• ঢাকা
  • ঢাকা, সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৭ সেকেন্ড পূর্বে
মোঃ আসাদুজ্জামান
বরগুনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১৪ এপ্রিল, ২০২৫, ০৯:৫৭ রাত
bd24live style=

ভারতের সঙ্গে মিল রেখে সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

মাছের প্রজনন ও উৎপাদন বাড়াতে বঙ্গোপসাগরে এবার প্রথমবারের মতো ভারতের সঙ্গে সময় মিলিয়ে শুরু হচ্ছে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা। ১৫ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে শুরু হয়ে টানা ৫৮ দিন ১১ জুন পর্যন্ত চলবে এ নিষেধাজ্ঞা। তবে এবারও নিষেধাজ্ঞার আগে চাল সহায়তা না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বরগুনার জেলেরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সমুদ্রে মাছের প্রজনন ও উৎপাদন বাড়াতে ২০১৫ সাল থেকে শুরু হয় ৬৫ দিনের মৎস্য আহরণের নিষেধাজ্ঞা। প্রতিবছর ২০ মে হতে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সব প্রকার মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়। এই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করে মৎস্য বিভাগ।

অন্যদিকে প্রতিবেশী দেশ ভারতের আওতাধীন বঙ্গোপসাগর এলাকায় ৬১ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয় ১৫ এপ্রিল হয়ে ১৪ জুন শেষ হয়। জেলেদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, বাংলাদেশের জেলেরা যখন সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ রাখতেন, তখন প্রতিবেশী দেশের জেলেরা এদেশের জলসীমায় ঢুকে মাছ ধরে নিয়ে যায়। যাতে নিষেধাজ্ঞা শেষে সুফল থেকে বঞ্চিত হতো বাংলাদেশের জেলেরা।

এ কারণে দীর্ঘদিন ধরে নিষেধাজ্ঞার সময় সমন্বয়ের দাবি করে আসছিলেন উপকূলীয় জেলেরা। মৎস্যজীবীদের দাবি এবং গবেষণালব্ধ ফলাফলের ভিত্তিতে এ বছর সময়সীমা ও মেয়াদ উভয়ই পুনর্বিন্যাস করেছে মৎস্য অধিদপ্তর।

ভারতের সঙ্গে মিল রেখে প্রথমবারের মতো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হতে যাওয়ায় খুশি উপকূলীয় মৎস্যজীবীরা।

বরগুনায় জেলায় মোট নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৩৭ হাজার, যাদের মধ্যে সমুদ্রগামী জেলের সংখ্যা প্রায় ২৭ হাজার।

ভারতের সঙ্গে মিল রেখে অবরোধ দেয়ায় খুশি জানিয়ে পাথরঘাটায় মোস্তফা কামাল আলম নামের এক আড়তদার বলেন, সরকার আমাদের দাবি মেনে নিয়েছে। তাই সরকারের প্রতি আমরা অনেক খুশি। এই অবরোধ যদি সবাই আমরা সঠিকভাবে পালন করি এবং অবৈধ রোলিং গুলো যদি বন্ধ হয় তবে সাগর থেকে আবারও বড় মাছ আমরা দেখতে পাব। 

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়ে ট্রলার মাঝি মো. সেলিম নামে এক জেলে বলেন, এর আগে ৬৫ দিনে নিষেধাজ্ঞার সময় ভারতের জেলেরা আমাদের এলাকায় ঢুকে মাছ ধরে নিয়ে যেত। আর এদিকে পেটের দায়ে সাগরে গেলে সরকার আমাদের আটকে দিত। আর অবরোধ শেষে সাগরে গেলে আমরা মাছ পেতাম না। বর্তমান সরকার ৬৫ দিন থেকে কমিয়ে দিয়ে ৫৮ দিন করেছেন এবং সময়ও ভারতের সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছেন। এতে আমরা অনেক খুশি তাই প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানাই।

জেলেদের চাল প্রকৃত জেলেরা পায় না বলে অভিযোগ করে ফিরোজ নামের এক সমুদ্রগামী জেলে বলেন, এ বছর ভারতের সঙ্গে মিল লেখা অবরোধ দেওয়ায় আমরা অনেক খুশি হলেও প্রতিবারের মতো এবারও আমরা চাল পাইনি। জনপ্রতিনিধিদের সুপারিশে আমাদের জাল পায় রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে অন্যান্য পেশার মানুষ। অথচ এই দুই মাস আমাদের হাতে কোনো কাজ থাকবে না। এ সময় পরিবার নিয়ে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। তাই তো অনেক জেলে গোপনে সাগরে চলে যায়।

বরগুনার ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের আন্দোলন সংগ্রামের প্রেক্ষিতে সরকার এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমরা এবারের নিষেধাজ্ঞা ১০০% মানবো। আমরা কঠোরভাবে নির্দেশনা দিয়েছি কোনো ট্রলারই এই ৫৮ দিনে লুকিয়ে সাগরে যেতে পারবে না। যে ট্রলারই যাবে আমরা তাদের ধরিয়ে দেব।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য গবেষণা দলের সদস্য বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, আগের বছরগুলোতে ভুল সময়ে সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতো। এ নিয়ে দীর্ঘ পাঁচ বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি টিম মৎস্য গবেষণা করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এছাড়া এই অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবিও ছিল ভারতের সঙ্গে মিল রেখে অবরোধ দেওয়ার। বর্তমান সরকার মেনে নিয়ে একসঙ্গে অবরোধ দিয়েছি।

তিনি বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে বৈশাখের শুরুতে বৃষ্টি হলে বেশিরভাগ প্রজাতির মাছই এ সময়ে প্রজনন কাল হিসেবে নির্বাচন করে। এ সময় যদি জেলেরা গোপনে সাগরে না যায় তাহলে মাছের উৎপাদন ও আহরণে ইতিবাচক ফল আসবে বলে মনে করি।

এই বিষয়ে বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন বলেন, নিষেধাজ্ঞা সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এ বছর আমরা সাগরে যাওয়ার আগে বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন করছি। এছাড়া সমুদ্রগামী ট্রলারে জ্বালানি বিক্রেতাদের জ্বালানি বিক্রয় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বরফ কল থেকে বরফ উৎপাদন করতে হলে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি লাগবে। এছাড়া সাগরে নৌবাহিনী টহল বৃদ্ধি করার জন্য আমরা অনুরোধ করেছি।

জেলেদের ভিজিএফের চালের বিষয়ে তিনি বলেন, এ বছরের বরাদ্দ এখনও আমরা পাইনি। তবে যেহেতু এবার সময় কমিয়ে আনা হয়েছে সে হারেই খুব দ্রুত জেলেদের মাঝে তাদের প্রণোদনের চাল আমরা পৌঁছে দেব।

এই বিষয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির জন্য সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী সাগরে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত জাটকা সংরক্ষণ নিষেধাজ্ঞার চলছে। এ সময়ে জেলেদের প্রণোদনের চাল বিতরণ করা হয়ে গেছে। ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞার সময় পুনর্নির্ধারণ হওয়ায় সহায়তার চাল বরাদ্দ পেতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। ভিজিএফের চাল আসামাত্রই আমরা জেলেদের মাঝে বিতরণ করে দেব।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com