
বরগুনা আমতলী উপজেলায় তিন দিনব্যাপী ওরস আয়োজনের প্রস্তুতির মধ্যে একটি মাজারে মব তৈরি করে হামলা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে দাবি করছেন মাজার কর্তৃপক্ষ।
রবিবার (১৬ মার্চ) রাত সারে ১২ টা পর্যন্ত সেখানে চলে ভাঙচুর ও লুটপাট অগ্নিসংযোগ।
রাতে তৌহিদি জনতার পক্ষে মাওলানা মুফতি মো. ফারুক হোসেনের সাথে মাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক এ্যাড, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুলের সাথে গান বাজনা নিয়ে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে হাতাহাতি হলে সংঘর্ষে রূপ নিলে এ ঘটনা ঘটে।
‘ইসমাইল শাহ বাবা মাজার’ নামের এ মাজারটি বরগুনা আমতলী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডে অবস্থিত। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও তিন দিন ব্যাপী মাজারে বার্ষিক ওরস হওয়ার কথা ছিল। এজন্য মাজারের সামনে মঞ্চ ও বড় তোরণ নির্মাণ করা হয়েছিল। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ভক্তদের জন্য শামিয়ানা দিয়ে প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছিল।
এদিকে মাজারের ওরস ঠেকাতে তৌহিদি জনতা কয়েক হাজার লোকজন লাঠি হাতে মিছিল বের করেন। মিছিলটি মাজারের সামনে পৌঁছালে আশেপাশের আরও কয়েক গ্রামের মানুষ মিছিলে অংশ নিয়ে মাজারে ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়ে দেয়।
এ সময় মাজারের বিভিন্ন আসবাব, ঘরের টিন ও দেয়ালের ইট খুলে ফেলে হয়। সেখানে বিক্ষুব্ধ লোকজন বিভিন্ন স্লোগান দেন। তৌহিদি জনতা আগুন দিয়ে মাজারের চারপাশ ঘিরে অবস্থান নেওয়ায় সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যেতে পারেননি। ভাঙচুরকারীদের অভিযোগ, মাজারটিতে গানবাজনা, মাদক সেবন ও অশ্লীল কর্মকাণ্ড চালানো হতো।
স্থানীয় জনতা ও মুফতি ওমর ফারুক জিহাদী অভিযোগ করে বলেন, ইসমাইল শাহ ১৯৯৬ সালে মাজারটি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শুরু থেকে ওরসের নামে বিদাত ও শিরক করা হয় ওই মাজারে।এসব কাজে বাধাঁ দিলে তিনি কর্ণপাত না করে তার মুরিদান আলেম ওলামাদের ওপর হামলা করলে ১০-১২ জন আহত হন।এছাড়া নারী পুরুষ তারা তাদের পীরকে খোদা মনে করে, কথিত পীরের মাজারে সরাসরি সিজদা করেন। তারা মোমবাতি জ্বালিয়ে অগ্নি পূজার মতো করে পূজা করেন। মাজারের লোকজন প্রতিবছর চৈত্র মাসে ঢোল,তবলা ও হরেক রকম বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করে গান, বাজনা ও জিকির করেন। প্রতি বছরে ২ চৈত্র ওরসের নামে নারী-পুরুষ একত্রে হয়ে ভণ্ডামি ও মাদক সেবন করেন। এ ছাড়া মুসলমান হয়ে তারা কোরআন ও ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কাজ করতেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য মাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক এ্যাড,মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বলেন,বিষয়টি আলোচনা করে সমাধান করা যেতো। তা না করে একদম উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে মাজারে হামলা ভাঙচুর,লুটপাট করেন।হামলায় মাজারে একাধিক মুরিদান গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শফিউল আলম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জহিরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উভয় পক্ষকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড মাজারে তৌহিদি জনতা হামলার পর আগুন দিয়েছে। তৌহিদি জনতার মধ্যে চরম উত্তেজনা থাকায় ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যাওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না।পরে রাত ১টার দিকে সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর