
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধেরে ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্য প্রত্যাখান করে বিক্ষোভ করেছেন একদল সাধারণ শিক্ষার্থী।
শুক্রবার (২১ মার্চ) রাত ২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়া থেকে মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি টিএসসিতে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় তারা ‘আমার সোনার বাংলায় আওয়ামী লীগের ঠাঁই নাই’, ‘সাঈদ-ওয়াসিম-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘ধরি ধরি ধরি না, ধরলে কিন্তু ছাড়ি না’, ‘আওয়ামী লীগের গতিতে আগুন জ্বালো একসাথে’সহ একাধিক স্লোগান দেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ১৬ বছর ধরে যারা ফ্যাসিবাদ কায়েম করে গুম, হত্যা, নিপীড়ন চালিয়েছে এবং ছাত্র-জনতাকে পাখির মতো শহিদ করেছে তাদের পুনর্বাসন ছাত্র-জনতা মেনে নেবে না। চব্বিশের শহিদদের সাথে কোনো বেঈমানি মেনে নেওয়া হবে না। জুলাইয়ের পর আওয়ামী লীগ তার রাজনীতি করার প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে। ইনিয়ে বিনিয়ে তাদের পুনর্বাসন করা হলে আরেকটা জুলাই হবে।
তারা বলেন, জুলাইয়ের আহতরা এখনো হাসপাতালে কাতরাচ্ছে কিন্তু এতদিনেও আওয়ামী লীগের বিচার করতে পারেনি এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। অবিলম্বে আওয়ামী লীগের বিচার করে তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, যেই আওয়ামী লীগ দুই হাজারের মতো মানুষকে হত্যা করেছে, তিরিশ হাজারের বেশি আহত করেছে সেই আওয়ামী লীগের আর রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই। অবিলম্বে এই দলকে নিষিদ্ধ করতে হবে, কোন ধরনের গড়িমসি করা চলবে না।
এদিন মধ্যরাতে আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা চলছে অভিযোগ করে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের ফিরে আসায় সমঝোতা করতে ছাত্র নেতাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। এই পরিকল্পনা পুরোপুরি ভারতের।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের (আইসিজি) প্রেসিডেন্ট ও সিইও কমফোর্ট ইরোর নেতৃত্বে আসা একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের বৈঠকে রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে দলের যেসব নেতার বিরুদ্ধে হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধসহ অন্যান্য অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, তাদের বাংলাদেশের আদালতে বিচার করা হবে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর