
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও গণহত্যাকে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর নীরব সমর্থন এবং মুনাফাভিত্তিক রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ হিসেবে উল্লেখ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষক সংগঠন 'সাদা দল'।
সংগঠনটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান এ মন্তব্য করেন। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ফিলিস্তিনের পক্ষে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক মোর্শেদ বলেন, ইসরায়েলের আগ্রাসনের জবাবে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বিশ্বের সকল দেশকে একত্রিত হয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। প্রয়োজনে আমরা যুদ্ধেও অংশ নিতে প্রস্তুত। অবিলম্বে গাজায় গণহত্যা বন্ধ করতে হবে।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও বিশিষ্ট পদার্থবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার বলেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে ইসরায়েল ভেবেছিল ফিলিস্তিনকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে। কিন্তু হামাস ও হিজবুল্লাহর প্রতিরোধে এবং আল্লাহর রহমতে তারা এখনো তা সফল হতে পারেনি। ইসরায়েল শিশুদের হত্যা করে ভবিষ্যতের প্রতিরোধ দুর্বল করতে চায়। তাই তাদের নিজেদের ভাষাতেই জবাব দিতে হবে।
ঢাবির ট্রেজারার অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অংশ হিসেবে নয়, একজন শিক্ষক হিসেবে এসেছি। মানবিকতা থাকলে আমাদের সবারই এগিয়ে আসা উচিত। আমাদের হাতে কিছু না থাকলেও আমরা তীব্রভাবে নিন্দা জানাই। ফিলিস্তিনি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করা সম্ভব নয়। তাদের ওপর ইসরায়েলের আগ্রাসনের প্রতিবাদে, যেসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ইসরায়েলের ব্যবসায়িক সম্পর্ক আছে, তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কচ্ছেদ করা উচিত।
সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম বলেন, গাজায় প্রতিটি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হচ্ছে। আমাদের এর প্রতিবাদ করতেই হবে। যুদ্ধ ও গণহত্যা বন্ধ হোক। তবে প্রতিবাদের নামে দেশে যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছে, তাও আমরা সমর্থন করি না এবং এরও প্রতিবাদ জানাই।
ঢাবির আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ইকরামুল হক বলেন, পৃথিবীতে যদি সত্যিই আইন বলে কিছু থাকত, তাহলে ইসরায়েল এমনভাবে গণহত্যা চালাতে পারত না। তারা আন্তর্জাতিক আইন, বিশেষ করে জেনেভা কনভেনশনের যুদ্ধ সম্পর্কিত আইন ভঙ্গ করছে। জাতিসংঘকে প্রমাণ করতে হবে যে আইন বাস্তবেই আছে।
কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েল যেভাবে বর্বর গণহত্যা চালিয়ে আসছে, তাতে গাজা এখন এক মৃত্যুপুঞ্জিতে পরিণত হয়েছে। প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ নিহত হয়েছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
তিনি আরও বলেন, যেসব দেশ ইসরায়েলকে সমর্থন দিচ্ছে, তাদের সহযোগিতা বন্ধ করতে হবে। জাতিসংঘ ও ওআইসিকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা দেখেছি, বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে ইসরায়েল থেকে আড়ি পাতার যন্ত্র আমদানি করা হয়েছিল। আমাদের পাসপোর্ট থেকে ‘এক্সসেপ্ট ইসরায়েল’ লেখাও মুছে ফেলা হয়। আমরা চাই না বাংলাদেশের সঙ্গে ইসরায়েলের কোনো সম্পর্ক থাকুক—লিখিত হোক কিংবা অলিখিত।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকার, আইবিএ’র অধ্যাপক ড. মো. মহিউদ্দিন, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রফেসর ড. মো. রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর