
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত ময়মনসিংহের গৌরীপুরের ইয়াসিন মিয়া শেখের পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার। শনিবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে নিহত ইয়াসিনের বাড়ি, উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের মরিচালি গ্রামে গিয়ে তাঁর শোকাহত পরিবারের সার্বিক খোঁজখবর নেন এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন।
এ সময় মোতাহার হোসেন তালুকদার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ইয়াসিনের মায়ের হাতে আর্থিক অনুদান তুলে দেন এবং ইয়াসিনের পরিবারকে একটি ঘর নির্মাণ করে দেয়ার ঘোষণা দেন।
ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার আরও বলেন, ইয়াসিন আমাদের ছাত্রদলের ত্যাগী কর্মী ছিল। সে আমাদের সাথে দলের সকল কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতো। ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় একটি কোম্পানিতে চাকরির জন্য সে রাশিয়ায় পাড়ি জমায়। কয়েক মাস চাকরির পর রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে আমাদের নেতা তারেক রহমানের নির্দেশে নেতাকর্মীদের নিয়ে আমরা তার বাড়িতে এসে পরিবারের সার্বিক খোঁজখবর নিয়েছি, একটি ঘর নির্মাণ করে দেয়া হবে এবং আর্থিক অনুদান দিয়েছি। গৌরীপুর উপজেলা বিএনপি’র নেতৃবৃন্দকে সব সময় ইয়াসিনের পরিবারের খোঁজখবর রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন। আমাদের দাবি, ইয়াসিনের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকার সার্বিক সহযোগিতা করবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য এডভোকেট নূরুল হক, হাফেজ আজিজুল হক, আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ, সুজিত দাস, হাবিবুল ইসলাম খান শহীদ, এসএম দুলাল, ময়মনসিংহ উত্তর জেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি তানজিন চৌধুরী লিলি, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বাবুল, স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন রুমন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম কামাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম প্রত্যয়, জাতীয়তাবাদী মহিলা দল নেত্রী আফরোজা আক্তার সোমা, ময়মনসিংহ উত্তর জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান সোহেল ও এডভোকেট আবু জাফর রাশেদ মিলন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আল আমিন, সদস্য সচিব আব্দুল কাদির, সাবেক ছাত্রদল নেতা সাইফুল বাসির সোহেল প্রমুখ।
উল্লেখ্য যে, উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের মরিচালি গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে ইয়াসিন মিয়া শেখ গত ২২ ডিসেম্বর চুক্তিভিত্তিক যোদ্ধা হিসেবে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। গত ২৭ মার্চ ইয়াসিন নিহত হলেও স্বজনেরা জানতে পারেন ঈদের পরদিন ১ এপ্রিল। রাশিয়ায় থাকা ইয়াসিনের পরিচিতজনরা মুঠোফোনে ইয়াসিনের বড় ভাই রুহুল আমিনকে মৃত্যুর খবর দেন।
ইয়াসিন মিয়া শেখের বড় ভাই রুহুল আমিন শেখ বলেন, ধার-দেনা ও জমি বিক্রি করে ১৫/১৬ লাখ খরচ করে ইয়াসিনকে রাশিয়া পাঠাই। যাওয়ার পর দেড় লাখ টাকা পাঠিয়েছিল ভাই। এর মধ্যেই তার মৃত্যুর সংবাদ পেলাম। একদিকে ভাই হারানোর শোক, অন্যদিকে ঋণের চাপ। কোথায় যাবে, কী করবো ভেবে উঠতে পারছি না। তবে ভাইয়ের মরদেহটা যেন ফেরত পাই, এটাই দাবি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর