
হাতকড়াসহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়া মহেশখালীর দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী কাটা রফিককে ২৪ ঘণ্টার মাথায় গ্রেপ্তার করেছে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দিবাগত রাতে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাইন্যাখালী ২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ওই এলাকায় তার সৎ বোনের শ্বশুর বাড়িতে পালিয়ে ছিলেন।
এর আগে, গত ১৬ এপ্রিল দুপুরে চমেক হাসপাতাল থেকে পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় পালিয়ে যায় রফিক। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) তাকে আদালতে পাঠানো হয়। রফিক উল্লাহ মহেশখালীর কালারমারছড়া নোনাবাড়ি এলাকার মফিজুর রহমান বলির ছেলে।
পুলিশ জানিয়েছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কোস্টগার্ডের একটি দল গত ১৬ মার্চ ডাকাতির জন্য সংঘবদ্ধ হওয়া একটি সন্ত্রাসী গ্রুপকে ধরতে অভিযান চালায়। ওই সময় সন্ত্রাসীরা কোস্টগার্ডকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে। কোস্টগার্ডও পাল্টা গুলি চালায়। কোস্টগার্ডের সাথে বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয় মহেশখালীর শীর্ষ সন্ত্রাসী কালারমারছড়া ইউনিয়নের নোনাছড়ির মফিজুর রহমান ওরফে মজু বলির পুত্র রফিকুল ইসলাম ওরফে কাটা রফিক।
কোস্টগার্ড অস্ত্রশস্ত্রসহ তাকে গ্রেপ্তার করে। ওই সময় তার কাছ থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র, দুই রাউন্ড গুলিসহ কয়েকটি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য পুলিশ হেফাজতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল।
হাসপাতালে সিএমপির দুই পুলিশ সদস্য তাকে পাহারা দিচ্ছিল। কিন্তু গত ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় খুন, ধর্ষণ, ডাকাতিসহ প্রায় এক ডজন মামলার আসামি কৌশলে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় পুলিশের মাঝে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়।
কালারমারছড়ার কুখ্যাত সন্ত্রাসী জিয়াউর রহমানের সার্বিক সহায়তায় সন্ত্রাসী কাটা রফিক পালাতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়। ওই ঘটনায় দায়িত্বরত ওই দুই পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। দুই পুলিশ সদস্য হলেন কনস্টেবল মামুন ও আব্দুল কাদির।
হ্যান্ডকাপসহ আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা রেকর্ড করা হয়। ঘটনার পর পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলাইমান তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার এবং নিজস্ব সোর্স মারফত সন্ত্রাসী কাটা রফিকের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হন।
তিনি জানতে পারেন যে, উক্ত সন্ত্রাসী হাসপাতাল থেকে পালিয়ে পেকুয়ায় সৎবোনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। ওসি পাঁচলাইশ গতকাল বিকেল চারটা থেকে তাকে নজরবন্দি করে রাখে। পরবর্তীতে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ পেকুয়া পুলিশের সহায়তায় গতকাল রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, পালানোর পরদিন জলদস্যু রফিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে পুলিশের একটি বিশেষ টিম রফিককে গ্রেপ্তারে টানা অভিযান পরিচালনা করে। পালানোর দিন অর্থাৎ ১৬ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ২২৪ ধারায় পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা করা হয়।
সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। পুলিশের অভ্যন্তরীণ ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, রফিকের বিরুদ্ধে মহেশখালী থানায় মোট ১৩টি মামলা রয়েছে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর