
ভোলার চরফ্যাশনে স্কুল শিক্ষিকার নির্মাণাধীন তালাবদ্ধ ঘর থেকে মাদক সেবনের সরঞ্জামীসহ এক তরুণীকে উদ্ধার করলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। গত ১০ এপ্রিল গভীর রাতে ওই ঘর থেকে আপত্তিকর অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
তবে পুলিশের দাবী ওই তরুনী মানুষিক বিকারগ্রস্ত হওয়ায় উদ্ধারের পর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তরুণীকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে স্থানীয়দের দাবী তালাবদ্ধ ঘর থেকে মাদক সেবনের সরঞ্জামীসহ তরুণীকে উদ্ধার করা হলেও রহস্য উদ্ঘাটন না হওয়ায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তালাবদ্ধ ঘরে তরুণীর রহস্য উদ্ঘাটন করে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দাবী জানান স্থানীয়রা।
পুলিশ জানায়, তরুনী মানুষিক বিকারগ্রস্ত। তরুণীর নষ্ট মোবাইল ঠিক করে দেয়াড় কথা বলে তাকে ওই ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে কারা তাকে নিয়ে গেছেন তাদেরকে সে চিনে না। তবে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সে কোন কথা বলতে রাজি হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, দক্ষিণ আইচা সাবরেজিট্রার অফিস সংলগ্ন দক্ষিণ আইচা থানার ৯৬নং দৌলতপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ফজিলাতুন্নেছার পাকা ভবন নির্মান কাজ চলমান রয়েছে। ওই ভবনের এক ইউনিটের নির্মান কাজ শেষ হওয়ায় তালাবদ্ধ করে রাখা হয় এবং বাকি আরেকটি ইউনিট ফাঁকা। গত ১০ এপ্রিল রাতে ভবঘুরে এক তরুণীকে শিক্ষিকার ছেলে মেহেদী ও তার বন্ধুরা মিলে ওই তরুণীকে ফুসলিয়ে ওই তালাবদ্ধ কক্ষে নিয়ে যান।
গভীর রাতে স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেলে ভবনের তালাবদ্ধ কক্ষে তরুণীকে রেখে তারা পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা থানা পুলিশকে খবর দিলে দক্ষিণ আইচা থানা পুলিশ ওই তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে তরুণীকে উদ্ধার করে থানায় নেন। কিন্তু রাত পেরিয়ে সকালে হলেই তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে তরুণীকে উদ্ধার ও ধর্ষণের শিকার হয়েছে কিনা সে রহস্য উদ্ঘাটন না করেই তরুণীকে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেন। এনিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, প্রায় রাতেই ওই ঘর মালিকের ছেলে তার বন্ধুদের নিয়ে ওই ঘরে আড্ডা বসাতেন। ধারণা করা হচ্ছে ভবন মালিক স্কুল শিক্ষিকার ছেলে তার বন্ধুদের নিয়ে ওই ঘরের তালাবদ্ধ কক্ষে তরুণীকে নিয়ে মাদকের আড্ডা বাসিয়েছেন। পরে বিষয়টি স্থানীয় বাসিন্ধারা টের পেলে তরুণীকে ঘরে রেখে তারা পালিয়ে গেছেন।
স্কুল শিক্ষিকা ফজিলাতুন্নেছা রুমা জানান, তার ভবনের নির্মান কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে একটি ইউনিটের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। কে বা কাহারা ওই ঘরের চিলেকোঠা দিয়ে ওই তরুণীকে আমার ভবনের কক্ষে নিয়েছেন তা আমাদের জানা নাই। ওই রাতে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমার স্বামী ইয়াছিন মেকার গিয়ে তালা খুলে দিলে পুলিশ ওই তরুণীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। তবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে আমার ছেলের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তুলেছে।
দক্ষিণ আইচা থানার ওসি এরশাদুল হক ভুইয়া জানান, ওই রাতে খবর পেয়ে পুলিশ ভবনের তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে তরুণীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে ওই তরুনী জানান, মোবাইল ঠিক করে দেয়াড় কথা বলে তাকে যুবকেরা ওই কক্ষে নিয়ে গেছেন। তিনি কাউকে চিনেনা বলে জানিয়েছেন। তবে ওই তরুণীর মানুষিক বিকারগ্রস্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই তাকে তার পরিবারকে ডেকে জিম্মায় দেয়া হয়েছে। কারা ওই তরুণীকে তালাবদ্ধ কক্ষে নিয়ে গেছে তা নির্ণয় করা যায়নি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর