
নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাবেক প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন সহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত অন্যরা হলেন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক ভিসি ড. মো. আব্দুস সাত্তার ও যবিপ্রবির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুর রউফ। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দাখিল করা চার্জশিটের উপর শুনানি শেষে এই আদেশ দেন সিনিয়র স্পেশাল জজ (জেলা ও দায়রা জজ) শেখ নাজমুল আলম। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাড. মো. সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২১ আগস্ট দুদক যশোরের তৎকালীন উপ-পরিচালক মো. আল আমিন বাদী হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৪০৯/১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়। মামলার তদন্ত শেষে উল্লিখিতদের অভিযুক্ত করে সম্প্রতি আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
ড. আব্দুস সাত্তার যবিপ্রবির ভিসি ও প্রধান নির্বাহী থাকাকালীন ইবির সাবেক প্রোভিসি ড. কামাল উদ্দীনের সঙ্গে পরস্পর যোগসাজশে আব্দুর রউফকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার (গ্রেড-১) (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে অবৈধভাবে নিয়োগ দেন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়। এজাহারে বলা হয়, ‘২০০৯ সালে যবিপ্রবি’র নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদের জন্য আবেদন করেন আব্দুর রউফ। ওই নিয়োগের জন্য গঠিত ৩ সদস্যের বাছাই বোর্ডের সভাপতি ছিলেন ড. আব্দুস সাত্তার।
এছাড়া বাছাই বোর্ডে সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যশোর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত খালেদুর রহমান টিটো এবং বিশেষজ্ঞ সদস্য ছিলেন ড. কামাল উদ্দিন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত শর্তানুযায়ী আব্দুর রউফের কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও বাছাই বোর্ড অবৈধভাবে তাকে ওই পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে।
পরবর্তীতে বিষয়টি যবিপ্রবির চতুর্থ রিজেন্ট বোর্ড সভায় উপস্থাপিত হলে অভিজ্ঞতার ঘাটতি থাকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তাকে সেকশন অফিসার (গ্রেড-১, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়। রিজেন্ট বোর্ড সভাপতি হিসেবে ড. আব্দুস সাত্তার উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই তাকে নিয়োগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
আব্দুর রউফ সেকশন অফিসার পদে অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে কর্মরত থাকা অবস্থায় সিলেকশন গ্রেডসহ বিভিন্ন সুবিধা গ্রহণ করে ২০১৪ সালে সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে এবং ২০২১ সালে উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন এবং বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন।
অবৈধ নিয়োগের মাধ্যমে ড. আব্দুস সাত্তার ও ড. কামাল উদ্দীন আব্দুর রউফকে ২০০৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত বেতন-ভাতা বাবদ মোট ৬১ লাখ ৩১ হাজার ৭৩২ টাকা সরকারি কোষাগার থেকে উত্তোলন বা গ্রহণপূর্বক আত্মসাৎ করার সুযোগ করে দিয়ে সরকারের উক্ত পরিমাণ টাকার ক্ষতিসাধন করেছেন মর্মে এজাহারের উল্লেখ করা হয়।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর