
কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন উপকূলবর্তী বঙ্গোপসাগর থেকে দুইটি মাছ ধরার ট্রলারসহ ১১ জন জেলেকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মি (এএ)। স্থানীয় ট্রলার মালিক ও জেলে সম্প্রদায়ের দাবি, মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশ জলসীমানার ভেতরেই এই ঘটনা ঘটে।
টেকনাফ কায়ুকখালী বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, “আমার নিজের ট্রলারও অপহৃতদের তালিকায় রয়েছে। এ ছাড়া আরও দুটি মাছ ধরার নৌকার খোঁজ মিলছে না। ধারণা করা হচ্ছে, সেগুলোও অপহরণ করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ জলসীমার ভেতর জেলেরা যখন মাছ ধরছিল, ঠিক তখনই হঠাৎ করে মিয়ানমারের আরাকান আর্মির সশস্ত্র সদস্যরা ঢুকে পড়ে। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তারা ট্রলার ও জেলেদের তুলে নিয়ে যায়। এমন ঘটনায় উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।”
শাহপরীর দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবদুল মান্নান জানান, “আমাদের এলাকার কিছু নৌকাও আরাকান আর্মির ধাওয়া খেয়েছে বলে শুনেছি। তবে অপহৃত ট্রলারগুলো কোন ঘাটের তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”
টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান বলেন, “ঘটনার বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এদিকে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, “ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে অপহৃত জেলেদের উদ্ধারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
অঞ্চলজুড়ে জেলেদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে। স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী নুরুল কায়েছ জানান, “প্রায় সময়ই এমন অপহরণের ঘটনা ঘটছে। এতে আমরা ভীষণ দুশ্চিন্তায় আছি। এই সমস্যা নিরসন না হলে জেলেরা আর সাগরে নামবে না।”
উল্লেখ্য, এর আগেও একাধিকবার জেলেদের অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। অনেককে দীর্ঘদিন আটকে রাখার পর মুক্তিপণের বিনিময়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে। শুধু জেলেই নয়, আরাকান আর্মি পণ্যবাহী বোটও মাঝ সমুদ্রে আটকে রেখে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায় করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে উপকূলীয় এলাকার জেলে ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর