
নেত্রকোনার আটপাড়ায় ১২ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। বুধবার (৯ এপ্রিল) রাতে মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে প্রতিবেশী তরুণ অন্তর মিয়া (২১) ও তাঁর সহযোগী হৃদয় মিয়াকে (২৪) আসামি করে থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
তবে বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকাল সোয়া ১০ টা পর্যন্ত পুলিশ কোন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারিনি। এদিকে ধর্ষণের শিকার শিশুটি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। এর আগে গত মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে উপজেলা লুনেশ্বর ইউনিয়নের একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা, থানা-পুলিশ ও মেয়েটির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মেয়েটির স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে। প্রতিবেশী অন্তর মিয়া সম্প্রতি মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। সপ্তাহখানেক আগে তিনি মেয়েটিকে প্রেম প্রস্তাব দেন। কিন্তু প্রত্যাখ্যান করার গত মঙ্গলবার রাত আটার দিকে হঠাৎ ওই মেয়েটির ঘরে ঢোকেন অন্তর।
মেয়েটির মা গত পাঁচ বছর আগে মারা যান। তার বাবা অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করাসহ সন্ধ্যায় বাইসাইকেলে করে দুধ বিকৃতিতে বের হন। খালি ঘর পেয়ে শিশুটিকে জোর করে অন্তর মিয়া ধর্ষণ করেন।
তাকে এ কাজে সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে বন্ধু হৃদয় মিয়ার বিরুদ্ধে। বাধা দেওয়ায় শিশুটিকে মারধর করা হয়। পরে শিশুটির চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে অভিযুক্ত দুই বখাটে পালিয়ে যান।
পরে স্থানীয়রা শিশুটিকে উদ্ধার করে আটপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে শিশুটির প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠায়।
পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই দিন রাত পৌনে চারটার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে ওই হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ডের ইউনিট চার এ ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। এ ঘটনায় বুধবার রাতে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আর এম ও) একরামুল হাসান দৈনিক সংগ্রামকে বলেন, 'মঙ্গলবার রাতে শিশুটিকে যখন নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তখন তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই রাতেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।'
শিশুটির বাবা বৃহস্পতিবার সকালে মুঠোফোনে চিকিৎসকের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, চিকিৎসক জানিয়েছেন তার মেয়ে সুস্থ হতে কিছুটা সময় লাগবে। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বুধবার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের লোকজন নমুনা সংগ্রহ করেছেন।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আজিজুল হক বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে আমি শিশুটির বাড়িতে যাই। শিশুটির শরীর ও মুখমণ্ডলে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।
এ ব্যাপারে আটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।’
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর