
রাজধানীর মিরপুরের পাইকপাড়ায় মাইনুদ্দীন হাওলাদার নামে ব্যবসায়ীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন। শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ভুক্তভোগী নিজেই।
মাইনুদ্দীন হাওলাদার উপস্থিত সকলকে যথাযথ সম্মানপূর্বক বলেন, আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী মো: মাইনুদ্দীন হাওলাদার। পিতার নাম : মুজিবুল হক। মাতার নাম : ছকিনা খাতুন। বর্তমান ঠিকানা: বাসা নং- ৩৩৮/১, দক্ষিণ পাইকপাড়া, থানা- মিরপুর, জেলা- ঢাকা-১২১৬। স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম- ধনিয়া, পোষ্ট- তুলাতলি বাজার, থানা- ভোলা সদর, জেলা- ভোলা। এনআইডি নং ৯৫৫ ২০৫ ৫৪১১। পেশা: ব্যবসা। ধর্ম: ইসলাম। জাতীয়তা: বাংলাদেশি। জন্ম তারিখ: ০১/০২/১৯৭২ ইংরেজি।
গত ০৯/০৪/২০১৫ ইং তারিখে একটি জাতীয় দৈনিকে আমাকে নিয়ে একটি মিথ্যা নিউজ প্রকাশিত হয়, যা মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও হয়রানিমূলক বটে। তথাকথিত পত্রিকায় আমাকে ঢাকা মিরপুর থানা আওয়ামী লীগের সদস্য ও থানা মৎস্যজীবী লীগের সহ-সভাপতি বানিয়ে সংবাদ প্রচার করা হয়। এর প্রেক্ষিতে গত ৪ আগস্ট ২০২৪ ইং তারিখের ছাত্র হত্যা মামলার আসামি উল্লেখ করা হয় এবং বিএনপির বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে বিএনপিকে মিডিয়া ট্রায়ালের মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হয়। উক্ত নিউজ প্রকাশের কারণে আমার এলাকায় (কল্যাণপুর) সামাজিক ও ব্যবসায়িকভাবে হেয় প্রতিপন্নসহ মান-সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়। আমি উক্ত প্রকাশিত নিউজের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং প্রকাশিত মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও হয়রানিমূলক নিউজটির প্রতিবাদ প্রকাশের জন্য অনুরোধ করছি।
সম্মানিত কলম সৈনিকেরা, আমি বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে জড়িত নই। আমি একজন কল্যাণপুর নতুন বাজারের স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং বাজারের পাশের একটি মসজিদ/মাদ্রাসার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। তবে যখন যে সরকার ক্ষমতায় এসে মসজিদ/মাদ্রাসায় দান-খয়রাত ও কম্বল বিতরণ করতো, আমি সভাপতি হিসেবে পাশে থাকতে হতো এবং সেখানে তাদের দলীয় লোক ও অন্যান্যরা ছবি তুলতো—এ ছাড়া আমার জানা মতে আর কিছুই নেই। ০৪ আগস্ট ২০২৪ তারিখের ঘটনায় জড়িত থাকার অজুহাত দেখিয়ে আমাকে গত ০৮/০৪/২০২৫ ইং তারিখ রাত আনুমানিক ১০:০০ ঘটিকায় পুলিশ কল্যাণপুর নতুন বাজার এলাকা থেকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে উপস্থিত বাজারের ব্যবসায়ীরা ও উৎসুক জনতার বাধার মুখে পড়ে ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে ০৯/০৪/২০২৫ ইং তারিখ পত্রিকার নিউজ থেকে আমি জানতে পারি, ছাত্র হত্যা মামলায় (তারিখ: ০৪ আগস্ট ২০২৪ ইং, মামলা নং ১৯(৮)২৪, বাদী- লোকমান (৫০), পিতা- সিরাজ মিয়া) আমাকে ২৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
একই দিন কল্যাণপুর এলাকার জনমানুষ ও ভিকটিমের বোনের ডিভিসি টিভিতে একটি সাক্ষাৎকারের ফুটেজ থেকে জানা যায় যে, উক্ত ছাত্রটি ঢাকা বংশাল থানা এলাকায় ০৫ আগস্ট ২০২৪ ইং তারিখে মারা যায়, মামলাটি বংশাল থানায় না করে মিরপুর থানায় করা হয়, মামলাটি ০৫ আগস্ট ২৪ না দেখিয়ে ০৪ আগস্ট ২৪ দেখিয়ে ভুল ঘটনাস্থান উল্লেখ করা হয়, যা মামলার মেরিট নষ্ট করে দেয়। মামলার বাদীকে ভিকটিমের পরিবার চেনেন না, মামলায় লাশ রিসিভ দেখানো হয় ঢাকা মেডিকেলে অথচ ভিকটিমের পরিবার লাশ রিসিভ করেছেন মিডফোর্ড হাসপাতাল থেকে, আর যারা মামলার আসামি তাদেরকে ভিকটিমের পরিবার চেনেন না—ইত্যাদি।
বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আমি দেখতে ও শুনতে পেতাম কিছু পুলিশ ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার কিছু অসাধু সদস্য গুম, খুন, মিথ্যা মামলা, গায়েবি মামলা ও ‘আয়না ঘর’ বানানোসহ এসব বেআইনি কাজ করতেন। যার ফলে ঐ ফ্যাসিস্ট সরকারকে পছন্দ করতাম না। পরবর্তীতে ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর সারা দেশের মানুষের স্বস্তি ফিরে আসে, সাথে আমারও ভালো লেগেছিল যে এবার জনবান্ধব বা জনমানুষের সরকারের পুলিশ দেখতে পাবো, কিন্তু সে আশায় গুড়ে বালি পড়লো। এখন নিজেকেই অপরাধী মনে হচ্ছে—কি চাইলাম আর কি পেলাম। বর্তমানে আমার স্থানীয়ভাবে মান-সম্মান সবই গেল।
আমি খুবই অসহায় জীবনযাপন করছি। ০৪ আগস্ট ২০২৪ ইং তারিখে আমি যে কল্যাণপুর নতুন বাজারে উপস্থিত ছিলাম তার সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষিত আছে। তবে আমি যদি বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য আপনি বা আপনারা খুঁজে পান, তাহলে আপনাদের যে কোনো শাস্তি মাথা পেতে নেব। যে কোনো বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে আমার কোনো আপত্তি থাকবে না।
সম্মানিত কলমযোদ্ধারা, আপনাদের লেখনির মাধ্যমে আমার উপর এই মিথ্যা মামলা ও হয়রানির বিষয়টি কিছুটা হলেও লাঘব হবে। দয়া করে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদ সংবাদটি সবাই প্রকাশ করে জাতির কাছে এর সত্যতা তুলে ধরবেন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর