• ঢাকা
  • ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১১ মিনিট পূর্বে
রাশেদুল ইসলাম রাশেদ
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৭ মার্চ, ২০২৫, ০২:৪৯ দুপুর
bd24live style=

‘তুই সাংবাদিক তো কি হইছে, তোকে স্যান্ডেল খুলে মারবো’

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের প্রয়াত আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের শ্যালিকা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সৈয়দা খুরশিদ জাহান স্মৃতির বোন ফাতেমা আক্তার মিলি। সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের সাহাবাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত তিনি। তার বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন, সংগ্রাম করে আসছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। 

তার বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০১৪ সালে তাঁর ভগ্নিপতি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এমপি হওয়ার পর ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের জিম্মি করে প্রধান শিক্ষক হিসেবে তার শ্যালিকা ফাতেমা আক্তারকে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসান। এরপর থেকেই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন এই নারী প্রধান শিক্ষক। সেই সাথে বিদ্যালয়ে একক আধিপত্য বিস্তার শুরু করেন। স্বামীর বড় ভাইকে সভাপতি বানিয়ে নিয়োগের নামে কোটি টাকা পকেটস্থ করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। 

বিতর্কিত প্রধান শিক্ষক ফাতেমা আক্তার মিলি ওই প্রতিষ্ঠানে ২০১৫ সালে যোগদান করেন। ১১ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে আর্থিক বাণিজ্য ও ৯ বছর ধরে টিউশন ফি আত্মসাৎ করে আসছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও উৎকোচ হাতে না পেলে বেতন-ভাতায় সাক্ষর না করাসহ অবসরে যাওয়া কর্মচারীর কাছে টাকা দাবি করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া বিদ্যালয়টির একজন নৈশপ্রহরী আব্দুর রহমান জীবিত থাকা অবস্থায় জাতীয় পরিচয় পত্রে বয়সের ভুল ধরে বেতন বন্ধ করে দেন এবং সংশোধনীর পরও (২০২১ সালে মারা যান তিনি) বিনা কারণে বেতন এবং মৃত্যু পরবর্তীকালীন সরকারি বিধি অনুযায়ী ভাতা উত্তোলনে সহযোগিতা না করার অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষক ফাতেমা আক্তার মিলির বিরুদ্ধে। এসব বিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেছেন ওই প্রতিষ্ঠানের ভুক্তভোগী  শিক্ষক-কর্মচারী ও ভুক্তভোগী। 

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের পর লাপাত্তা ছিলেন এই নারী প্রধান শিক্ষক। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকে ১৬ ডিসেম্বর, ২১ শে ফেব্রুয়ারি কোন জাতীয় দিবসেই তিনি পতাকা উত্তোলন করেননি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। গণমাধ্যমকর্মী আসার খবর পেয়ে ২৬ মার্চ বুধবার স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হাজির হন তিনি। সেখানে দেশ রুপান্তর পত্রিকার প্রতিনিধি শেখ মামুনুর রশিদসহ কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী উপস্থিত হয়ে প্রধান শিক্ষক ফাতেমা আক্তার মিলির কাছে বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তাদের উপর চড়াও হন তিনি। এসময় প্রধান শিক্ষক ফাতেমা আক্তার মিলি সাংবাদিককে জুতা পেটা করাসহ বিভিন্ন অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন।

এসময় ভিডিওতে তাকে আরও বলতে শোনা যায়, 'তুই সাংবাদিক এখানে কেন? তোকে পায়ের স্যান্ডেল দিয়ে পেটাবো। তোকে আরও অপমান করবো।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক শেখ মামুনুর রসিদ জানান, নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে এই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন দপ্তরে দেওয়া বিদ্যালয়টির শিক্ষক ও ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর দেওয়া অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নিতে গেলে সাংবাদিকদের উপর চড়াও হন তিনি। এক পর্যায়ে গালিগালাজসহ পায়ের স্যান্ডেল খুলে মারা পিট করার হুমকিও দেন তিনি। আমি এ ঘটনায় সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করবো। 

অভিযোগ আছে, প্রধান শিক্ষক ফাতেমা আক্তার মিলি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। তাঁর ভগ্নিপতি আলোচিত আওয়ামী লীগের এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন মারা যাওয়ার আগে সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ করান। এরপর থেকে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারসহ নানাভাবে শিক্ষক কর্মচারীর উপর একচেটিয়া শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর বিরুদ্ধে কথা বললে হামলা-মামলাসহ নানা হয়রানির শিকার হতে হয়। এমপি লিটনের মৃত্যু হলে ফাতেমা তার বোন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সৈয়দা খুরশিদ জাহান স্মৃতির দাপটে একক সিদ্ধান্তে চালাতে থাকেন বিদ্যালয়। নানা সময়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে অশোভন আচরণ করতেন তিনি। তার এমন আচরণ আর কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য থেকে বাদ যায়নি স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকেরাও। বিগত দিনে প্রধান শিক্ষকের এমন আচরণ, অনিয়ম- দুনীতিসহ নানা অভিযোগে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনও করেন এলাকাবাসী। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় এখনো বেপরোয়া আওয়ামী লীগের আশীর্বাদপুষ্ট এই প্রধান শিক্ষক ফাতেমা। এলাকাবাসীর প্রশ্ন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পতন হলেও এই দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের খুঁটির জোর কোথায়? 

এ বিষয়ে স্থানীয় অভিভাবক বাবলু মন্ডল বলেন, একজন সাংবাদিকের সাথে এত নোংরা ভাষায় কথা বলাটা দুঃখজনক। আমি সামনে থেকে যা দেখেছি, তাতে মনে হয়েছে,  উনি কোনোভাবেই শিক্ষক হওয়ার যোগ্য না।

নুরুজ্জামান নামে আরেক অভিভাবক বলেন, এই প্রধান শিক্ষকের প্রতিষ্ঠানে আমার বাবা  নৈশপ্রহরী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চাকরি শেষের দিকে এলে এনআইডি কার্ডে বয়সের ভুল ধরে বেতন বন্ধ করে দেন। এছাড়া বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় তাকে মৃত দেখিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়। আমার বাবা আব্দুর রহমান মারা গেছেন আজ চার বছর হলো, অথচ এখনো তিনি বেতন উত্তোলনে কোন ব্যবস্থাই নেননি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও সুরাহা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, উনি শিক্ষক হয়ে সাংবাদিকদের তুই তোকারি করে কথা বলার সাহস পান কীভাবে? সাংবাদিক স্কুল থেকে বের না হলে পায়ের স্যান্ডেল খুলে লাঞ্ছিত করার হুমকি দেয় কার দাপটে। আওয়ামী লীগের কর্মী হয়ে এখনো প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। আমি মনে করি সাংবাদিকদের সাথে যে আচরণ উনি করেছেন তাতে তাঁর বিচার হওয়া উচিত।

এ ব্যাপার জানতে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ফাতেমা আক্তার মিলির সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করে কেটে দেন। তাই তার মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। 

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, গণমাধ্যম কর্মীর সাথে এমন আচরণ একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। অবশ্যই তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে ব্যাখ্যা চাইবো। আর তার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আছে সেগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে'।

শাকিল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com