• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ২৪ সেকেন্ড পূর্বে
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ১২ এপ্রিল, ২০২৫, ১১:০৫ দুপুর
bd24live style=

গ্যাস, বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে শিগগিরই নতুন জ্বালানি নীতি

ফাইল ফটো

গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি ও পুঁজির সহজলভ্যতা নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার। ৪ দিনের বিনিয়োগ সম্মেলনে সরকারের পক্ষ থেকে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। সম্মেলনে সুনির্দিষ্টভাবে জানানো হয়, গ্যাস বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানে শিগগিরই নতুন জ্বালানি নীতি আসছে। সেখানে অনেক প্রশ্নের জবাব থাকবে। চলমান রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রম শেষ হলে কমে আসবে অনেক জটিলতা। এতে দুর্নীতিও নিয়ন্ত্রণে আসবে। সবকিছু মিলে বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে বিদ্যমান অধিকাংশ সমস্যার সমাধান হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পক্ষ থেকে উদ্যোক্তাদের কাজে সহযোগিতা বাড়বে। 

এছাড়াও যেসব খ্যাতনামা কোম্পানি বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে, তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগসহ সব ধরনের সমস্যার সমাধান করবে সরকার। সম্মেলনের আয়োজক সংস্থা বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এসব বিষয় নিশ্চিত করেছে। অন্যদিকে পলিসির ধারাবাহিকতা রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো।

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বিনিয়োগ সম্মেলনে বলেছেন, এবারের সম্মেলনে অংশ নেওয়া দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তারা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য ও নীতিগত স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। এক্ষেত্রে সরকার কি ধরনের সহায়তা করতে পারে, তা জানতে চেয়েছেন। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আরও জানতে চেয়েছেন-বাংলাদেশে ব্যবসা করতে এলে সরকার কী ধরনের সুবিধা দেবে এবং কীভাবে প্রশাসনিক জটিলতা হ্রাস করা হবে। একই উদ্যোক্তারাও একই কথা বলেছেন। বিনিয়োগকারী বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (বিএসইজেড), ইপিজেডসহ বিভিন্ন শিল্পাঞ্চল সরেজমিন ঘুরে দেখেন। 

তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে তাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে, আমরা বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে অঙ্গীকারবদ্ধ। তিনি বলেন, বিশ্বের এমন কোনো দেশ পাওয়া যাবে না, যেখানে কোনো সমস্যা নেই। প্রত্যেক দেশেরই কিছু না কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সমস্যা চিহ্নিত হয়েছে। আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে আমরা তা সমাধানে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।


প্রসঙ্গত দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে গত ‘৭ থেকে ১০ এপ্রিল ৪ দিনের বিনিয়োগ সম্মেলন আয়োজন করে বিডা। এতে ৪২টির বেশি দেশের ৪২৫ বিদেশি বিনিয়োগকারী অংশ নিয়েছেন। এরমধ্যে দেড় শতাধিক চীনের। এছাড়াও যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মান ও জাপানের বিনিয়োগকারীরা এসেছেন। দেশেরও ২ হাজারের বেশি। এসব বিনিয়োগকারীদের নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

বিডা সূত্র জানায়-বিনিয়োগকারীরা এবার সুনির্দিষ্ট কয়েকটি সমস্যার কথা সামনে আনেন। এর মধ্যে-জমির স্বল্পতা, সহজে পুঁজি মিলছে না। ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদ, দুর্নীতি, গ্যাস-বিদ্যুতের অভাব এবং নানা ধরনের আমলতান্ত্রিক জটিলতা। এর সবগুলোর সমস্যার প্রয়োজনীয় সমাধানের কথা বলা হয়েছে। তুলে ধরা হয়েছে-এখানকার বিশাল সম্ভাবনার কথা। যেমন-উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন বাংলাদেশ শুধু একটি দেশ নয়, এটি এই অঞ্চলের বিশাল বাজারে প্রবেশের প্ল্যাটফর্ম। এখানে পণ্য উৎপাদন করলে বিশাল বাজারে তা বিক্রি করা যাবে। এর ব্যাখ্যায় বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশে ১১ কোটি শ্রমশক্তি। ৩ কোটি মানুষের বয়স ২৫ বছরের নিচে। যা মালয়েশিয়ার মোট জনসংখ্যার চেয়ে বেশি। এছাড়াও বাংলাদেশে ১৮ কোটি মানুষের নিজস্ব বাজার। এর বাইরে এখানে পণ্য উৎপাদন করলে নেপাল, ভুটান, ভারতের সেভেন সিস্টার ও পশ্চিমবঙ্গে রপ্তানি করা যাবে। 

বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগে উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। তেমননি মুনাফাও অন্যান্য দেশের চেয়ে বেশি। সেখানে কয়েকটি কোম্পানির কেস স্টাডি তুলে ধরেন। যেমন গ্রামীণফোন বাংলাদেশে ৫৬ দশমিক ১ শতাংশ মুনাফা করেছে। কোম্পানির বৈশ্বিক গড় মুনাফা ১৫ শতাংশ। লাফার্জ হোলসিমের বাংলাদেশে মুনাফা ২৯ দশমিক ৮ শতাংশ। কিন্তু বৈশ্বিক গড় ১৫ শতাংশ। মারিকোর মুনাফা ৫৬ দশমিক ১ শতাংশ, কিন্তু বৈশ্বিক গড় ২০ শতাংশ। বিনিয়োগের অন্যতম দাবি ছিল গ্যাস-বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান। জবাবে আশিক চৌধুরী বলেন, জ্বালানি নিয়ে বর্তমানে উদ্যোক্তা বা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ আছে। বিনিয়োগ আকর্ষণে খুব শিগগিরই নতুন জ্বালানি নীতি প্রকাশ করবে সরকার। এই জ্বালানি নীতি প্রকাশ হলে অনেক প্রশ্নের জবাব মিলবে।

বিনিয়োগকারীদের অন্যতম কয়েকটি উদ্বেগ ছিল বিনিয়োগের লাইসেন্স পেতে ভোগান্তি, আমদানি-রপ্তানিতে এনবিআর প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছে না। নানা ক্ষেত্রেই আমলাতান্ত্রিক জটিলতা রয়েছে। জবাবে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশের রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কার কার্যক্রম চলছে। এই সংস্কার সম্পন্ন হলে এসব সমস্যা থাকবে না। 

এছাড়াও প্রায় সবকিছুই অটোমেশন করা হচ্ছে। এটি সম্পন্ন হলে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমবে। দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। উদ্যোক্তারা আরও জানান-বাংলাদেশে নীতির ধারাবাহিকতা থাকে না। শাসন ক্ষমতা পরিবর্তন হলে আগের সব নীতি বদলে যায়। এই প্রশ্নের জবাব দিতে এবারের সম্মেলনে তিনটি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এর মধ্যে ছিল বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি। এসব দলগুলো বিনিয়োগকারীদের আশ্বাস দিয়েছে, তারা ক্ষমতায় গেলে পলিসি বদলাবে না।

বিনিয়োগ সম্মেলনে বেশ কয়েকটি সেমিনার ও প্যানেল আলোচনা হয়েছে। সেখানে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম সহনীয় ও সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখার পরামর্শ এসেছে। অংশগ্রহণকারীরা বলেছেন, বিনিয়োগ আকর্ষণে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর মধ্যেও সমন্বয় প্রয়োজন। বিদেশি বিনিয়োগ আনতে হলে দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন জরুরি। 

এক্ষেত্রে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মনে করেন বিনিয়োগে যেসব বাধার কথা উদ্যোক্তারা বলেছেন, তা সরকার কীভাবে সমাধান করবে, সে বিষয়ে প্রস্তুতি চলছে। যেসব বিষয়ে বেশি উদ্বেগ, তেমন ২০টি সুনির্দিষ্ট বিষয় বিডা আগেই চিহ্নিত করেছে। সেগুলো চলতি বছরের মধ্যে সমাধানের পরিকল্পনা নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের সেবা নিশ্চিত করতে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের সেবার পরিধি বাড়ছে। সম্মেলনে শেষে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বিডার বীজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান বলেন, এবারের সম্মেলনের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের জন্য দীর্ঘমেয়াদে পাইপলাইন তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে যেসব প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগের প্রস্তাব কিংবা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তাদের সঙ্গে ধারাবাহিক যোগাযোগ করা হবে। বিনিয়োগ পেতে ধারাবাহিক মনিটরিংও থাকবে। তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারী যারা বাংলাদেশে এসেছেন, তারা যেন সত্যিকারের বিনিয়োগ করেন, সেজন্য তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখব। 

তার মতে, উদ্যোক্তারা বিনিয়োগের জন্য সাধারণত ১৮ থেকে ২৪ মাস সময় নেন। বিডা থেকে জানানো হয়, এবারের সম্মেলনে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে নতুনভাবে তুলে ধরেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ও বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। তুলে ধরা হয় সম্ভাবনা, সহযোগিতা প্রতিশ্রুতি ও নীতির ধারাবাহিকতার আশ্বাস দেওয়া হয়। ফলে সম্মেলনে বেশ কিছু মাইলফলক অর্জন রয়েছে। এর মধ্যে বিশালসংখ্যক দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। মার্কিন কোম্পানি স্টারলিংকের ইন্টারনেট পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার সঙ্গে বেসামরিক চুক্তি হয়েছে। প্রতিষ্ঠান মহাকাশ গবেষণায় বাংলাদেশকে সহায়তা দেবে। চীনের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বাংলাদেশকে ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। স্পেনের পোশাক জায়ান্ট ইনডিটেক্স। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অস্কার গার্সিয়া মাচেইরাস প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলাদাভাবে সাক্ষাৎ করে বিনিয়োগের আগ্রহের কথা জানিয়েছে। 

চীনের খ্যাতনামা পোশাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হান্ডা ইন্ডাস্ট্রিজ বাংলাদেশে ১৫ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে। চীনের বিখ্যাত কোম্পানি ‘আলি বাবা’ বিনিয়োগে আগ্রহী। শ্রম পরিস্থিতির উন্নয়ন ইস্যুতে আইএলওর সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। দুবাইভিত্তিক জায়ান্ট কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ড বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে। গ্রামীণফোন ও লাফার্জ হোলসিমও বড় বিনিয়োগ করতে চায়। বিখ্যাত কোম্পানি জিওডারনো ও এক্সিলারের এনার্জি বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। এছাড়াও এবারের সম্মেলনে উদ্যোক্তারা বিভিন্ন অর্থনৈতিক অঞ্চল সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন।

বাঁধন/সিইচা/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com