• ঢাকা
  • ঢাকা, সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১ মিনিট পূর্বে
প্রচ্ছদ / জাতীয় / বিস্তারিত
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ১৪ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:১৩ দুপুর
bd24live style=

আজ বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ 

ছবি: সংগৃহীত

পহেলা বৈশাখ, বাঙালির ঐতিহ্যবাহী একটি সার্বজনীন লোকউৎসব। এদিন আনন্দঘন পরিবেশে বরণ করে নেওয়া হয় বাংলা নতুন বছরকে। কল্যাণ ও নতুন জীবনের প্রতীক নববর্ষ। অতীতের ভুলত্রুটি ও ব্যর্থতার গ্লানি ভুলে নতুন করে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় উদযাপিত হয় নববর্ষ।

গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে বাংলাদেশের প্রতি বছর ১৪ এপ্রিল এই উৎসব পালিত হয়। বাংলা একাডেমি নির্ধারিত আধুনিক বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে এই দিন নির্দিষ্ট করা হয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা দিনটি নতুনভাবে ব্যবসা শুরুর উপলক্ষ হিসেবে বরণ করে নেয়। শোভাযাত্রা, মেলা, পান্তাভাত খাওয়া, হালখাতা খোলা ইত্যাদি বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে দিনটি উদ্‌যাপন করা হয়। বাংলা নববর্ষের ঐতিহ্যবাহী শুভেচ্ছা বাক্য হল ‘শুভ নববর্ষ’।

আজ পহেলা বৈশাখ। বাংলা ১৪৩২ বঙ্গাব্দ। নববর্ষ শুরুর দিনটিতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। ইউনেস্কো এই উৎসব শোভাযাত্রাকে ‘মানবতার অমূল্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ হিসেবে ঘোষণা করে ২০১৬ সালে।

প্রতিবছরের ন্যায় এবারও পয়লা বৈশাখে বর্ণিল উৎসবে মাতবে দেশ। ভোরের প্র থম আলো রাঙিয়ে দেবে নতুন স্বপ্ন, প্রত্যাশা আর সম্ভাবনাকে। 

নতুন বছরের প্রথম দিন উপলক্ষে সরকারি ছুটি হওয়ায় সবাই নিজ নিজ পরিবারের সঙ্গে উৎসবের আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার চেষ্টা করেন। দিনটিকে ঘিরে এ বছর রাজধানীতেও নানা আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। 

চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বৈশাখের দিনে রাজধানীতে কোথায় কখন কি আয়োজন থাকছে-

রমনা বটমূল: বৈশাখের সূর্যোদয় ছায়ানটের গান দিয়ে

বাংলা নববর্ষ মানেই রমনার বটমূল। প্রতিবারের মতো এবারও পয়লা বৈশাখের প্রথম প্রহরে সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। রমনার ছায়ানট মঞ্চে দিনব্যাপী গান, কবিতা, আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়া হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: মঙ্গল শোভাযাত্রায় প্রাণের ঢেউ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহী মঙ্গল শোভাযাত্রা। সকাল থেকেই টিএসসি ও চারুকলা প্রাঙ্গণ থাকবে উৎসবমুখর। বিভিন্ন রঙিন মুখোশ, বিশালাকৃতির পুতুল এবং নানা শিল্পমণ্ডিত সাজে অংশ নিবে হাজারও মানুষ। এটি জাতিসংঘ স্বীকৃত ‘মানবতার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান: বৈশাখী কনসার্টে ব্যান্ড সংগীতের ঝড়

এদিন বিকেল ৩টা থেকে শুরু হবে বৈশাখী কনসার্ট। এতে অংশ নিবেন জনপ্রিয় ব্যান্ডদল ওয়ারফেজ, দলছুট, এভোয়েড রাফা, লালন, ভাইকিংস, স্টন ফ্রি। এ ছাড়া বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ব্যান্ড যেমন গারোদের ‘এফ মাইনর’, চাকমাদের ‘ইনভোকেশন’, ত্রিপুরাদের ‘ইমাং’, মারমাদের ‘চিম্বুক’, ও খাসিয়াদের ‘ইউনিটিরও’ পরিবেশন করবে নিজস্ব সংস্কৃতি ও সংগীত।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি: দুই দিনের সাংস্কৃতিক উৎসব

সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমিতে ১৩ ও ১৪ এপ্রিল দুই দিনব্যাপী উৎসবের আয়োজন করেছে ‘নবপ্রাণ আন্দোলন’। এতে গান, নৃত্য, নাটক, আবৃত্তি ও প্রদর্শনীতে অংশ নেবেন দেশের খ্যাতনামা শিল্পীরা।

রবীন্দ্র সরোবর: সুরের ধারার ব্যতিক্রমী আয়োজন

ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে সকাল ৬টা থেকে সুরের ধারা আয়োজনে পাহাড় ও সমতলের জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে বর্ষবরণ হবে। এই আয়োজনে থাকবে মুক্তমঞ্চে গান, কবিতা ও নাচের পরিবেশনা। সঙ্গে থাকছে বাঙালি খাবারের নানা আয়োজন।

জাতীয় সংসদ ভবন: ড্রোন শো ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় থাকবে চীনা প্রযুক্তি দলের অংশগ্রহণে ব্যতিক্রমী ড্রোন শো। সন্ধ্যায় থাকবে বৈশাখী ব্যান্ড শো এবং বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এ ছাড়াও এবারের শোভাযাত্রার মূল আকর্ষণ ‘স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি’। সম্প্রতি এই প্রতিকৃতি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হলেও দ্রুত সময়ের মধ্যে সেটি পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে। কাঠামো নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে ককশীটের মতো হালকা ও সহজে রূপদানযোগ্য উপকরণ। ইতোমধ্যে প্রতিকৃতির দৃশ্যমান অংশ তৈরি শেষ হয়েছে।

শুধু ‘স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি’ নয়, জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে নিহতদের স্মরণে নির্মিত হয়েছে ১৫ ফুট উচ্চতার এক পানির বোতল, যা মীর মুগ্ধের আলোচিত পানি লাগবে থিমের রূপায়ন। এই বোতলের ভেতরে থাকবে একাধিক খালি বোতল, যা শহিদদের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

এছাড়া বড় আকৃতির ইলিশ মাছ, কাঠের বাঘ, শান্তির পায়রা, ঘোড়া, পালকি, সুলতানি ও মুঘল আমলের মুখোশ, রঙিন চরকি, পটচিত্রসহ নানা ভাস্কর্যও থাকবে। 

ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশে শোভাযাত্রায় রাখা হয়েছে তরমুজের ফালি মোটিফ। আয়োজকরা জানান, তরমুজ ফিলিস্তিনিদের কাছে ‘প্রতিরোধ ও অধ্যবসায়ের প্রতীক’, কারণ এর রঙ ফিলিস্তিনের পতাকার রঙের প্রতিফলন।

বাংলা দিনপঞ্জীর সঙ্গে হিজর ও খ্রিষ্টীয় সনের মৌলিক পার্থক্য হলো- হিজরি সন চাঁদের হিসাবে এবং খ্রিষ্টীয় সন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। এ কারণে হিজর সনে নতুন তারিখ শুরু হয় সন্ধ্যায় আকাশে নতুন চাঁদ দৃশ্যমান হওয়ার পর আর খ্রিষ্টীয় সনে নতুন দিন শুরু হয় ইউটিসি ±০০:০০ অনুযায়ী।

পহেলা বৈশাখ রাত ১২টা থেকে শুরু না হয়ে সূর্যোদয় থেকে শুরু। এ নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। ঐতিহ্যগতভাবে সূর্যোদয় থেকে বাংলা দিন গণনার রীতি থাকলেও ১৪০২ বঙ্গাব্দের ১ বৈশাখ থেকে বাংলা একাডেমি এই নিয়ম বাতিল করে আন্তর্জাতিক রীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে রাত ১২টায় দিন গণনা শুরুর নিয়ম চালু করে।

এখন যেমন নববর্ষ নতুন বছরের সূচনার নিমিত্তে পালিত একটি সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে, এক সময় এমনটি ছিল না। তখন নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ আর্তব উৎসব তথা ঋতুকালীন উৎসব হিসেবে পালিত হতো। তখন এর মূল তাৎপর্য ছিল কৃষিকাজ। কারণ প্রাযুক্তিক প্রয়োগের যুগ শুরু না হওয়া পর্যন্ত কৃষকদের ঋতুর ওপরই নির্ভর করতে হতো।

কয়েকজন ঐতিহাসিক বাঙলা দিনপঞ্জি উদ্ভবের কৃতিত্ব দেন সপ্তম শতকের রাজা শশাঙ্ককে। পরবর্তীতে মুঘল সম্রাট আকবর এটিকে রাজস্ব বা কর আদায়ের উদ্দেশ্যে পরিবর্তিত করেন।

ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর সম্রাটরা হিজরি পঞ্জিকা অনুসারে কৃষি পণ্যের খাজনা আদায় করতেন। কিন্তু হিজরি সন চাঁদের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় তা কৃষি ফলনের সঙ্গে মিলত না। এতে অসময়ে কৃষকদেরকে খাজনা পরিশোধ করতে বাধ্য করতে হতো।

খাজনা আদায়ে সুষ্ঠুতা প্রণয়নের লক্ষ্যে মুঘল সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। তিনি মূলত প্রাচীন বর্ষপঞ্জিতে সংস্কার আনার আদেশ দেন। সম্রাটের আদেশমতে, রাজকীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফতেহউল্লাহ সিরাজি সৌর সন ও আরবি হিজরি সনের ওপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম বিনির্মাণ করেন।

১৫৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ১০ মার্চ বা ৯৯২ হিজরিতে বাংলা সন গণনা শুরু হয়। তবে এই গণনা পদ্ধতি কার্যকর করা হয় আকবরের সিংহাসন আরোহণের সময় (৫ নভেম্বর, ১৫৫৬) থেকে। প্রথমে এই সনের নাম ছিল ফসলি সন, পরে ‘বঙ্গাব্দ’ বা বাংলা বর্ষ নামে পরিচিতি পায়।

আকবরের সময়কাল থেকেই পহেলা বৈশাখ উদ্‌যাপন শুরু হয়। তখন প্রত্যেকে বাংলা চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সব খাজনা, মাশুল ও শুল্ক পরিশোধ করতে বাধ্য থাকত। এর পরদিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখে ভূমির মালিকরা নিজ নিজ অঞ্চলের অধিবাসীদেরকে মিষ্টান্ন দ্বারা আপ্যায়ন করতেন। এ উপলক্ষে বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করা হতো। এই উৎসবটি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়, যার রূপ পরিবর্তন হয়ে বর্তমান পর্যায়ে এসেছে।

তখনকার সময় এই দিনের প্রধান ঘটনা ছিল একটি হালখাতা তৈরি করা। হালখাতা বলতে একটি নতুন হিসাব বই বোঝানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে হালখাতা হল বাংলা সনের প্রথম দিনে দোকানপাটের হিসাব আনুষ্ঠানিকভাবে হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া। গ্রাম, শহর বা বাণিজ্যিক এলাকা- সব স্থানেই পুরনো বছরের হিসাব বই বন্ধ করে নতুন হিসাব বই খোলা হয়। 

হালখাতার দিনে দোকানদাররা তাদের ক্রেতাদের মিষ্টান্ন দিয়ে আপ্যায়ন করে থাকেন। এই প্রথাটি এখনও অনেকাংশে প্রচলিত আছে, বিশেষত স্বর্ণের দোকানে।

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com