কুমিল্লার সাবেক এমপি বাহারের ঘনিষ্ঠজন কুমিল্লা পুলিশ লাইন্স এলাকার ব্যবসায়ী এনএস গ্যালারির স্বত্বাধিকারী কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ঠিকাদার সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করে বিল উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২২-২৩ অর্থবছরে সাইফুল ইসলাম ১০ টির বেশি টেন্ডার পেয়েছেন। যার আনুমানিক মূল্যমান ৫৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা। ২৩-২৪ অর্থবছরে তিনি টেন্ডার পেয়েছেন ২১টির মতো যার আনুমানিক মূল্য ১৭২ কোটি টাকা। ঠিকাদার সাইফুল কাজ নিজে না করে বা অন্যকে দিয়ে করিয়ে বিল উত্তোলন করেছেন। 

এ সব অভিযোগের ভিত্তিতে তার কার্যক্রমের সকল ফাইল তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।  বুধবার (১৯ মার্চ) দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মাসুম আলীর নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত দল কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন কাজের অনিয়মের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে এসব তথ্য অনুসন্ধানে অভিযান পরিচালনা করেন। টিমের অপর দুই সদস্য হলেন, কুমিল্লা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদুক) সহকারী পরিচালক মো. তারিকুর রহমান ও কনস্টেবল মামুনুর রশিদ।

এদিকে, দুদুকের অভিযানের খবর পেয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস কক্ষের সামনে হাজির হলে কক্ষের দরজার বন্ধ দেওয়া হয়।
পরে প্রায় ৪০মিনিট পর গণমাধ্যম কর্মীদের ভিতরে প্রবেশ করতে দেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শামছুল আলম।

কুমিল্লা পুলিশ লাইন্স এলাকার ব্যবসায়ী এনএস গ্যালারির স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার সাইফুল ইসলাম সাবেক এমপি বাহারের ঘনিষ্ঠজন বলে পরিচিত ছিলেন। এমপি বাহার সাইফুল ইসলামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন টেন্ডার ভাগিয়ে কাজ করাতেন।

দুদকের সহকারী পরিচালক মাসুম আলী জানান, দুর্নীতি দমন কমিশন ঢাকা কার্যালয় নির্দেশনা অনুযায়ী কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত দল তথ্য অনুসন্ধানে এসেছি। আমরা ঠিকাদার সাইফুল ইসলামের কাগজপত্রগুলো চেয়েছি এবং সেগুলো পর্যালোচনা করছি। তিনি আরো জানান, ২২-২৩ অর্থবছরে সাইফুল ইসলাম ১০ টির মত টেন্ডার পেয়েছেন। যার আনুমানিক মূল্যমান ৫৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা। ২৩-২৪ অর্থবছরে তিনি টেন্ডার পেয়েছেন ২১টির মত অনেক ১৭২ কোটি টাকা।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হল তিনি কাজ নিজে না করে বা অন্যকে দিয়ে করিয়ে বিল উত্তোলন করেছেন। আমরা যে আইডিগুলো পেয়েছি সেখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করে একটি প্রতিবেদন ঢাকা অফিসে পাঠাবো। সেখান থেকে যে নির্দেশনা আসবে পরবর্তী কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যক্রম সে অনুযায়ী নেওয়া হবে। গণমাধ্যম কর্মীদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, টেন্ডার প্রক্রিয়া ইজিবিতে করা হয় কোন নথি পরিবর্তন সিস্টেম নেই।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার শামছুল আলম জানান, দুদক আমাদের কাছে যে-সব তথ্য চেয়েছেন আমরা সেসব তথ্য দিয়েছি। সকল তথ্য ও প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে রয়েছে তারা যা যা চান সকল তথ্যই পাবেন।  দুদকের কার্যক্রম নিয়ে আমাদের মন্তব্য করার কিছু নেই।

তবে একটি সূত্র জানায়- নির্বাহী কর্মকর্তার যোগসাজশেই সাইফুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে কাজ না করে বিল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। এর সাথে রয়েছে সাবেক মেয়র তাহসিন বাহার সূচনা, সাবেক এমপি বাহারসহ আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরাও জড়িত রয়েছে।

শাকিল/সাএ