
সংবাদ প্রচারের পর কুষ্টিয়া হত্যা চেষ্টা মামলার আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার হয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কুষ্টিয়ায় জেলা প্রশাসনের বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আওয়ামী লীগ নেতা মোকাররম হোসেন ওরফে মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাত ৮টার দিকে শহরের বড় বাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে কুষ্টিয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম। পরে তাঁকে কুষ্টিয়া মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়।
সেখানে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের এই নেতাকে গ্রেফতার দেখিয়ে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে কুষ্টিয়া আদালতে নেওয়া হয়েছে। পৌনে একটার দিকে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ফয়সাল মাহমুদ সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, কুষ্টিয়া মডেল থানায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দায়ের হওয়া একটি হত্যা চেষ্টা মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে নেওয়া হয়েছে।
তথ্য সূত্রে জানা গিয়েছে, মোকাররম হোসেন মোয়াজ্জেম কুষ্টিয়া পৌরসভার ১১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি কুষ্টিয়া বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি। এছাড়া দি কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক। গত ৫ আগস্ট কোটাবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় তামজিদ হোসেন জনি নামের এক যুবককে হত্যাচেষ্টা ১৩নং মামলার এজাহারভুক্ত ৪২ নম্বর আসামি তিনি।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখের দিন সকালে কুষ্টিয়া পৌরসভা চত্বর থেকে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বের হওয়া আনন্দ শোভাযাত্রায় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রথম সারিতে তাঁকে দেখা যায়। এমন বেশ কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এরপর বিকেলে ওই আওয়ামী লীগ নেতা মোকাররম হোসেন মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতারে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান এর নির্দেশে জেলার গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মাঠে নামে। কয়েক ঘন্টার অভিযান শেষে গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
এবিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানা সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের গত ১৩ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়া মডেল থানায় আসিফ নামে এক যুবক বাদী হয়ে একটি হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। গত বছরের ৫ আগস্ট জুলাই আন্দোলনে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয় বলে মামলায় অভিযোগ আনেন। ওই মামলায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ্য করা হয়েছে। এতে দেড়শত অজ্ঞাত আসামি রয়েছে। সোমবার ১৪ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে শহরের বড় বাজার এলাকায় মোকাররম হোসেন মোয়াজ্জেমকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়। পরে মঙ্গলবার ১৫ এপ্রিল তাঁকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে নেওয়া হয়েছে। এদিকে একটি সূত্র জানায় গ্রেফতারকৃত আওয়ামী লীগের এই নেতার নাম যে মামলায় উল্লেখ্য আছে, সে মামলায় তিনি জামিনে ছিলেন।
আওয়ামী লীগ নেতা মোকাররম হোসেন গ্রেফতার হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে বিভিন্ন জনের স্টাটাসে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের নেতা মাহবুবউল আলম হানিফের সুবিধা নেওয়া নেতার বিচার চান।
আওয়ামী লীগকে যারা পুনর্বাসন করতে চান এ আসামির বিষয়ে বেলা পৌনে ১টার দিকে কুষ্টিয়া আদালতের পরিদর্শক জহুরুল ইসলাম বলেন, মোকাররম হোসেনকে আদালতে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে রাজনীতির নেতারা ফেসবুকে সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, প্রশাসন এর প্রতি অনুরোধ, ফ্যাসীবাদ এবং এর দোসরদের পক্ষ অবলম্বন করে যে বা যাহারা কারণে অকারণে এখনও বিভিন্ন তদবির অব্যাহত রেখেছে দয়া করে জনস্বার্থে তাদের পরিচয় জনসমক্ষে প্রকাশ করুন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর