
বাঙালির সার্বজনীন উৎসব পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রার এবারের আয়োজন থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে। চারুকলা অনুষদের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ অর্থাৎ ২৬তম ব্যাচে শিক্ষার্থীরা। রীতি অনুযায়ী তাদেরই এই আয়োজনে থাকার কথা। যার কারণে নববর্ষের শোভাযাত্রা প্রত্যাখ্যান চারুকলার ২৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৬ মার্চ) রাতে চারুকলার ২৬ তম ব্যাচের (চারুকলা ৭০) শিক্ষার্থীদের পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মূলত বৈশাখ প্রতিবছর আনুষ্ঠানিকভাবে নির্দিষ্ট ব্যাচের তত্ত্বাবধায়নে এবং সম্পূর্ণভাবে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের যৌথ প্রয়াসে আয়োজিত হয়ে থাকে। যে আয়োজনের সম্পূর্ণ অর্থ অনুষদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের শিল্পকর্ম বিক্রির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। চারুকলার রীতি অনুযায়ী যা এ বছর আমাদের ব্যাচের দায়িত্ব হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু এবারের আয়োজন একেবারেই চারুকলা অনুষদের পূর্বাপর রীতির ব্যতিক্রমীভাবে কোনোরকম শিক্ষার্থীদের সম্মতি ও সম্পৃক্ততা ছাড়া শুধু শিক্ষকদের সিদ্ধান্তে করা হচ্ছে, যা আমাদের বিশ্বাস ও ধারণার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। এ ছাড়া এবার একাডেমিকভাবে বিবিধ বৈশাখ আয়োজন করার এই সিদ্ধান্ত অনুষদে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, ছাত্র প্রতিনিধি কারও সঙ্গে কোনোরকম পূর্ব–আলোচনা ছাড়াই একটি নির্দিষ্ট ছাত্র-শিক্ষক গোষ্ঠীর সম্পৃক্ততায় খুবই অতর্কিতভাবে নেওয়া হয়েছে।’
শিক্ষার্থীরা বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করেন, ‘শোভাযাত্রার জন্য বানানো স্ট্রাকচারের ডিজাইন ও আইডিয়া (কাঠামোর নকশা ও ভাবনা) সম্পূর্ণ শিক্ষকদের দেওয়া, চারুকলার আপামর সাধারণ শিক্ষার্থী এর সঙ্গে কোনোভাবেই সংযুক্ত ও অবগত নন। শহিদ আবু সাঈদকে নিয়ে স্ট্রাকচার তৈরি সম্পর্কেও তারা অবগত ছিলেন না এবং কারও ব্যক্তিগত মতাদর্শে আঘাত দেওয়ার পক্ষেও তারা নন।’
এবারের বৈশাখ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বৈশাখ, বিবৃতিতে এমনটি উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা বলেছেন, ‘এ আয়োজনে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গের “চাটুকারিতাপূর্ণ” মনোভাবের কারণে আমরা শিক্ষকদের আয়োজন করা বৈশাখের আনুষ্ঠানিকতা ও শোভাযাত্রা সমর্থন করছি না।
এ বিষয়ে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম শেখ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শুরুর দিকে এই শোভাযাত্রা চারুকলার ছাত্র-শিক্ষক সবার অংশগ্রহণে আয়োজন করা হতো। তবে ২০০৫ সালের দিকে এসে এটি একটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ওপর দেওয়া হয়। তবে এটি যেহেতু একটি অ্যাকাডেমিক কাজের অংশ, তাই শুধু শিক্ষার্থীরা নন, বরং সুষ্ঠু জবাবদিহি নিশ্চিতের জন্য এবং বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে যেন কোনো ভাবমূর্তি নষ্ট না হয়, সে জন্য এ বছর ছাত্র–শিক্ষক সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই শোভাযাত্রা আয়োজন করা হচ্ছে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর