
গাজা ও রাফায় ইসরায়েলের বর্বরোচিত গণহত্যার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে মুখে কালো কাপড় বেঁধে কর্মসূচি পালন করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শাখা ছাত্রদলের দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা।
সোমবার (৮ এপ্রিল) সকালে সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে কর্মসূচি পালন করেন বাকৃবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. আতিকুর রহমান, সদস্য সচিব মো. শফিকুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এ এম শোয়াইব, সদস্য মিজানুর রহমান, সদস্য ইসমাইল হোসেন হৃদয়সহ প্রায় শতাধিক নেতা কর্মী। দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয়’৭১ ভাস্কর্যের সামনে বাকৃবি ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম তুষার, ছাত্রদল নেতা মিরাজ ও শাহিনের নেতৃত্বে আলাদা কর্মসূচি পালন করা হয়।
সকালের কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন সোনালি দলের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভারমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদিউজ্জামান খান এবং দুপুরের কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল শাখার নেতৃবৃন্দ, সাধারণ শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
এ সময় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. আতিকুর রহমান বলেন, "মুসলমানদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান, যে স্থান থেকে মহানবী সা. মিরাজে গিয়েছিলেন মসজিদুল আল-আকসা, গাজা এবং রাফাতে ইসরাইলের বর্বরোচিত যে হামলা হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল এই হামলার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছে। শুধু এই হামলা নয় বিশ্বের যে কোন স্থানে মুসলিমদের উপর হামলা ও নির্যাতনের বিপক্ষে এবং মজলুমদের পক্ষে ছাত্রদল বাকৃবি শাখার অবস্থান সুস্পষ্ট।"
তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামে পানীয় হিসেবে কোকাকোলা দেওয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, "আপনারা লক্ষ্য করেছেন গতকাল যখন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা নির্যাতিত ফিলিস্তিনদের পক্ষে এবং দাজ্জাল ইসরাইল নামীয় সশস্ত্র জঙ্গি গোষ্ঠীর বিপক্ষে অবস্থা নিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছে ঠিক সেই সময়ে বাকৃবি শিক্ষার্থীদের আবেদন ও আহ্বানের প্রতি অশ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের ইন্টার্নশিপ ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নির্দ্বিধায় কোকাকোলা পানীয় বিতরণ করেছে। আমি ও আমার সংগঠনের পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং ভবিষ্যতে এসব বিষয়ে আরও সতর্কতা ও সংবেদনশীলতা নিয়ে কাজ করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আহ্বান জানাচ্ছি।"
তিনি আরো বলেন, "সেই সাথে বর্তমান সরকারের সাথে ইসরাইল সরকারের ইকোনমিক ডুপ্লিমেসি কেমন হবে, রাজনৈতিক পলিসি কেমন হবে, বৈশ্বিক কূটনীতির উপর ভিত্তি করে ইসরাইলের সাথে তাদের রাজনৈতিক সম্পর্ক কি তা অতি দ্রুত সময়ে লিখিত আকারে প্রকাশ করার দাবি জানাচ্ছি।"
তরিকুল ইসলাম তুষার বলেন, ফিলিস্তিনের গাজা ও রাফায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস হামলায় ইতোমধ্যেই হাজারো নিরপরাধ মানুষ নিহত হয়েছেন। শিশু, নারী, বৃদ্ধ কেউই রেহাই পাচ্ছেন না। গাজা আজ মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বিশ্ব এখনো নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে, যা অত্যন্ত লজ্জাজনক। এ মুহূর্তে গাজাবাসীর জন্য অর্থনৈতিক সহায়তা অত্যন্ত জরুরি। আমরা বাকৃবি প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাই, সবাই মিলে দ্রুত একটি ফান্ড গঠন করে গাজাবাসীর পাশে দাঁড়ানোর।
ছাত্রদল নেতা মিরাজ বলেন, ফিলিস্তিনে চলমান হত্যাযজ্ঞ বিশ্ব বিবেককে স্তব্ধ করে দিয়েছে। শিশু, নারী, বৃদ্ধ, হাসপাতাল, স্কুল, মসজিদ—কোনো কিছুই ইসরায়েলের নির্মম হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। আল্লাহ কখনোই মজলুমের দোয়া ফেরান না। গাজা ও রাফা মুক্তির স্বাদ অবশ্যই পাবে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর