
শুরুতে কেউ শখের বশে, কেউ বা নিজের আত্ম উন্নয়নে শিখেছেন ফরাসি দেশের ভাষা। একটা সময় গিয়েই সেই ভাষায় কারো ভাগ্য বদলিয়ে দিয়েছে, কেউবা ভাষা শেখার শখ থেকে বেছে নিয়েছেন ফরাসি ভাষার শিক্ষকতা। এছাড়া ভাষা শেখার কারণে বিশ্ব চষে বেড়ানোর রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার যেন কমতি নেই অনেকেই। এমন শ’খানেক অভিজ্ঞতায় ইফতারের আয়োজন ছাপিয়ে পরিণত হয়েছিল সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায়।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফ্রেঞ্চ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন (ডুফা) এর আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে ওই ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে ফ্রেঞ্চের বিভিন্ন সার্টিফিকেট কোর্স এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
এমন আয়োজনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার প্রসঙ্গ টেনে ডুফার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং ফরাসি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মিজানুর রহমান খান বলেন, ‘সবাইকে একসঙ্গে দেখে বেশ ভালো লাগছে, বিশেষ করে এখানে আমার কিছু শিক্ষকও এসেছেন। সবমিলিয়ে আশা করব, প্রতি বছর এমন আয়োজন ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।’
আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট (আভাই) অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনছারুল আলম বলেন, ‘অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনে অর্থ, শ্রম, পরামর্শ সবই প্রয়োজন হয়। অনেকের মাঝে একটা ভুল ধারণা আছে যে, সদ্য পড়াশোনা শেষ হয়ছে কিন্তু টাকা-পয়সার কারণে অ্যালামনাইয়ের সঙ্গে যুক্ত হন না। আমরা চাই সকলেই যুক্ত হবেন বিশেষ করে আমাদের কেন্দ্রীয় যে অ্যালামনাই রয়েছে, সেখানে আশা করব সবাই যুক্ত হবেন। আমরা সবাই এক হয়ে, আভাই অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনকে অনেকদূর এগিয়ে নিতে চাই।’
সভাপতির বক্তব্যে ফ্রেঞ্চ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত বিসিএস (কর) কর্মকর্তা লিয়াকত আলী খান বলেন, ‘আমি শুধু ফ্রেঞ্চই শিখেনি, অন্তত পাঁচটি ভাষা শেখেছি। আমার চীনে যাওয়ার সুযোগ ছিল একই সময়ে ফ্রান্স সরকারের একটি বৃত্তিও পেয়ে যাই। যেহেতু আমি ফ্রেঞ্চ আগে শিখেছি, তাই ফ্রান্সেই চলে যাই। এখন পর্যন্ত আমি যতগুলো দেশে ঘুরেছি স্থাপত্য দেখেছি সবচেয়ে আর্কষণীয় স্থাপত্য শহর মনে হয়েছে প্যারিসকে, শুধু প্যারিস না ফ্রান্সের অনেক শহরই বেশ দৃষ্টিনন্দন। আশা করব যারা, ফরাসি ভাষা শিখছেন তাদের এই ভাষাটি অনেক কাজে লাগবে। আমি বিদেশি ভাষা জানার কারণে অনেক সমস্যা সমাধান করতে পেরেছি।’
শুধু ইফতারের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বড় পরিসরে সাংস্কৃতিক আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণের প্রসঙ্গে বলেন, ‘রমজানের ইফতারে সীমাবদ্ধ না থেকে সাংস্কৃতিক আয়োজন করা যেতে পারে। অ্যালামনাইদের একত্রিত হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। একই সঙ্গে যারা দায়িত্ব রয়েছেন তারা চাইলে একটা অ্যালামনাই কর্ণার করতে পারেন যেখানে বর্তমানদের সঙ্গে সাবেকদের মধ্যে একটা যোগাযোগ হবে। হতে পারে সেটি, আলাপ আলোচনা; এই জীবনে পরামর্শেরও প্রয়োজন রয়েছেন।’
আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আবছার কামাল বলেন, ‘আমরা আগামীতে এমন আয়োজন আরও বড় পরিসরে আয়োজন করতে চাই। বিশেষ করে, যারা সাবেক রয়েছেন তারা বর্তমানদের জন্য বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিতে পারেন এবং বর্তমানরাও বিভিন্ন অভিজ্ঞতা নিতে পারবেন। যার ফলে, অনেক শিক্ষার্থীই ফ্রেঞ্চ নিয়ে আগ্রহী হবেন। হয়ত, তখনই অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের যে উদ্দেশ্য সেটি সফল হবে।’
এসময় ফ্রেঞ্চ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিপুল চন্দ্র দেবনাথের সঞ্চালনায় ফরাসি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক আমিনুল ইসলাম, চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের আফিকুর রহমান নাহিদ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) প্রভাষক ইমদাদুল হক ইমনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর