
রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলাধীন সাতবাড়ীয়া এলাকায় চাঞ্চল্যকর কুদ্দুস আলী মন্ডল (৪২) হত্যা মামলায় স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক মো. রিয়াজুল সেখ ওরফে তোজামকে বাংলাদেশ দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার অপরাহ্ণে রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ মোসাম্মৎ জাকিয়া পারভিন এ রায় ও দণ্ডাদেশ প্রদান করেন। একই সাথে আদালত এই মামলার চার্জশিট ভুক্ত অপর ২ আসামি মৃত কুদ্দুসের স্ত্রী বন্যা খাতুন ও প্রতিবেশী মো. আলাউদ্দীন সেখ এর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের দু’জনকে বেকসুর খালাস প্রদান করেছে।
মামলা সূত্রে প্রকাশ, কুদ্দুস বিভিন্ন ফাস্ট ফুডের দোকানে পানি ও মালামাল সরবরাহ করত। গত ২০১৩ সালে ২৯ জানুয়ারি সকাল ৯ টার দিকে সে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর ওই দিন আর বাড়ি ফিরে না আসায় কুদ্দুসের মা সহ অন্যান্যরা খোজাখুজি করে। পরে একইদিন রাত ২ টার সময় পাংশার যশাই ইউনিয়নের ধোপাকেল্লা গ্রামের ফাঁকা মাঠের মধ্যে তার রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। লাশের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন থেকে পরিবারের সদস্যরা এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে নিশ্চিত হয়। এ ঘটনায় মৃতক কুদ্দুসের মা মোছা. রাবেয়া খাতুন বাদী হয়ে পাংশা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এতে কুদ্দুসের স্ত্রী বন্যা খাতুন ও তার পরকীয়া প্রেমিক মো. রেজাউল শেখ ওরফে রিয়াজুল সেখ তোজাম জড়িত থাকতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে কুদ্দুসের স্ত্রী বন্যা খাতুন ও তার পরকীয়া প্রেমিক মো. রেজাউল সেখ ওরফে রিয়াজুল সেখ তোজাম এবং প্রতিবেশী মো. আলাউদ্দিন সেখকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। আদালত উল্লিখিত মামলায় ২৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে।
এ মামলায় স্বাক্ষীদের প্রদত্ত বক্তব্য ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের সাথে রিয়াজুল সেখ তোজাম (৫২) এর সম্পৃক্ততার বিষয়টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তোজামকে উল্লিখিত সাজা প্রদান করেন। একই সাথে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় মৃতকের স্ত্রী বন্যা খাতুন (৪০) ও প্রতিবেশী মো. আলাউদ্দিন সেখ (৭০) কে বে কসুর খালাস প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি ৩ জনই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
রায়ের বিষয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রাজবাড়ীর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ্যাড. আব্দুর রাজ্জাক-২ সন্তোষ প্রকাশ করেন। তবে আসামি পক্ষে নিয়োজিত আইনজীবী মোস্তফা কবীর রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর