সাংবাদিকের সাথে অশালীন আচরণ করায় নাটোরের সিংড়া উপজেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদ আলী মোল্লার বদলি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. মাহমাদুল হাসান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই আদেশ দেয়া হয়েছে। আদেশে বলা হয়েছে, পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত আসাদ আলী মোল্লার পরবর্তী কর্মস্থল সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়। আর এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। 

জানা যায়, সম্প্রতি তথ্য অধিকার আইনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে উপজেলার খাস জলমহালের তথ্য চান দৈনিক সমকাল সিংড়া উপজেলা প্রতিনিধি ও সিংড়া উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রসিদ। কিন্তু সেই তথ্য না দিয়ে তালবাহনা শুরু করেন এবং এক পর্যায়ে সাংবাদিক আব্দুর রশিদের সাথে মুঠোফোনে অশালীন আচরণ করেন ইউএনও’র প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদ আলী মোল্লা। এরই জের ধরে ডেভিল হান্টের নাটক সাজিয়ে ১২ মার্চ সাংবাদিক আব্দুর রশিদকে গ্রেফতার করে। ১৩ মার্চ আদালতে পাঠানো হলে আদালতের বিচারক তার জামিন মঞ্জুর করেন।

এদিকে সাংবাদিক আব্দুর রশিদের গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়লে এই ঘটনায় নাটোর জেলার সকল গণমাধ্যম কর্মীদের মাঝে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠে। পরে তার মুক্তির দাবিতে নাটোরের তিন প্রেসক্লাবের গণমাধ্যম কর্মীদের নেতৃত্বে ৭টি উপজেলার সকল সাংবাদিক জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নাটোর জেলা ও বিভিন্ন উপজেলার প্রায় দুই শতাধিক গণমাধ্যম কর্মীরা সকাল ১০ থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত কর্ম বিরতি ও মানববন্ধন করেন।

কর্মসূচি থেকে ইউএনও’র প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদ আলী মোল্লার অপসারণ চেয়ে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়া হয়। পরবর্তীতে আন্দোলন জেলা প্রশাসকের আশ্বস্তে প্রত্যাহার করা হয়।

এ বিষয়ে একাত্তর টেলিভিশনের নাটোর প্রতিনিধি ও সাংবাদিক নেতা বুলবুল আহমেদ বলেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদ আলী মোল্লা ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং অশালীন আচরণ করেছেন। তার অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত। বদলি কোন শাস্তি নয়। আমরা চাই তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা (জিপি) চালু করা হোক। তবে এই বদলির জন্য প্রশাসনকে সাধুবাদ জানাই। 

নাটোর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান বলেন, এটা নাটোরের গণমাধ্যম কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ফলাফল। 

সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, কিছুক্ষণ আগে ওই প্রশাসনিক কর্মকর্তার বদলির চিঠি হাতে পেয়েছি।

শাকিল/সাএ