
নড়াইলে হামিদা বেগম নামে এক নারীকে পারিবারিক কহলের জেরে হত্যার দায়ে স্বামী ইব্রাহিম মোল্যাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে। বুধবার (১৬ এপ্রিল) অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক শাহিনুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ইব্রাহিম মোল্যা মাগুরা জেলার মাগুরা গ্রামের আ. জব্বার মোল্যার ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। নিহত হামিদা বেগম নড়াইল সদর উপজেলার চাঁদপুর এলাকার।
মামলার বিবরণে জানা যায়, মামলা দায়েরের প্রায় ২২/২৩ বছর আগে সদর উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের হামিদা বেগমের সাথে মাগুরা জেলার মাগুরা গ্রামের ইব্রাহিম মোল্যার বিবাহ হয়। সংসার জীবনে তাদের দুই ছেলে ও এক মেয়ে ছিল।
হত্যার প্রায় ২ বছর আগে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ইব্রাহীম ও মামলার অন্য আসামিরা হামিদা ও তার মেয়েকে মারধর করে। এ নিয়ে থানায় মামলা হলে আসামিরা হামিদাকে বিভিন্ন সময়ে অত্যাচার করেন।
এর মধ্যে ইব্রাহিম মোল্যা লোহাগড়া উপজেলার ইতনা গ্রামে কুলসুম নামে এক নারীকে বিয়ে করেন। এরপর থেকে আসামিরা হামিদাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। হামিদার বাবার বাড়ির লোকজন তার বড় ছেলেকে বিদেশে পাঠায়।
তার ছেলে তার নামে টাকা পাঠালে ইব্রাহীম সেই টাকার জন্য হামিদাকে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করে। এরপর ২০০৯ সালের ৮ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশে গরু বাধতে গেলে আসামিরা তাকে হত্যার পর মরদেহ গুম করে। অনেক খোজাখুজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়না।
পরে ১০ জুলাই সকালে ইব্রাহীম এর ছোট বউ কুলসুম বেগম বাড়ির পাশে কাজলা নদীতে দেশীয় অস্ত্রবিদ্ধ অবস্থায় হামিদার মরদেহ দেখতে পায়। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। ওইদিন নিহতের ভাই রেজাউল নড়াইল সদর থানায় বাদী হয়ে ইব্রাহিমসহ ৬ জনের নামে মামলা দায়ের করেন।
দীর্ঘ বিচারক প্রক্রিয়ায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রায়ের ধার্য দিনে আদালত ইব্রাহিম মোল্যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও জরিমানা করেন। বাকি আসামিদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দিয়েছেন আদালত।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর