
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ২নং মধুহাটি ইউনিয়নের চোরকোল গ্রামের পূর্বপাড়ায় রাস্তার পাশের অর্ধ লক্ষ টাকা মূল্যের সরকারি গাছ কেটে বিক্রি করে দিয়েছে মামুন মল্লিক (৪০) নামে এক স্কুল শিক্ষক। তিনি চোরকোল গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, চোরকোল গ্রামে এলজিইডি'র (স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর) অধীনে সড়কের পাশে ১টি বড় কড়াই গাছ কেটে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সদর উপজেলার ৬নং গান্না ইউনিয়নের ১৬নং চন্ডীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মামুন সংশ্লিষ্ট বনবিভাগ ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে গাছ কাটার কোন অনুমতি না নিয়েই সরকারি গাছ কেটেছেন। স্থানীয়রা বাঁধা দিলেও তাদের কথায় কর্ণপাত না করে গাছ কেটে ব্যাপারীর কাছে বিক্রি করে দেন তিনি।
গ্রামবাসীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে সরকারি অফিস আদালত বন্ধ থাকায় এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে সরকারি কড়াই গাছটি তিনি কেটে বিক্রি করে দেন। গাছটির আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় অর্ধ লাখ টাকা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, বন বিভাগের অনুমতি ছাড়াই মামুন সড়কের গাছ কেটে বিক্রি করছেন। সম্প্রতি শিক্ষক মামুন প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক একই গ্রামের গোলজার হোসেনের পৈত্রিক জমি থেকে ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি কড়াই গাছ কেটে নিয়েছেন। তার ভয়ে গাছের মালিক কোন অভিযোগ দেয়ার সাহস পায়নি বলে জানা যায়। সঙ্গত কারণেই সচেতন মহলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে- একজন শিক্ষক হয়ে সরকারি রাস্তার গাছ কিংবা পেশীশক্তির বলে অন্যের জমি থেকে গাছ কাটার বিধান কোন আইনে আছে? বিষয়টি স্থানীয় সরকার, ভূমি ও প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তর তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন বলে এলাকাবাসীর প্রত্যাশা। প্রকাশ্যে সরকারি গাছ কাটার বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় বাজার গোপালপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মাজহারুল ইসলাম জানান, ৪ এপ্রিল শুক্রবার সকালে এসিল্যান্ড স্যারের মাধ্যমে জানতে পারি, রাস্তার পাশ থেকে সরকারি গাছ কেটে নিচ্ছেন চোরকোল গ্রামের মামুন নামের এক ব্যক্তি। খবর পেয়ে ফাঁড়ি থেকে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে রাস্তার গাছ কাটার ব্যাপারে জানতে চাইলে মামুন আমার কোনো কথার পাত্তা না দিয়ে অসৌজন্যমূলক
আচরণ শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি আমার উদ্দেশ্যে বলেন," আপনি কি সেই আগের পুলিশ! আপনি কার নির্দেশে এখানে এসেছেন? প্রত্যুত্তরে আমি তাকে বলি, এসিল্যান্ড স্যারের নির্দেশে এখানে এসেছি। তখন মামুন উচ্চস্বরে বলেন, কীসের এসিল্যান্ড? আপনি এসিল্যান্ডকে ফোন দেন, আমি তার সাথে কথা বলবো।
এ ব্যাপারে মামুনের কাছে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি এক সাংবাদিকের নিকটাত্মীয় পরিচয়ে দাম্ভিকতার সাথে বলেন, আপনি কোন সাংবাদিক! আমি পৈত্রিক জায়গা থেকে গাছ কাটছি। গাছগুলো সরকারি রাস্তার জমিতে নয়, আমার নিজের জমির গাছ। আপনাকে কেউ বিভ্রান্ত করার জন্য তথ্য দিয়েছে বলে তিনি মুঠোফোনটি কেটে দেন।
এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল কুমার দাস বলেন, সরকারি গাছ কেটে নেওয়া কিংবা বিক্রি করার সুযোগ নেই। তিনি তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর