
কুমিল্লায় ঈদের প্রাক্কালে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি অভিযোগ করেছেন— এই বিষয়ে কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি)কে একাধিকবার ফোন করার পরও তিনি ফোন ধরেননি। রিজভী অভিযোগ করেন, পুলিশ খোলামেলাভাবে জানাচ্ছে না কেন এই গ্রেফতার অভিযান চালানো হচ্ছে এবং কেন বিএনপি নেতাকর্মীদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
রোববার (৩০ মার্চ) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদল আয়োজিত গুম-খুনের শিকার পরিবারের সদস্যদের মাঝে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে এই অভিযোগ তোলেন রিজভী। তিনি বলেন, কুমিল্লার মুরাদনগরে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতার অভিযান চালানো হচ্ছে, তবে কোনো আইনানুগ কারণ দেখানো হচ্ছে না। তারা কেন গ্রেফতার হচ্ছেন, সেটি স্পষ্ট করে জানানো হচ্ছে না।’
এদিকে, রিজভী জানান যে তিনি কুমিল্লার এসপি অফিসে ফোন করার পরও কোনো সাড়া পাননি। তিনি আরও বলেন, ‘আমি চার-পাঁচবার ফোন করেছি, কিন্তু এসপি ফোন ধরেননি। এমনকি তিনি কোনো উত্তরও দেননি।’ রিজভী আরও বলেন, ‘এটা এমন একটি পরিস্থিতি, যেখানে বিএনপির নেতাকর্মীরা সরকারের নির্যাতন, গুম, খুন সহ্য করছে, তাদের ওপর অন্যায়ভাবে হামলা হচ্ছে। যদি এই ধরনের আচরণ চলতে থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে দেশের অবস্থা কী হবে, তা আমাদের ভাবতে হবে।’
রিজভী সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ‘বর্তমান প্রশাসন অনেকটা বর্তমান সরকারের সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। বিএনপির বিরোধী মতাদর্শের কর্মকর্তাদের ব্যাপকভাবে বদলি করা হচ্ছে এবং তাদের প্রতি অস্বাভাবিক আচরণ করা হচ্ছে।’ তিনি আরও জানান, ‘সরকারের প্রতি আনুগত্য না দেখানো কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এখন সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে, যা রাষ্ট্রীয় দুর্বৃত্তায়নের একটি উদাহরণ।’
তিনি বলেছিলেন, ‘যতই পুলিশ গ্রেফতার অভিযান চালাক, ততই আমরা দেখছি, একদিকে প্রশাসন সরকারের সঙ্গে মিলে কাজ করছে, আর অন্যদিকে কিছু কর্মকর্তাকে একে অপরকে অপদস্থ করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।’ রিজভী আরও মন্তব্য করেন, ‘এটা শুধু বিএনপির বিষয় নয়, এটি পুরো দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যদি প্রশাসন এমন আচরণ করে, তাহলে দেশ চলবে কীভাবে?’
রিজভী এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন তোলেন, ‘কী কারণে এই গ্রেফতার অভিযান চালানো হচ্ছে? এতে কি রাষ্ট্রীয় কাঠামোর ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে না?’
এ সময় বিএনপির নেতা তার বক্তব্যে সরকারকে কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ‘এই ধরনের ব্যবস্থা রাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে একটা বড় ধরনের আক্রমণ। জনগণের স্বাধীনতা এবং অধিকার রক্ষায় তারা বরাবরই অবিচল ছিল, কিন্তু বর্তমানে এই পরিস্থিতি পাল্টে গেছে।’
প্রশাসনকে সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘যদি এভাবে বিরোধী দল দমন করার চেষ্টা করা হয়, তবে এটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য বিপজ্জনক হবে।’
এ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের আহ্বায়ক শামীম মাহমুদ, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সহ-সভাপতি ডা. আব্দুল আওয়াল।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর