
৮ দফা দাবির বাস্তবায়নের দাবিতে রবিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে কৃষি ডিপ্লোমা ছাত্র অধিকার আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচি থেকে তারা ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন। দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনকারীরা।
বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। দেশের অর্থনীতিতে কৃষি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও কৃষি শিক্ষা খাতে রয়েছে চরম বৈষম্য। সরকারি ১৮টি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটসহ অসংখ্য বেসরকারি কৃষি কলেজে ৪ বছরের ডিপ্লোমা কোর্স চালু রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত প্রায় অর্ধলক্ষ শিক্ষার্থীর মধ্যে বর্তমানে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
আন্দোলনকারীদের দাবি, ২০০৮, ২০০৯ ও ২০১৬ সালে এই দাবিগুলোকে যৌক্তিক আখ্যা দিয়ে বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়া হলেও এখনো কোনো দাবি বাস্তবায়ন হয়নি। তাদের অন্যতম দাবি—পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের জন্য ডুয়েটের মতো কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিতে একটি স্বতন্ত্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে।
তারা বলেন, কৃষিতে দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে এসব যৌক্তিক দাবির বাস্তবায়ন সময়ের দাবি। অথচ কিছু কুচক্রী মহলের কারণে এই দাবিগুলো বারবার উপেক্ষিত হচ্ছে। আন্দোলনকারীরা জানান, আগে থেকেই নিয়মতান্ত্রিকভাবে শিক্ষা উপদেষ্টা, সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসকদের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। তবে বাস্তবায়নের কোনো অগ্রগতি নেই।
তারা অভিযোগ করেন, আন্দোলনের বদলে শিক্ষার্থীদের বদলি, ড্রপআউটসহ বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আন্দোলনকারীরা বলেন, “জুলাই আন্দোলনের মতো এবারও আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না।”
আন্দোলনকারীদের ৮ দফা দাবি:
১. ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের জন্য পৃথক পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিতে হবে।
২. উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে গেজেটভুক্ত করতে হবে এবং প্রতিবছর নিয়মিত নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
৩. শিক্ষক সংকট দূর করে কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার মানোন্নয়ন করতে হবে।
৪. কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষা বিভাগকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে পৃথক করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান করতে হবে।
৫. সকল কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের জন্য কোটা সংরক্ষণ করতে হবে।
৬. বেসরকারি চাকরিতে ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের ১০ম গ্রেডের স্কেলে বেতন দিতে হবে।
৭. মাঠ সংযুক্তি (ইন্টার্নশিপ) ভাতা প্রদান করতে হবে।
৮. উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের চাকরিতে যোগদানের পর ৬ মাসের ফাউন্ডেশন ট্রেনিং বাধ্যতামূলক করতে হবে।
আন্দোলনকারীরা সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, “আমরা চাই গণমাধ্যম আমাদের এই ন্যায্য দাবিগুলো তুলে ধরুক। কৃষি শিক্ষার বৈষম্য দূর হলে দেশের কৃষি খাত নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।”
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর