
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে চোরাশিকারিদের হাতে একটি বন্য হরিণ শিকার ও জবাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ এপ্রিল সকালে হারবাংয়ের নলবনিয়া বনের ভেতর থেকে একটি হরিণ শিকার করে পাঁচজন ব্যক্তি। পরে সেটিকে আব্দুস সালাম নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে নিয়ে গিয়ে জবাই করা হয়।
বন বিভাগ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, ওই পাঁচজনের মধ্যে রয়েছেন—চরপাড়া এলাকার মো. সাজ্জাদ ও মো. রিদুয়ান, পন্ডিত্তা মুরা এলাকার ছোটন, নাপিতছিতা এলাকার আলমগীর ও লালব্রিজ এলাকার মো. মিরান। তারা দাবি করেন, ধানক্ষেত পাহারা দিতে গিয়ে সকালে নলবনিয়া পাহাড়ে একটি হরিণ দেখতে পান। হরিণটি দৌড়ে গিয়ে বিপ্লব শীল নামের এক সেলুন মালিকের দোকানে ঢুকে পড়লে সাঁটার নামিয়ে ধরে ফেলে তারা। পরে হরিণটিকে মিরানের বাড়িতে নিয়ে জবাই করা হয়।
বিষয়টি জানতে পেরে হারবাং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের বিট কর্মকর্তা কবির আহমেদের নির্দেশে চারজন বনরক্ষী ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হরিণ জবাইয়ের সত্যতা পাওয়ার পরও বনরক্ষীরা কোনো মাংস, চামড়া কিংবা মাথা জব্দ না করে রহস্যজনকভাবে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। ঘটনার খবর সাংবাদিকদের মাধ্যমে চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের রেঞ্জ কর্মকর্তা বাহার উদ্দিনের কাছে পৌঁছালে তিনি পুনরায় বিট কর্মকর্তা কবির আহমেদকে ঘটনাস্থলে পাঠান। এরপর হরিণ জবাইয়ের স্থল থেকে রক্তমাখা মাটি ও ব্যবহৃত কিছু সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এই ঘটনায় বনবিভাগের নিষ্ক্রিয়তা ও গাফিলতি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে অভিযোগ করেছেন, প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করে নিরীহ ব্যক্তিদের নাম মামলায় যুক্ত করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
ঘটনার বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বিট কর্মকর্তা কবির আহমেদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে, চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের রেঞ্জ কর্মকর্তা বাহার উদ্দিন বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে এবং তা ধাপে ধাপে সম্পন্ন করা হবে। নিরপরাধ কেউ হয়রানির শিকার হবে না। প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে বন আইনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় পরিবেশ সচেতন নাগরিকরা এ ঘটনায় বন বিভাগের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন, যাতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন বাস্তবেই কার্যকর হয় এবং এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ সম্ভব হয়।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর