
আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার পাড়ায় পাড়ায় অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মাংস সমিতি।সমিতির প্রত্যেকটা সদস্যই সপ্তাহে ১শত বা ২শত টাকা করে জমা দেয়। কোন কোন জায়গায় এর বেশিও জমা দিয়ে থাকে। মাংসের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এ কৌশল অবলম্বন করেছে গ্রামের মানুষ।
অনেক পরিবারে আছে একবারে দুই থেকে তিন কেজি মাংস কেনার সামর্থ্য নেই। তাই সাপ্তাহিক ১বা ২শত টাকা করে জমা রেখে ঈদুল ফিতরের ৫ থেকে ১০ দিন আগে থেকে গরু জবাই শুরু করে।আর সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকায় ৮ থেকে ১০ কেজি পর্যন্ত মাংস পেয়ে থাকেন তারা। এ কারণে গ্রামের মানুষ এটাকে মাংস সমিতি বলেই ডেকে থাকে।
স্থানীয়রা জানান, একবারে টাকা গুছিয়ে ৮ থেকে ১০ কেজি মাংস কেনা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।তাই আমরা এই কৌশল অবলম্বন করেছি। তাছাড়া সপ্তাহে ১০০ টাকা রাখতে আমাদের কষ্ট হয় না।এ মাংস সমিতিটা এখন বিভিন্ন গ্রামের পাড়া মহল্লায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
উপজেলার দেবীপুর গ্রামের সারমিন জামান সাথী জানান, ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে তারা মাংস সমিতি করেছিলো। তাদের সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা করে জমা হয়েছিল। একটি মহিষ কিনে জবাই করা হয়েছে। প্রতিজন সাড়ে পাঁচ হাজার টাকায় ১০ কেজি করে মাংস পেয়েছে। সপ্তাহে ১০০ টাকা করে জমা দিতে কখনো বেগ পেতে হতো না।কিন্তু একবারে ৫০০০ থেকে ৬০০০ টাকার মাংস কেনা অনেকের পক্ষে আদৌ সম্ভব না।
নাছিম বলেন, ঈদুল ফিতরের পরের সপ্তাহ থেকে টাকা উত্তোলন শুরু হয়। এটা প্রায় এক বছরের হিসাব। যতজন সদস্য হবে প্রত্যেককে ১০০ টাকা করে দিতে হয়।ঈদুল ফিতরের পাঁচ থেকে দশ দিন আগে নিজের পছন্দমতো মহিষ বা গরু গুলো জবেহ করে মাংস ভাগ করে নিই। এতে যেমন সবাই সুস্থ গরুর মাংস পাচ্ছে অপরদিকে তাদের একবারে পাঁচ থেকে ৬ হাজার টাকা গোছানো কষ্টের এবং সেটা হয় না। বর্তমানে এখানে গরুর মাংস সাড়ে ৭৫০ টাকা কেজি, মহিষের মাংস ৯শ টাকা কেজি এবং খাসির মাংস এক হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রয় হয়। সে ক্ষেত্রে সমিতির মাধ্যমে যে গরু ক্রয় করি সেটার মাংস ৬ থেকে ৬ 'শ৫০ কেজি পড়ে।
ঝোড়াঘাট গ্রামের মোতালেব হোসেন বলেন,তারা সাড়ে বারো হাজার টাকা করে সমিতি করেছিল। মাংস পেয়েছে ১৯ কেজি এবং ভুঁড়ি পেয়েছি ৩ কেজি।উপজেলার বিভিন্ন গ্রামেই দিন দিন এই মাংস সমিতি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
উপজেলার হাড়াভাঙ্গা বাজারের মাংস ব্যবসায়ী বকুল হোসেন বলেন, ঈদুল ফিতরে যে মাংস বিক্রয়ের টার্গেট নিয়েছিল সে টার্গেট হয়তো পূর্ণ হবে না। কারণ অধিকাংশ পাড়া মহল্লায় মাংস সমিতি গড়ে উঠেছে। আর যদি মাংস বিক্রয় করতে না পারি তাহলে লোকসান গুনতে হবে। কারণ ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে আলাদা বাজেট করি গরু কেনার জন্য।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর