির— যাদের নেসাব পরিমাণ সম্পদ নেই। দুই. মিসকিন— যাদের কোনো সম্পদ নেই। তিন. ইসলামি রাষ্ট্রের সরকারকর্তৃক জাকাত, সদকা, ওশর ইত্যাদি উসুল করার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি। চার. ইসলামের দিকে ধাবিত করার জন্য জাকাত দেওয়া। তবে এ খাতটি বর্তমানে আর প্রযোজ্য নয়। পাঁচ. নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের বিনিময়ে স্বাধীন হওয়ার চুক্তিতে আবদ্ধ দাস-দাসী। ছয়. পর্যাপ্ত পরিমাণ সম্পদ না থাকায় ঋণ পরিশোধে অক্ষম ঋণী ব্যক্তি। সাত. যোদ্ধা, যারা যুদ্ধের অস্ত্র যোগাতে অক্ষম অথবা টাকার কারণে হজের কাজ পূর্ণ করতে অক্ষম বা ইলম হাসিল ও দ্বীনি দাওয়াতের কাজে নিয়োজিত গরিব মানুষ। আট. সফর অবস্থায় অভাবগ্রস্ত মানুষ।
কেউ যদি কোনো গরিব বা দরিদ্র ব্যক্তিকে দাওয়াত করে খাবার খাওয়ায় এবং এর মাধ্যমে জাকাত আদায়ের নিয়ত করে তাহলে এর মাধ্যমে জাকাত আদায় হবে না। কারণ, জাকাত আদায়ের অন্যতম শর্ত হল, জাকাত গ্রহীতাকে জাকাতের টাকা অথবা বস্তুর পূর্ণ মালিক বানিয়ে দেওয়া।
আর খাবার খাওয়ানোর মাধ্যমে ওই খাবারে তাদের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয় না। তাই জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত ব্যক্তিদেরকে খাবার খাওয়ানোর মাধ্যমে জাকাত আদায় করতে চাইলে তাদেরকে খাবারের প্যাকেট সরবরাহ করা এর মালিক বানিয়ে দিতে হবে। যেন তারা ইচ্ছা করলে ওই খাবার নিয়েও যেতে পারে।
উল্লেখ্য, জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত ব্যক্তিদেরকে খাবার সরবরাহ করার মাধ্যমে যদিও জাকাত আদায় হয়ে যাবে, কিন্তু খাবার, কাপড় কিংবা অন্য কোনো বস্তু না দিয়ে নগদ টাকা দেওয়াই ভালো। যেন তারা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী খরচ করতে পারে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর