
কক্সবাজারের আওয়ামী লীগের জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের ৫২০ নেতার বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শুক্রবার (২১ মার্চ) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি এনামুল হক বাদী হয়ে এই মামলা করেন। তিনি চট্টগ্রামের বাঁশখালীর চাম্বল ইউনিয়নের ছাদেক ফকির পাড়ার নবী হোসেনের ছেলে। বর্তমানে তিনি কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নে থাকেন।
কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াস খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৪ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত কক্সবাজার শহরের লালদিঘীর পাড়, শহীদ মিনার, গুমগাছ তলা, হকশন ও আশেপাশের সড়কে জনমনে আতঙ্ক ও ত্রাস সৃষ্টি, হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা, বিস্ফোরণ উপকরণ ব্যবহারসহ নানা অপরাধে মামলাটি করা হয়েছে।
যেখানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা সিরাজুল মোস্তফা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, আশেক উল্লাহ রফিক, জাফর আলম, আবদুর রহমান বদি, কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র গ রহমার চৌধুরী, জেলা পরিষদরে সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাফ আহমদ চৌধুরী, শাহীনুল হক মার্শাল, কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নজিবুল ইসলাম, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহিনুল হক মার্শাল (৪৮), জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আওয়ামীলীগ মাসেদুল হক রাশেদ (৫৫), সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কায়ছারুল হক জুয়েল (৪২), জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক সোহেল (৪৫), সাবেক পৌর মেয়র মাহবুবুর রহমান (৫০), সাবেক সাংসদ খান বাহাদুর মোস্তাক আহমদ চৌধুরী (৫৫), জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস.এম সাদ্দাম হোসেন (৩৪), মোনাফ সিকদার (৩৫), ঝিলংজার চেয়ারম্যান টিপু সুলতান (৪৬), কায়ছারুল হক মুন্না চৌধুরী (৩৩), হাসান তারেক (৩০), নজিবুল ইসলাম (৪৮), ইসতিয়াক আহমদ জয় (৪৩), ইমরুল কায়েস চৌধুরী (৩৮), এথিন রাখাইন (৫০), আতিক উদ্দিন চৌধুরী (৫৫), রাজিবুল ইসলাম মোস্তাক (২৯), ফয়সাল আব্দুল্লাহ (৩৬), মাহমুদুর রহমান মাদু (৫৮), রেজাউর রহমান রেজা (৪২), আবু মোহাম্মদ মারুফ আদনান (৩০), নাজনীন সরওয়ার কাবেরী (৪০), রিগান আরফাত (৩৫), দিদারুল ইসলাম রুবেল (৪০), আরিফুল মওলা (৪৫), আবদুর রাজ্জাক (৫০) চেয়ারম্যান, কাজী রাসেল (৪৫), উজ্জ্বল কর (৪৫), ডালিম বড়ুয়া (৪৬), কুদরত উল্লাহ সিকদার (৪৮), শফিউল্লাহ আনসারী (৪২), জমির হোসেন জামি (৩২), নারিমা জাহান (২৮), মো. জাফর আলম প্রঃ বালতি জাফর (৪৫), মিজানুর রহমান মিজান প্রকাশ বার্মাইয়া মিজান (৩৫), আব্দুল খালেক চেয়ারম্যান (৫৮), সালাউদ্দিন সেতু (৫০), জসিম উদ্দিন চেয়ারম্যান (৪৫), ফখরুল ইসলাম গুদু (৫০), রোস্তম আলী চৌ (৪২), সাখাওয়াত হোসেন তুর্ক (২৮), রাশেদ মাহমুদ আলী চেয়ারম্যান (৩৫), সাবেক জেলা ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ মারুফ (৩৫), কাজী তানজিত পাশা (৩২), রিয়াজ মোর্শেদ (৪২), ওয়াসিফ কবির (৩০), সোহেল জাহান চৌধুরী (৫০), আলী আহম্মদ (৪২) (সাবেক সভাপতি, জেলা ছাত্রলীগ, বোরহান উদ্দিন খোকন (২৮) সহ-সভাপতি-জেলা ছাত্রলীগ, মো. রুবেল প্রকাশ বাঘা রুবেল (৩৩) সাবেক সহ-সভাপতি, কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ, সোয়াইব ইফতেখার (৪৫), সাহাব উদ্দিন সিকদার (৪৮), সালেহা আক্তার আখি (৩৫), তাহমিনা নুসরাত জাহান লুনা (৪২), শাহেনা আক্তার পাখি (৩৫), নুরুল আজিম কনক (৫২), ৬৪ এহছান উল্লাহ (৩৪), সাবেক কাউন্সিলর, ইমাদ সিকদার (২৭) যুগ্ম আহ্বায়ক রামু উপজেলা ছাত্রলীগ, শরীফ বাদশা (৫৭) সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, মুকছুদ মিয়া (৬৫), সাফায়েত কামাল সৌরভ (৪৫), মোহাম্মদ হোসেন মাসু (৫০), ওবাইদুল হোসেন (৫০), (মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগ, আবরার সাকিব (২৬), ভারুয়াখালী, দীপক দাশ (৪৫), তারেক বিন ওসমান শরীফ (৩৯), শেখ শাহ আলম (৪৫), ফয়েজ উদ্দিন জিকু (৪০) (উপজেলা সভাপতি-মৎস্যজীবী লীগ), মোহাম্মদ ইসমাইল (৩৫), অর্থ সম্পাদক, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ পূর্ব মহেশখালী, হাফেজ আহমদ (৪০), নুরুল বশর (৪৫), শাওন আরমান (৩০), উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী (৫৫)সহ ৫২০ নামের নাম উল্লেখ রয়েছে।
অজ্ঞাত দেখানো হয়েছে আরও ২৫০ জনকে। মামলা নাম উল্লেখ থাকা সকলেই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যবু মহিলা লীগ, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের দায়িত্বশীল। আসামির তালিকায় রয়েছেন জেলা জাসদের নেতা মোহাম্মদ হোসেন মাসুর নামও।
অন্যদিকে, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা এই মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন। তারা দাবি করেছেন, সরকার ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে।
সাম্প্রতিক সময়ে কক্সবাজারে রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে স্থানীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছেছে।
এই মামলার কারণে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এ নিয়ে ৫ আগস্ট পরবর্তী কক্সবাজার জেলার ৯ উপজেলায় ২২টি মামলা দায়ের করা হল।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর