
রাজধানীর শাহবাগে ফুলের মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের পর ১ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ ইউনিট। এদিকে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে ওই আগ্নিকাণ্ডে ৫ জন দগ্ধ হয়েছেন।
তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার (৫ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে শাহবাগ ফুলের মার্কেটে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাত ১১ টা ৫৩ মিনিটে ফায়ার সার্ভিস খবর পেলে তারা ১ ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক কাজী নাজমুজ্জামান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, রাত ১১ টা ৫৩ মিনিটে আমরা সংবাদ পাই শাহবাগে ফুলের মার্কেটে আগুন লাগে, সঙ্গে সঙ্গে পলাশী ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থেকে দুটো ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে কাজ শুরু করে।
পানির স্বল্পতার কারণে পরবর্তীতে হেডকোয়ার্টার থেকে আরও তিনটি ইউনিট এসে যোগ দিলে, আমরা ১ ঘণ্টার মধ্যে আগুন সম্পূর্ণভাবে নির্বাপণ করি। ক্ষতির বিষয়টি এই মুহুর্তে বলা সম্ভব না, কেননা ফুলের দোকানদার যারা রয়েছে তাদের সঙ্গে কথা হয়নি। তাদের সঙ্গে কথা বলার পর ক্ষতির পরিমাণ বলা যাবে।
আগুনের সূত্রপাত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগুনের সূত্রোত কিভাবে হয়েছে, সেটি সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা ধারণা করছি, বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে এই আগুনটি লাগতে পারে। বৈদ্যুতিক সংযোগের তারগুলো এলোমেলো অবস্থায় ছিল; এছাড়া বেলুন ফোলানোর জন্য হিলিয়াম বা হাইড্রোজেন গ্যাসের সিলিন্ডার ছিল এবং গ্যাস বের হচ্ছিল, আমরা ফোমের সাহায্যে আগুনটি নির্বাপণ করি, যার ফলে কোন বিস্ফোরণ হয়নি।
সিলিন্ডারগুলো ঠাণ্ডা না হওয়া পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের শিকার হওয়া স্থানে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না উল্লখ করে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সিলিন্ডারগুলো ঠাণ্ডা হওয়া না পর্যন্ত এই জায়গাতে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
কেননা সিলিন্ডারে হাইড্রোজেন বা হিলিয়াম গ্যাস ছিল। এর মধ্যে হাইড্রোজেন গ্যাস অত্যন্ত বিপদজনক, বিশেষ করে কম দাম হওয়াতে হিলিয়ামের পরিবর্তে হাইড্রোজেন গ্যাস সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়, সেটি পরীক্ষা নিরীক্ষণের পর বলা যাবে। এছাড়া এখন পর্যন্ত আহত ও নিহতের কোন সংবাদ পাওয়া যায়নি।
যদিও ঢাকা মেডিকেল বার্ন অ্যান্ড সার্জারী ইউনিট সূত্রে জানা গেছে পাঁচজন দগ্ধ হয়েছে। দগ্ধরা হলেন— রিয়াজুল ইসলাম (৫৫), মো. শাওন (২৫), মো. ফয়েজ (৩০), মো. কালু মিয়া (৩৫) ও মো. শামীম (৪৫)।
দগ্ধরা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তারা শাহবাগ ফুলের মার্কেট সংলগ্ন একটি টিনসেড ঘরে গ্যাস সিলিন্ডারের মাধ্যমে বেলুনে গ্যাস ভরে বিক্রি করে। রাতে তারা পাঁচজন সিলিন্ডার থেকে বেলুনে গ্যাস ভরার কাজ করছিল। এ সময় হঠাৎ করে আগুন ধরে যায়। এতে তারা দগ্ধ হয়। পরে তারা নিজেরাই রিকশা যোগে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চলে যায়।
এদিকে, ঢাকা মেডিকেল বার্ন অ্যান্ড সার্জারী ইউনিটের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আশিক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শাহবাগ থেকে পাঁচজন দগ্ধ হয়ে বার্ন ইউনিটে এসেছে।
এদের মধ্যে রিয়াজুলের ১০ শতাংশ, শাওনের ১৬ শতাংশ, ফয়েজের ১৪ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাদেরকে ভর্তি করা হয়েছে। কালু ও শামীমের সামান্য ঝলসে গেছে। তাদেরকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর