
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে তালতলা দহের দখলকে কেন্দ্র করে বিএনপি’র দু-গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিপক্ষের হামলায় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ি, মাছ ধরার নৌকা ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের তালতলা দহ, সানাকৈর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। হামলায় ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতিসহ উভয় পক্ষের ৫ জন আহত হয়। এ ঘটনায় সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ ও সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সরিষাবাড়ী উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের তালতলা দহটি ১৪২৮ বাংলা হইতে ১৪৩৩ বাংলা পর্যন্ত উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিলার নামে ইজারা রয়েছে।
পরবর্তীতে মৎস্যজীবি খলিলুর রহমান স্থানীয় মজনু মিয়ার নিকট ১২ লক্ষ টাকায় সাবলীজ দেন। খলিলুর রহমানএর নামে লিজকৃত দহ ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন লিটন, সাবেক ইউপি সদস্য ইসাহাক আলী তালতলা দহটি দখলে রেখে মাছ ধরে আসছেন।
পালটা দখল করতে জেলা বিএনপি’র জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আওয়াল ও মহাদান ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল ওয়াহাবএর লোকজন বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সানাকৈর বাজার থেকে একটি মোটর সাইকেল বহর দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিশোঠা নিয়ে তালতলা দহ এলাকায় মহড়া দেয়। দহে থাকা ২২ হাত ২টি নৌকাসহ ৫টি নৌকা ভাঙচুর করে।
৪’শ হাত লাইলন সুতার ২টি জাল পুড়িয়ে দেয়। প্রায় তিন হাজার হাত জাল লুটকরে নিয়ে যায় বলে ইউনিয়ন বিএনপি’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইসাহাক আলী, তালতলা দহের ইজারাদার খলিলুর রহমান ও জেলেদের হাওয়ালদার আব্দুর রশিদ সাংবাদিকদের নিকট অভিযোগ করেন। বিকেল ৪টার দিকে উপজেলা বিএনপি’র সদস্য আনোয়ার উস সাদাত লাঞ্জু, মহাদান ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক ইসমাইল হোসেন লিটন, সাবেক ইউপি সদস্য ইসাহাক আলী’র পক্ষের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ এর বসত বাড়ীসহ কোরবান আলী, মানিক মিয়া, রুবেল মিয়া, আরিফুল ইসলাম আরিফ, পরান মিয়া, কাশেম মিয়া, রমজান আলী ও হাবিবুর রহমান হবিএর বসত বাড়িতে হামলা ভাঙচুর করা হয় এবং মানিক (২১), মারুফ (৩৫), রুবেল (২১) কে মারপিট করার অভিযোগ উঠে।
হামলা ভাংচুরের প্রতিবাদে বিকেলে সাবেক ইউপি সদস্য ইসাহাক আলী’র সর্মথকরা সানাকৈর বাজারে মনোহারী ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান আব্দুল জলিলএর দোকান, আলী, হৃদয়, আমিনুর ও আব্দুল আওয়ালএর অফিস ও বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। হামলায় মহাদান ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল ওয়াহাব, দোকানদার আলী (৫৫) আহত হন। এ সময় ২টি মোটর সাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে বলে আব্দুল আওয়াল অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে মহাদান ইউনিয়ন বিএনপি’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইসাহাক আলী জানান, বর্তমান জামালপুর জেলা বিএনপি’র জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক (অবসর) আব্দুল আওয়াল তিনি এলডিপি’র নেতা ছিলেন। সে একের পর এক বিএনপি’র উপর ভর করে চাঁদাবাজি ও বিএনপি’র নেতা-কর্মীর বসতবাড়িতে হামলা, জেলেদের নৌকা ভাঙচুর, জাল লোটসহ, মারপিট ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। এ ভাংচুরের হাত থেকে আমার বসতবাড়ি রেহাই পায়নি। তাই আব্দুল আওয়াল কে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য তাকে দল থেকে বহিষ্কার করার জন্য জেলা/কেন্দ্রীয় নেতাদের নিকট এ দাবি করছি।
জানতে চাইলে জামালপুর জেলা বিএনপি’র জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক (অবসর) আব্দুল আওয়াল সানাকৈর গ্রামের আব্দুল ওয়াদুদএর বসতবাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর এবং মারপিটের ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, আওয়ামীলীগের ইজাদারাদের নিয়ে অন্যায় ভাবে উপজেলা বিএনপি’র সদস্য আনোয়ার উস সাদাত লাঞ্জু, মহাদান ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন লিটন, সাবেক ইউনিয়ন বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ইসাহাক আলী’র একটি গ্রুপ
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর