
ছোট্ট শিশু মারিয়া। বয়স মাত্র সাড়ে ৩ বছর। কিন্তু ছোট্র মারিয়ার বাল্বে ছিদ্র ধরা পড়েছে। ওর চিকিৎসার জন্য কিছুদিন ধরে ঢাকায় ছিলেন জাকিয়া আক্তার। সম্প্রতি একটি মারামারির ঘটনায় স্বামী শশুর-শাশুরিসহ ৫জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। স্বামীকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ।
পরিবারের বাকি সদস্যরা বাড়ি ছাড়া। তাই বাড়ি পাহাড়ের জন্য ৬ বছর বয়সী জাহিদ, সাড়ে ৩ বছর বয়সী অসুস্থ মারিয়া ও দেবরকে নিয়ে ঢাকা থেকে গত রোববার বাড়িতে এসেছিলেন জাকিয়া আক্তার। সোমবার বিকেলে ওই মারামারির ঘটনায় মানববন্ধন শেষে একদল লোক তাদের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে লুটপাট চালায়। বাড়িতে আগুন দেয়াড় আগে জাকিয়া আক্তার বারবার হামলাকারীদের অনুরোধ ও হাতে পায়ে ধরেও অসুস্থ মারিয়ার মেডিক্যাল টেস্টের রিপোর্ট ও ঔষধগুলো ঘর থেকে আনার সুযোগ পাননি।
গত সোমবার বিকেলে উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের সোনালিয়া চকবাজার এলাকায় জাকিয়া আক্তারের শ্বশুর বাড়িতে এই হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এঘটনায় মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাত দেড় টার সময় মির্জাপুর থানায় ১২ জনের নাম উল্লেখ ও ৭০-৮০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন গিয়াস উদ্দিনের পুত্রবধূ জাকিয়া আক্তার। মামলায় ভাঙচুর- অগ্নিসংযোগে ৩৪ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি এবং নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার মিলিয়ে ১৮ লাখ টাকার সম্পদ লুট হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জাকিয়া আক্তার বলেন, সোমবার বিকেলে স্থানীয় মিলন নামের একটি ছেলে ৫-৬টি মোটরসাইকেলে করে কয়েকজন লোক নিয়ে আমাদের বাড়িতে আসে। তাদের মধ্যে একজন নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বলেন, আপনার শ্বশুর মাদকের ব্যবসা করে। আমরা ঘর তল্লাশি করবো। আমি ভয়ে তাদেরকে প্রতিহত করিনি। তারা আমার ঘর তল্লাশি করে কিছু না পাওয়ায় আমার দেবর তাদের এমন কাজের প্রতিবাদ করে। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার দেবর ও আমাকে মারধর শুরু করে। এরপর আরও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলে করে একদল লোক এসে আমাদের বাড়িতে ভাঙচুর শুরু করে, অগ্নিসংযোগ করে। আমার ছোট বাচ্চারা ভয়ে পাশের একটি কলাবাগানে লুকিয়ে জীবন রক্ষা করে। ঘটনার পর থেকে শিশু সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়ি চলে গেছেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার এই ঘটনার সূত্রপাত। ওইদিন গিয়াস উদ্দিনের কলা বাগানে তারই চাচা আকবর আলীর ছাগল যাওয়াকে কেন্দ্র করে দুইজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডাÐা হয়। বাকবিতণ্ডাÐার একপর্যায়ে হামলার শিকার হন আকবর আলী (৬৫)। মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। সেই ঘটনার সূত্রধরেই পরবর্তীতে মানববন্ধন ও গিয়াস উদ্দিনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
মির্জাপুর থানার ওসি মো. মোশারফ হোসেন বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর