• ঢাকা
  • ঢাকা, বুধবার, ০২ এপ্রিল, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৪৪ মিনিট পূর্বে
শাহীন মাহমুদ রাসেল
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৫ মার্চ, ২০২৫, ০৯:০৩ সকাল
bd24live style=

ঈদের ছুটিতে ‘সুযোগ সন্ধানী’ নির্মাণকারীরা, কলাতলীর সমুদ্রতীরে ফের অবৈধ ভবন

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

কক্সবাজারের পর্যটন কেন্দ্র কলাতলীর সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায় উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে একের পর এক বহুতল ভবন গড়ে উঠছে। যদিও সেন্টমার্টিন ও সোনাদিয়া দ্বীপের পরিবেশ সংরক্ষিত এলাকা (ইকোলজিক্যাল ক্রিটিক্যাল এরিয়া – ইসিএ) রক্ষায় সরকার কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে, তবে কক্সবাজার শহরের এই গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যকলাপ থামছে না।

লাবণী পয়েন্ট হতে কলাতলী ও আশপাশের বেলাভূমি তীরে থেমে থেমে চলা স্থাপনার বিষয়ে ‘উই ক্যান কক্সবাজার’ নামে একটি পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ে গত নভেম্বরে অভিযোগ দেয়। এতে ইসিএ আইন ও এসটিপি বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের আন্তরিক কর্মতৎপরতা কামনা করে আবেদন দেয়ার পর কিছুদিন থেমেছিল নির্মাণ কাজ। কিন্তু রোজার শেষ দশক ও ২৬ মার্চ হতে ঈদের টানা বন্ধের সুযোগ কাজে লাগিয়ে দ্রুত নির্মাণ সম্পন্ন করতে সেসব স্থাপনায় আবারো তোড়জোড় করে কাজ চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন উই ক্যান নেতৃবৃন্দ। রাতেও এসব স্থাপনায় চলছে নিরবচ্ছিন্ন কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, লোভী ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের নিরব সহযোগিতা পাচ্ছেন। তারা নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে ‘নজরানা’ দিয়ে নিজেদের কাজ নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব ভবন নির্মাণের ফলে কক্সবাজারের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সমুদ্রতীরের বাস্তুসংস্থান চরম হুমকির মুখে পড়ছে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এসব অবকাঠামো নির্মাণে কোনো স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান (এসটিপি) রাখা হয়নি। ফলে বর্জ্য ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় সমুদ্র দূষিত হচ্ছে, যা সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক হুমকি।

তথ্যমতে, সৈকত এলাকাকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে ১৯৯৯ সালের ১৯ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে সরকার। এ গেজেট অনুযায়ী সৈকতের বেলাভূমির নির্দিষ্ট এলাকায় স্থাপনা নিষিদ্ধ। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) দায়ের করা রিটের সূত্র ধরে ইসিএ’তে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। এরপরও প্রশাসনকে ম্যানেজ কিংবা ফাঁকি দিয়ে উঠছে দালান।

অপরিকল্পিত স্থাপনা ও ভয়াবহ দূষণের ঝুঁকিতে পড়তে যাওয়া পর্যটন নগরীকে রক্ষায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে গত নভেম্বরে আবেদন দেয় ‘উই ক্যান কক্সবাজার’ নামে একটি পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন। তারা ইসিএ আইন ও এসটিপি বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের আন্তরিক কর্মতৎপরতা কামনা করেন। এটি গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলে ভবন নির্মাণকারীরা কিছুদিন হাতগুটিয়ে রাখে। কিন্তু গত সপ্তাহ হতে আবারো পুরোদমে নির্মাণ কাজ চালানো হচ্ছে একাধিক স্থাপনায়।  

উই ক্যান কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী ওমর ফারুক জয় বলেন, দেশের দক্ষিণে নীল জলরাশির জানালায় নির্মল প্রকৃতি উপভোগে কক্সবাজারে আসেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা। অসচেতনতা ও আইন অমান্যের কারণে দূষিত হচ্ছে এখানকার পরিবেশ। যা পর্যটকদের মাঝে কক্সবাজার সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করছে। আগে যেমন-তেমন ভাবে ভবন উঠেগেছে ইসি এলাকায়। কিন্তু পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষার তাগিদে উচ্চ আদালত ইসিএতে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে নির্দেশনা দিলেও প্রশাসনিক নির্লিপ্ততায় তা কার্যকর হচ্ছে না। বরং লোভী ব্যবসায়ীদের নীরবে সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজারের সভাপতি এইচ এম এরশাদ বলেন, ইসিএতে স্থাপনা নির্মাণে নিষেধাজ্ঞায় গেজেট ও আদালতের নির্দেশনা থাকলেও কলাতলীর ডিভাইন ইকো-রিসোর্টের পূর্বে লাগোয়া এবং মধ্য কলাতলীতে অসংখ্য স্থাপনা উঠছে। গত কয়েক মাস নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকলেও ঈদুল ফিতরের টানা ছুটিকে টার্গেট করে আবারো ছাদ ঢালাইয়ের তোড়জোড় করছে ডিভাইন এলাকার নির্মিতব্য স্থাপনায়। গত এক-দু’দশক আগে গড়া হোটেলে এসটিপি নেই, কিন্তু প্রশাসনিক তদারকি হীনতায় চলমান সময়ে গড়ে ওঠা অবৈধ এসব স্থাপনাতেও হচ্ছে না এসটিপি। ফলে শহরের পরিবেশ সামনের দিকে আরো দূষিত হবে। ভয়াবহ দূষণে পড়ছে পর্যটন জোনও।

পরিবেশকর্মী আমান উল্লাহ আমান বলেন, কক্সবাজারে আসা পর্যটকদের আবাসন সেবায় এখানে গড়ে উঠেছে পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউস-কটেজ। রয়েছে তিনশোর বেশি রেস্তোরাঁ-কুলিং কর্নার। এরই মাঝে অনুমতিহীন বিনাবাধায় ইসিএ-তে ভবন উঠছে। পরিবেশ আইন না মানায় ধীরে বাস অনুপযোগী হয়ে উঠছে পুরো শহর। ছাড়পত্রহীন ভবন নির্মাণ বন্ধ করা জরুরি।

কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, পরিকল্পিত কক্সবাজার গড়তে মাস্টার প্ল্যানকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আগে কি হয়েছে জানি না। তবে, এখন পরিচ্ছন্ন কক্সবাজার করতে যা দরকার তা-ই করা হবে। ঈদটা চলে যাক, যারা কউকের নির্দেশনা মানছে না- তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

উল্লেখ্য, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের উদ্যোগ হিসেবে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) ইকোট্যুরিজম পার্ক করতে দেওয়া সোনাদিয়া দ্বীপের প্রায় সাড়ে ৯ হাজার একর বনভূমি আট বছর পর আবার বন বিভাগকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। গত ১৭ মার্চ দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর সোনাদিয়া দ্বীপকে রক্ষিত এলাকা হিসেবে সংরক্ষণের পরিকল্পনা নিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। 

শাকিল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com