
চার দিনের সরকারি সফর শেষে চীন থেকে দেশে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শনিবার (২৯ মার্চ) রাত ৮টা ১০ মিনিটে তাকে বহনকারী ফ্লাইটটি রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
এর আগে বিকেল ৩টায় চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের বিশেষ একটি ফ্লাইটে বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন প্রধান উপদেষ্টা।
চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের প্রধান প্রটোকল অফিসার এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী মন্ত্রী হং লেই বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার ঐতিহাসিক চার দিনের সরকারি চীন সফরের সমাপ্তিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিদায় জানান।
চার দিনের এ সফরে প্রধান উপদেষ্টা চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন।
এসময় বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার বিষয়ে একটি চুক্তি এবং আটটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
এ ছাড়া তিনি চীনের হাইনানে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে ভাষণ দেন। সেখানে চীনের ব্যবসায়িক প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন।
চীনের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংকের (এক্সিম ব্যাংক) চেয়ারম্যান চেন হুয়াইউর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ড. ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। শনিবার সকালে তাকে সম্মানসূচক এ ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এরপর শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস।
ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত মিয়ানামারে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দিতে ও উদ্ধার তৎপরতা চালাতে রোববার (৩০ মার্চ) যাচ্ছেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা।
শনিবার (২৯ মার্চ) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির প্রেক্ষিতে জরুরি ভিত্তিতে ওষুধ, ত্রাণসামগ্রী, উদ্ধার এবং মেডিকেল সহায়তা প্রদানের জন্য বিশেষ বিমানে রোববার (৩০ মার্চ) মিয়ানমারে যাচ্ছেন বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারী দল।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানার পর ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা পুরোপুরি বোঝা যাচ্ছে না এখনও।
শনিবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যা পর্যন্ত পাওয়া হিসাবে দেশটিতে নিহতের সংখ্যা ১৬শ ছাড়িয়ে গেছে। আহত মানুষের সংখ্যা ৩ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছে অবস্থিত মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়তেই ১৫ শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধসে পড়া ঘরবাড়ির নিচে চাপা পড়া মানুষের খোঁজে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান চলছে অনেক জায়গায়।
এতে আঘাতপ্রাপ্ত হয় প্রতিবেশি থাইল্যান্ডও। শুধু তাই নয় ভূমিকম্পের প্রভাব অনুভূত হয়েছে পাশ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশ, চীন এবং ভিয়েতনামেও। বেশিরভাগ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে এবং এটি ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের সবচেয়ে কাছের শহর।
ভূমিকম্প এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, পশ্চিমে ভারত এবং পূর্বে চীন, পাশাপাশি কম্বোডিয়া এবং লাওসের ভবনগুলোও কেঁপে ওঠে। মিয়ানমার এবং থাইল্যান্ডে উদ্ধারকর্মীরা এখনও জীবিতদের খুঁজে বের করার জন্য লড়াই করছেন। তারা অনেকে খালি হাতে ধ্বংসস্তুপ খুঁড়ে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন।
এদিকে জান্তা সরকারের আন্তর্জাতিক সহায়তার উদাত্ত আহ্বানের পর সহায়তা আসতে শুরু করেছে মিয়ানমারে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহায়তা পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছে। ভারত এরইমধ্যে ত্রাণ পাঠিয়েছে এবং চীনা উদ্ধারকারী দল পৌঁছেছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর